শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় আটটি ব্র্যান্ডের ১৩৮৬ বোতল মদ জব্দ করেছে পুলিশ।

শনিবার (১০ মে) ভোরে উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের সন্ধ্যাকুড়া রাবার বাগান এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মদ জব্দ করা হয়।। তবে, এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি। জব্দকৃত মদের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা।

ঝিনাইগাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

আল আমীন বলেন, ‘‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে ১৩৮৬ বোতল ভারতীয় মদ জব্দ করা হয়েছে। এসময় মাদক কারবারিরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি। এ ঘটনায় পরবর্তী কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।’’

আরো পড়ুন:

হবিগঞ্জে ডাকাতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিসহ গ্রেপ্তার ২

ঝিনাইদহে ট্রলির ধাক্কায় শিশু নিহত, মা হাসপাতালে

ঢাকা/তারিকুল/রাজীব

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘২৫ বছর আগে যা ছিলাম, এখন তার চেয়েও চাঙা’—বলার পরই বৈঠকে এক ঘণ্টা ‘ঘুমালেন’ ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মন্ত্রিসভার বৈঠক ছিল গতকাল মঙ্গলবার। বৈঠকে টেবিল ঘিরে বসেছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্যরা। একজন একজন করে ট্রাম্পের প্রশংসা করছিলেন। শেষ বক্তা ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।

স্থানীয় সময় গতকাল দুপুরের পরপরই মন্ত্রিসভার ওই বৈঠক শুরু হয়। ট্রাম্প যথারীতি বৈঠকে ‘স্লিপি জো’(ঘুমকাতুরে জো) বাইডেনের কথা উল্লেখ করেন। মাঝেমধ্যেই ট্রাম্প তাঁর দেওয়া বক্তব্যে পূর্বসুরি ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্টকে এ নামেই ডেকে থাকেন।

এরপর ট্রাম্প বৈঠকে বেশ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ২৫ বছর আগে যেমন ছিলেন, এখন তিনি তার চেয়েও চাঙা।

ট্রাম্প গত সপ্তাহে তাঁকে নিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের একটি দীর্ঘ ও বিস্তারিত প্রতিবেদনের সমালোচনাও করেন। প্রতিবেদনে ট্রাম্পের কাজের সময়সূচি ও জনসমক্ষে তাঁর উপস্থিতি বিশ্লেষণ করে বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলা হয়।

প্রতিবেদনে দেখানো হয়, ৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে কিছুটা ধীরগতির হয়ে গেছেন।

ট্রাম্প নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেন, ‘ট্রাম্প চটপটে, তারা চটপটে নয়।’

ট্রাম্প সাংবাদিকদের সমালোচনা করে বলেন, তাঁর স্বাস্থ্য ও প্রাণশক্তি নিয়ে সাংবাদিকেরা সঠিক কথা বলছেন না। এটি অন্যায়। ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা সবাই পাগল।’

গত সপ্তাহে নিউইয়র্ক টাইমস ট্রাম্পের কাজের সময়সূচি এবং জনসমক্ষে তাঁর উপস্থিতি বিশ্লেষণ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে তাঁর বয়স ও শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তোলা হয়।

কিন্তু পরবর্তী প্রায় দেড় ঘণ্টা ট্রাম্পকে নিজের দাবিতে অটল থাকতে, নিজের সেই চাঙাভাব ও প্রাণশক্তির প্রদর্শন করতে লড়াই করতে হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি যেন দুপুরের ঘুমের সঙ্গে একটি দীর্ঘ ও প্রায় হেরে যাওয়া যুদ্ধ করে যাচ্ছেন।

এমনকি যখন মন্ত্রিসভার সদস্যরা একে একে তাঁর পছন্দের কাজগুলোর একটি, অর্থাৎ প্রশংসা করছিলেন, তখনো প্রেসিডেন্ট বারবার ঘুমিয়ে পড়ছিলেন বলে মনে হচ্ছিল।

এগুলো আসলে এমন দৃশ্য ছিল, যা নিয়ে ট্রাম্প একসময় উপহাস করতেন। এ ধরনের দৃশ্যকে তিনি তাঁর সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রাণশক্তি ও সক্ষমতার অভাবের প্রমাণ হিসেবে দেখাতেন।

অথচ নিজের স্বাস্থ্য ও প্রাণশক্তি–সম্পর্কিত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করার মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় ট্রাম্প নিজের চোখ খোলা রাখতে সংগ্রাম করছিলেন বলে মনে হচ্ছিল। এমনকি যখন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রশংসা করছিলেন এবং ‘সর্বকালের সেরা প্রেসিডেন্টের জন্য সর্বকালের সেরা মন্ত্রিসভা’ বলে উল্লাস করছিলেন, তখনো।

শ্রমমন্ত্রী লরি চাভেজ-ডিরিমার যখন ট্রাম্পের শ্রমশক্তি উন্নয়ন প্রচেষ্টার বর্ণনা করছিলেন, সে সময়ও তিনি বারবার চোখ পিটপিট করছিলেন।

আবার শিক্ষামন্ত্রী লিন্ডা ম্যাকমাহন এবং স্বাস্থ্য ও মানবিক পরিষেবামন্ত্রী রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র যখন বক্তব্য দিচ্ছিলেন, তখন দেখা যায়, ট্রাম্প প্রায় ১০-১৫ সেকেন্ড ধরে চোখ বন্ধ রেখে স্থির হয়ে আছেন। এরপর ধীরে ধীরে চোখ নাড়ান বা সম্মতিসূচক মাথা নাড়েন।

সিএনএনের হিসাব অনুযায়ী, ২ ঘণ্টা ১৭ মিনিট ওই বৈঠক চলে এবং খুব সম্ভবত পুরো বৈঠকে একাধিকবার মনোযোগ হারিয়েছেন ট্রাম্প।

রুবিও যখন ট্রাম্পের ‘পরিবর্তনমূলক’ বৈদেশিক নীতির প্রশংসা করছিলেন, তখন তাঁর পাশের চেয়ারে বসে প্রেসিডেন্ট ঢলে পড়ছিলেন, চোখও বন্ধ করে ছিলেন। এরই মধ্যে হঠাৎ ট্রাম্প সোজা হয়ে বসেন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওর দিকে তাকান।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং পুরো তিন ঘণ্টা চলা মন্ত্রিসভার বৈঠক পরিচালনা করেন।ক্যারোলিন লেভিট, হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব

কয়েক মুহূর্ত পর, রুবিও যখন কলেজ ফুটবল প্লে-অব মৌসুম নিয়ে রসিকতা করছিলেন, তখন প্রেসিডেন্টের চোখ আবার বন্ধ হয়ে গেল বলে মনে হয়।

রুবিওর রসিকতায় টেবিলের চারপাশে থাকা মন্ত্রিসভার সদস্যরা জোরে হাসেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট তখনো অভিব্যক্তিহীন, শুধু ঠোঁট হালকা ওপরের দিকে তোলেন, চোখ সামান্য ঝলমল করে মাত্র।

আরও পড়ুনট্রাম্প কেন হঠাৎ এমআরআই করালেন, পরীক্ষার ফল নিয়ে কী বলছে হোয়াইট হাউস২২ ঘণ্টা আগে

দীর্ঘ বৈঠকের পুরো সময় ট্রাম্প বারবার চোখ কুঁচকে তাকান, কখনো কখনো বন্ধ করেন বা বন্ধ হওয়ার মতো মনে হয়।

তবে হোয়াইট হাউস বলেছে, প্রেসিডেন্ট মনোযোগ দিয়ে সব শুনছিলেন ও বৈঠক পরিচালনা করেছেন।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনোযোগ দিয়ে শুনছিলেন এবং পুরো তিন ঘণ্টা ধরে চলা মন্ত্রিসভার দীর্ঘ বৈঠক পরিচালনা করেছেন।

লেভিট ট্রাম্পের প্রশংসা করে বলেন, এ বছর প্রেসিডেন্ট নয়বার মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছেন। এসব ঐতিহাসিক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট ও তাঁর অসাধারণ দল মার্কিন জনগণের পক্ষে ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ লক্ষ্য অর্জনে যেসব কাজ করেছেন, সেসবের বিস্তৃত তালিকা তুলে ধরেছেন।

তবে ট্রাম্প নিজে বা তাঁর প্রেস সচিব যতই প্রশংসা করুন, এক মাসের কম সময়ের মধ্যে হোয়াইট হাউসে কোনো অনুষ্ঠান চলাকালে দ্বিতীয়বারের মতো চোখ খোলা রাখতে ট্রাম্পকে লড়াই করার দৃশ্য জনগণের মনে প্রশ্ন তুলছে।

আরও পড়ুনঅনুষ্ঠানের মাঝেই ‘ঘুমিয়ে’ পড়লেন ট্রাম্প, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি ভাইরাল০৯ নভেম্বর ২০২৫

আগেরবার গত ৬ নভেম্বর ওভাল অফিসে এ দৃশ্য দেখা যায়। সেই ঘটনার পর ওয়াশিংটন পোস্ট বিভিন্ন ভিডিও ফিড পর্যালোচনা করে হিসাব করেছে যে ট্রাম্প প্রায় ২০ মিনিট ধরে চোখ খোলা রাখার জন্য লড়াই করেছেন।

ওই সময় ট্রাম্পের কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। ছবি দেখে মনে হচ্ছিল, তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। ট্রাম্পের সমালোচকেরা এ ছবি ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর কার্যদক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

গতকাল একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি হয়। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী ব্যক্তির বয়স তাঁর কাজের ওপর প্রভাব ফেলছে কি না, তা নিয়ে মানুষজনের প্রশ্ন বেড়েই চলেছে।

কয়েক দিন আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমআরআই পরীক্ষা করা হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই পরীক্ষা তাঁর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ ছিল বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। এ নিয়ে লেভিট গত সোমবার বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শরীর-স্বাস্থ্য ভালো আছে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে ‘প্রায় ঘুমিয়ে পড়েছিলেন’ বাইডেন০৩ জুলাই ২০২৪

৭৯ বছর বয়সী প্রেসিডেন্টের বিষয়ে লেভিট আরও বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কার্ডিওভাস্কুলার ইমেজিং পুরোপুরি স্বাভাবিক ছিল, রক্তনালিতে সংকোচনের কোনো চিহ্ন নেই, রক্তের প্রবাহে কোনো বাধা নেই এবং হৃৎপিণ্ড বা গুরুত্বপূর্ণ রক্তনালিগুলোয় কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা যায়নি। এককথায় তাঁর হৃদ্‌যন্ত্র চমৎকার অবস্থায় আছে। তাঁর পেটের অংশের ইমেজিংও সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।’

কেন ট্রাম্পের ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) পরীক্ষা করা হলো, তার কারণ প্রকাশ করা হয়নি। সাধারণ স্বাস্থ্যপরীক্ষার ক্ষেত্রে এমআরআই করাতে দেখা যায় না। বিস্তারিত জানানো হয়নি দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, হোয়াইট হাউস প্রেসিডেন্টের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য পুরোপুরি ও সময়মতো প্রকাশ করছে কি না।

আরও পড়ুনট্রাম্পের ঘুম ভাঙে দেরিতে, দিন কাটে আয়েশে০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সম্পর্কিত নিবন্ধ