সিদ্ধিরগঞ্জে উদয় জনকল্যাণ সংস্থার কাব্য সন্ধ্যা
Published: 16th, May 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে উদয় জনকল্যাণ সংস্থার সৌজন্যে উদয় কাব্য সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শিমরাইল এলাকায় দি চায়না পার্ক রেষ্টুরেন্টে এ কাব্য সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাহিম বয়লার ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী একরামূল হক সেলিম এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলা টিভি’র সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার কাজী সাঈদ।
এসময় সংস্থার উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে ইন্টানেটের বদৌলতে ব্যাঙের ছাতার মত শতশত সাহিত্য, সামাজিক ও পেশা ভিত্তিক সংগঠন গড়ে উঠেছে। এগুলোর সিংহভাগই নিয়মতান্ত্রিক অবকাঠামোর উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেনি।
এগুলোর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং গন্তব্য সম্পর্কে সঠিক স্থিরচিত্র নেই। অত্যন্ত পরিতাপ ও আশঙ্কার কথা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঐ সকল সংগঠনগুলো অযোগ্য নেতৃত্বের হস্তগত হয়ে যাচ্ছে। যার কারণে সমাজে গ্রুপিং ও অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে।
এগুলোর দীর্ঘমেয়াদী কোন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতে পারবে না। তাই আমরা এমন একটি প্লাটফর্ম তৈরী করতে চাই যেখানে মেধাবী ও মুক্তচিন্তার যোগ্য লোকদের নেতৃত্বে দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রণয়ন করে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে কাজী সাঈদ বলেন, কবিতা হচ্ছে আনন্দের উৎস। ভবিষ্যৎ স্বপ্নের উৎস। কবিতা মানুষের হৃদয়ের কথা বলে। আর যারা জ্ঞান, আনন্দ, সুখ, স্বপ্ন, অনুভুতি, মানবতাবোধ, প্রকৃতি সমস্ত বিষয়গুলো একটা ফ্রেমে এনে বন্দি করে রুপক কিংবা ছন্দের আকারে নান্দনিকতা মিশিয়ে উপস্থাপন করতে পারে, তারাই হচ্ছে কবি। কবি এবং কবিতার জয়গান যেন মানবতার জন্য হয়, এটাই প্রত্যাশা।
উদয় জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি আলমগীর হোসেনের সভাপত্তিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আই এফ এম সেলিম, কবি ও উপস্থাপিকা তাসলিমা আক্তার ও রলি আক্তারের উপস্থাপনায় বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, উদয় জনকল্যাণ সংস্থার প্রধান উপদেষ্টা গিয়াস উদ্দিন করিম, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিঃ ছলিমুল্লাহ দুলাল, উপদেষ্টা সেলিম উদ্দিন, অর্থ সম্পাদক কবি এসআই আজাদ। বিশেষ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলিফ বয়লার কোং লিঃ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর জি.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ উপস থ ত ছ ল ন
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা