কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, কোনো ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থান ঘটায়নি। এটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল। শেখ হাসিনার সংবিধান মেনে গত ৮ আগস্ট সরকার গঠনের শপথ নেওয়া ভুল ছিল। 

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার: কোরআন কী বলে’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। ‘কোরআন পাঠ আন্দোলন’ এই আলোচনার আয়োজন করে।

তিনি বলেন, একসময় সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থী দ্বন্দ্ব দেখা গেলেও এখন ইসলামপন্থীদের মধ্যে বিরোধ দেখা যাচ্ছে। ধর্ম নিয়ে নানা মতবিরোধ দেখা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিরোধ দেখা যাচ্ছে, যা ক্ষতিকর। এজন্য গণঅভ্যুত্থানের মর্ম বুঝতে হবে।

তিনি বলেন, এনসিপির মধ্যে এ বিরোধের বড় কারণ হলো গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণ বিজয়ে নিয়ে যেতে না পারা। তার আগেই ছাত্র-তরুণদের বিরাট আত্মত্যাগকে নস্যাৎ করার জন্য একটি সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব হয়েছে। ছাত্রদের দমন করার জন্য ক্রমাগত বিভিন্নভাবে অপপ্রচারের বেড়া দিয়ে তাদের চেষ্টাকে নস্যাৎ করার প্রক্রিয়া চলছে।

ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি উপনিবেশবাদী, সাম্রাজ্যবিরোধী লড়াইয়ের ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত। যতক্ষণ পর্যন্ত এই তরুণরা বিষয়টি বুঝতে না পারছে, এর পক্ষে সঠিক বয়ান হাজির না করছে, ততক্ষণ পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া করবে, কেউ বোতল ছুড়ে মারবে। পুরো বিষয়টা ধ্বংস করে ফেলবে। তারা সামষ্টিক স্বার্থ রক্ষা করতে না পারলে জনগণের কাছে এর জবাবদিহি দিতে হবে।

নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের গালি দেওয়ার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, নারী কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু কেউ ইসলামি আদবের মধ্যে থাকলে গালি দিতে পারে না। কথায় কথায় এরা অন্যকে গালিগালাজ করছে। এটি ইসলামের শিক্ষা নয়। এদের শাস্তি হওয়া উচিত।

বৈঠকে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়া নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, মূল রাজনৈতিক অংশীজনের এই অন্যায়ের কাঠামো পরিবর্তন করার কোনো ইচ্ছা নেই।

কোরআন পাঠ আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু সাঈদ খানের সভাপতিত্বে এবং দি ইক্বরার প্রতিষ্ঠাতা সাদিক মোহাম্মদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় বক্তব্য দেন আবু হেনা রাজ্জাকী, মেজর (অব.

) আলমগীর হোসেন, দিদারুল ভূঁইয়া, আশরাফুল ইসলাম ও রুফায়দাহ পন্নী।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক

রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় উপজেলার কোদালপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে কোদালপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

আরো পড়ুন:

জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ

খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বহাল, ২ মহাসড়কে অবরোধ শিথিল

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুর থানায় ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রধান আসামি করে গণঅভ্যুত্থানে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে মামলা থেকে নিরপরাধ বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য তারেক আজিজ মোবারক ঢালী বলেন, ‘‘যেসব বিএনপি নেতাকর্মীর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা সকলে বিগত দিনে স্বৈরাচারি হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে আমার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’ 

কোদালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সালু মৃধা বলেন, ‘‘বিগত দিনে বিএনপি করার কারণে আমরা মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি, হামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার আমাদের নাম একই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এটি ঘৃণিত ষড়যন্ত্র, এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’’ 

ভুক্তভোগী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মৃধা বলেন, ‘‘আমি বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি, জুলাই আন্দোলনেও অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর আমার নাম মিরপুর থানার মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’ 

তিনি এর তীব্র নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান। 
 

ঢাকা/আকাশ/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক