জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল: ফরহাদ মজহার
Published: 17th, May 2025 GMT
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, কোনো ব্যক্তি জুলাই অভ্যুত্থান ঘটায়নি। এটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল। শেখ হাসিনার সংবিধান মেনে গত ৮ আগস্ট সরকার গঠনের শপথ নেওয়া ভুল ছিল।
শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘সংবিধান সংস্কার প্রস্তাবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার: কোরআন কী বলে’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন। ‘কোরআন পাঠ আন্দোলন’ এই আলোচনার আয়োজন করে।
তিনি বলেন, একসময় সেক্যুলার বনাম ইসলামপন্থী দ্বন্দ্ব দেখা গেলেও এখন ইসলামপন্থীদের মধ্যে বিরোধ দেখা যাচ্ছে। ধর্ম নিয়ে নানা মতবিরোধ দেখা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির তরুণদের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিরোধ দেখা যাচ্ছে, যা ক্ষতিকর। এজন্য গণঅভ্যুত্থানের মর্ম বুঝতে হবে।
তিনি বলেন, এনসিপির মধ্যে এ বিরোধের বড় কারণ হলো গণঅভ্যুত্থানকে পূর্ণ বিজয়ে নিয়ে যেতে না পারা। তার আগেই ছাত্র-তরুণদের বিরাট আত্মত্যাগকে নস্যাৎ করার জন্য একটি সাংবিধানিক প্রতিবিপ্লব হয়েছে। ছাত্রদের দমন করার জন্য ক্রমাগত বিভিন্নভাবে অপপ্রচারের বেড়া দিয়ে তাদের চেষ্টাকে নস্যাৎ করার প্রক্রিয়া চলছে।
ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি উপনিবেশবাদী, সাম্রাজ্যবিরোধী লড়াইয়ের ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত। যতক্ষণ পর্যন্ত এই তরুণরা বিষয়টি বুঝতে না পারছে, এর পক্ষে সঠিক বয়ান হাজির না করছে, ততক্ষণ পরস্পরের মধ্যে ঝগড়া করবে, কেউ বোতল ছুড়ে মারবে। পুরো বিষয়টা ধ্বংস করে ফেলবে। তারা সামষ্টিক স্বার্থ রক্ষা করতে না পারলে জনগণের কাছে এর জবাবদিহি দিতে হবে।
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সদস্যদের গালি দেওয়ার কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, নারী কমিশনের প্রস্তাব নিয়ে আপত্তি থাকতে পারে। কিন্তু কেউ ইসলামি আদবের মধ্যে থাকলে গালি দিতে পারে না। কথায় কথায় এরা অন্যকে গালিগালাজ করছে। এটি ইসলামের শিক্ষা নয়। এদের শাস্তি হওয়া উচিত।
বৈঠকে এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেওয়া নিয়ে টালবাহানা হচ্ছে। এ থেকে বোঝা যায়, মূল রাজনৈতিক অংশীজনের এই অন্যায়ের কাঠামো পরিবর্তন করার কোনো ইচ্ছা নেই।
কোরআন পাঠ আন্দোলনের আহ্বায়ক আবু সাঈদ খানের সভাপতিত্বে এবং দি ইক্বরার প্রতিষ্ঠাতা সাদিক মোহাম্মদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনায় বক্তব্য দেন আবু হেনা রাজ্জাকী, মেজর (অব.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বিভিন্ন অপরাধে যবিপ্রবিতে শিক্ষকসহ ৪ শিক্ষার্থীকে শাস্তি
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) পৃথক অপরাধে একজন শিক্ষককে বরখাস্ত ও চারজন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের সব সদস্যের ভিত্তিতে রিজেন্ট বোর্ডের ১০৮তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, লিফট অপারেটর পদে চাকরিপ্রার্থী এক অপহরণ মামলার আসামি ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীকে হল থেকে বের করে দিতে গেলে তাকে রক্ষায় বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা বাধা প্রদান ও নানা ধরনের হুমকি প্রদান করেন। এ ঘটনায় আরো তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: পঞ্চম দিনে মনোনয়ন ফরম নিলেন ১৮ জন
জবিতে জন্মাষ্টমী উদযাপিত
একইসঙ্গে সব স্বৈরাচারের দোসর ও তাদের অপরাধ অনুসারে ধারাবাহিকভাবে বিচারের আওতায় আনা হবে। এ ক্ষেত্রে বিচারে বাধা বা কেউ পুনর্বাসনমূলক আচরণ করলে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বহিষ্কৃতরা হলেন— শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান (পিইএসএস) বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ রাফি (অপহরণ মামলার আসামি), আল মামুন ফরহাদ, তুষার ইমরান এবং একই বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের কাবিরুল।
অন্যদিকে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শিক্ষার্থীদের জুমার নামাজে বাধা প্রদান, স্বৈরাচারী আচরণের মাধ্যমে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি ও শিক্ষকসুলভ বহির্ভূত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ায় সহকারী অধ্যাপক ড. ফিরোজ কবিরকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজেন্ট বোর্ড। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের নীল দলের তৎকালীন সদস্য সচিব এবং ফিজিওথেরাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন (পিটিআর) বিভাগের শিক্ষক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময় যবিপ্রবির প্রধান ফটকে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বাধা দেন ড. ফিরোজ কবির। শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানালে তিনি মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন। পরে মসজিদে প্রবেশে বাধা পাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে উত্তপ্ত রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী