বিষ খাইয়ে এসিড ঢেলে স্কুলছাত্র হত্যায় দুই আসামি গ্রেপ্তার
Published: 19th, June 2025 GMT
কুমিল্লায় স্কুলছাত্র মোহাম্মদ হোসাইনকে বিষ খাইয়ে ও গোপনাঙ্গে এসিড ঢেলে হত্যার অভিযোগে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে চান্দিনায় মামার বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় তাদের গ্রেপ্তার করে বুড়িচং থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলো বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মো. সোলাইমানের ছেলে মো.
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, দুই মাস আগে বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নের শিকারপুর গ্রামের মইনুল হোসেনের মুদি দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এতে গ্রেপ্তার সাইমুনের জড়িত থাকার অভিযোগ গ্রাম্য সালিশে প্রমাণিত হলে তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সালিশ করেন শিকারপুর গ্রামের হোসাইনের বাবা আবু তাহের। এতে আবু তাহেরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে হোসাইনকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাইমুন ও আলাউদ্দিন। গত ৩১ মে হোসাইনকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে বিষপান করায় এবং গোপনাঙ্গে এসিড ঢেলে ঝলসে দেয় তারা। সংকটাপন্ন অবস্থায় তাকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে গত বুধবার তার মৃত্যু হয়।
হোসাইন শিকারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল। আবু তাহের বলেন, ‘আমার ছেলের কী অপরাধ ছিল? তারা অনেক কষ্ট দিয়ে আমার ছেলেটাকে হত্যা করেছে। হাসপাতালের আইসিইউতে ছেলেকে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করতে দেখেছি।’ তিনি তাঁর ছেলে হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে হোসাইনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে সাইমুনের পরিবার। স্থানীয় লোকজন এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন।
বুড়িচং থানার ওসি মোহাম্মদ আজিজুল হক জানান, হোসাইন হত্যার ঘটনায় তার মা শাহিনা আক্তার বাদী হয়ে আলাউদ্দিন ও সাইমুনের নামে মামলা করেছেন। গত বুধবার রাতে চান্দিনা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। এ হত্যাকাণ্ডে অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও গ্রেপ্তার করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: হত য গ র প ত র কর হ স ইন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজউক সার্ভারে ঢুকে নকশা অনুমোদন, গ্রেপ্তার ৩
রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ইসিপিএস সার্ভার হ্যাক করে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে জালিয়াতি করে নকশা অনুমোদনের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৯ মে নকশা অনুমোদন-সক্রান্ত ইসিপিএস সার্ভারে অনুপ্রবেশ করে মাত্র ১৭ মিনিটে একটি ভবনের অনুমোদন পাশের ঘটনাটি নজরে আসে রাজউক কর্তৃপক্ষের।
জলাভূমি ও হাইট রেস্ট্রিকশন থাকা ভূমিতে ১৫ তলাবিশিষ্ট ১৮৫ ইউনিটের এই সুউচ্চ ভবনটির নকশা সব বিধিকে পাশ কাটিয়ে সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পাস করিয়ে নেয় অনুপ্রবেশকারীরা। পরে রাজউক কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি জানতে পেরে প্রাথমিক তদন্তে একই উপায়ে আরও তিনটি ভবনের নকশা অনুমোদন শেষ পর্যায়ে প্রক্রিয়াধীন অবস্থায় পায়। তৎক্ষণাৎ সার্ভারটি বন্ধ করে মতিঝিল থানায় সেদিনই একটি জিডি করা হয়।
পাস করা নকশার সূত্র ধরে রাবেয়া বারী নামক এক প্রকৌশলীর সন্ধান পায় রাজউক, যার স্বাক্ষর নকশাগুলোতে পাওয়া যায়। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে মতিঝিলের নীলনকশা নামের একটি কম্পিউটারের দোকান ও সেখানকার এক কর্মচারী স্বপনের নাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনির হোসেন হাওলাদারের নেতৃত্বে গত ২২ মে একটি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় মতিঝিলের নীলনকশা নামক দোকানটিতে। দোকানটির সঙ্গে অননুমোদিত নকশা অনুমোদনের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে দোকানটির মালিক এনামুলের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে রাজউকের নির্ধারিত ফি পরিশোধের প্রমাণ পাওয়া যায়।
এ ছাড়াও দোকানের কয়েকটি কম্পিউটারে ওই অবৈধ ভবনগুলোর নকশা পাওয়া যায়। এতে দোকানের মালিক এনামুল ও কর্মচারী স্বপনের সম্পৃক্ততা প্রতীয়মান হয়। মোবাইল কোর্ট চলাকালে তাদের কাউকেই না পাওয়া যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট অন্য কর্মচারীদের পুলিশের আওতায় নেওয়া হয়।
রাজউকের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ বলেন, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেন এবং তাঁর নির্দেশনায় ৬ জুন রাজউক বাদী হয়ে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ধারাসহ দণ্ডবিধির ধারায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন।
তিনি বলেন, মামলার এজাহারনামীয় ২১ নম্বর আসামি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান ‘নীলাভ নকশাঘর’ এর মালিক মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ এজাহারনামীয় ২২ ও ২৩ নম্বর আসামি সজীব ও মুকুলকে পুলিশ মতিঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে।