বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমার জগৎটা এখন রাজনীতির। কিন্তু আমি খেলার মধ্যে রাজনীতি আনার পক্ষে কোনো দিনই নই। আমি সব সময় মনে করেছি যে খেলাধুলা, ক্রীড়াঙ্গন এটা রাজনীতিমুক্ত হওয়া উচিত।’
আজ শুক্রবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের শহীদ মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়ামে আয়োজিত ‘মির্জা রুহুল আমিন স্মৃতি’ টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

গত ৮ মে বিভিন্ন জেলার ১৬টি দলের অংশগ্রহণে এই ক্রিকেট টুর্নামেন্ট শুরু হয়। ফাইনাল খেলায় দিনাজপুর ডেমনেটর্স ক্রিকেট দলকে ছয় উইকেটে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় পাবনা ক্রিকেটার্স দল।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যাঁরা যোগ্য, তাঁরা খেলবেন। আর সবচেয়ে বড় জিনিস, যাঁরা মাঠে খেলেন, তাঁদের হৃদয়টা অনেক বড় হয়, এটা প্রমাণিত। দেখা যায়, ওখানে ক্ষুদ্র দলমত এগুলো নিয়ে কোনো বিভেদ থাকে না। আমাদের সময় সেটাই ছিল। একেকজন একেক দল সমর্থন করতাম আমরা, একেকজন একেকটা মত সমর্থন করতাম। কিন্তু খেলা যখন আসত, তখন আমরা সবাই একসঙ্গে ক্রিকেটের পক্ষে থাকতাম। এ রকম অনেক স্মৃতি আছে, সেসব স্মৃতি বললে অনেক সময় লেগে যাবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘একটা কথা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে, দেশটা আমার, এটা অন্য কারও নয়। এই দেশটাকে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। গত ১৫ বছরে এই দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে। কিন্তু এখন সময় এসেছে এই দেশটাকে নতুন করে গড়ে তোলার। ঠাকুরগাঁওয়ের যাঁরা ক্রীড়ামোদি আছেন, তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলমত–নির্বিশেষে খেলাধুলার ব্যবস্থা করবেন, আমি এটা বিশ্বাস করি।’

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে একটা নতুন করে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক প্রাণ গেছে, অনেক ছাত্ররা জীবন দিয়েছেন; তাঁদের আত্মার প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, ‘মির্জা রুহুল আমিন’ স্মৃতি টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক জেলা বিএনপির সহসভাপতি নূর-এ-শাহাদাৎ, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সরদার মোস্তফা শাহিন, পৌর বিএনপির সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ প্রমুখ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র র জন ত ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

প্রযুক্তির উৎকর্ষের মধ্যেও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা বিভিন্নভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে প্রায়ই বিকৃতভাবে বা ভুলভাবে উপস্থাপন করছে। গুগলে ‘ইনডিজেনাস পিপল’ লিখে খোঁজা হলে মাঝেমধ্যে এমন ছবি দেখানো হয়, যা তাদের ‘আদিম’, ‘বন্য’, ‘বর্বর’, ‘জংলি’ ও ‘হিংস্র’ আকারে উপস্থাপন করে।

সোমবার রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জা​দুঘর মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এমন অভিযোগ করেন। ‘আদিবাসী নারীর অধিকার রক্ষা ও ভবিষ্যৎ গড়ার লড়াইয়ে আধুনিক প্রযুক্তির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্ক।

আলোচনা সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদের ঘিরে এমন উপস্থাপনের প্রভাব নারীদের ওপরও পড়বে।

মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, দেশে জাতিসংঘের অনেকগুলো দিবস রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হলেও আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালন করা হয় না। তিনি বলেন, বুঝুক আর না বুঝুক বাংলাদেশ জাতিসংঘের বিভিন্ন কনভেনশনকে তড়িঘড়ি করে সমর্থন করে। কিন্তু এই কনভেনশনকে সমর্থন করেনি। সরকার বুঝেশুনেই সমর্থন করেনি। আগের সরকার বলেছে, বাংলাদেশে আদিবাসী নেই, এই সরকারও আদিবাসীদের স্বীকৃতি দিচ্ছে না।

একটাই ধর্ম ও জাতিসত্তা থাকবে, এমন মনোভাব কাম্য নয় উল্লেখ করে এই মানবাধিকারকর্মী বলেন, ‘কিসের ভয়ে আমরা দেশে ভিন্ন ধর্ম, চিন্তা ও জাতিসত্তার মানুষকে থাকতে দেব না? কে অধিকার দিয়েছে যে একটি মাত্র মতবাদ, চিন্তা, ভাষা জাতি ও ধর্ম থাকবে? রাষ্ট্রের জন্য এটা কাম্য হতে পারে না।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে সমতল ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে খুশী কবির বলেন, অভ্যুত্থানের পরে আর নারীদের কোনো অংশগ্রহণ নেই। নারী কমিশন গঠন করা হয়। কিন্তু কমিশনের কোনো কিছু গ্রহণ করা হয়নি। এর অর্থ সরকার নারীদের ভয় পায়। এই অবস্থা টিকে থাকার জন্য অভ্যুত্থান হয়নি। তাই অধিকার আদায়ে নারীদের শক্ত ভূমিকা রাখতে হবে। এখনই উত্তম সময়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির ছবি: প্রথম আলো হেডিং: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ