ঢাকাস্থ চাঁদপুর জেলা সাংবাদিক ফোরামের ২০২৫-২০২৭ মেয়াদের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। নবগঠিত কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন দৈনিক স্বদেশ বাংলা এর সম্পাদক একেএম রাশেদ শাহরিয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এনটিভির চিফ অব করেসপন্ডেন্ট সফিক শাহীন। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানেল আইয়ের বিশেষ প্রতিনিধি মাজহারুল হক মান্না।

শুক্রবার (২০ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত ফোরামের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদায়ী সভাপতি মিজান মালিক এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সদ্য নির্বাচিত সভাপতি একেএম রাশেদ শাহরিয়ার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

মাহবুব-উল-আলম।
তিনি তার বক্তব্যে চাঁদপুরের সাংবাদিকদের ঐক্য ও সৃজনশীলতাকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ‘‘চাঁদপুরের মানুষ সবসময় চিন্তায়, কর্মে ও মননে সৃজনশীল। এই সৃজনশীলতা শুধু চাঁদপুর নয়, সমগ্র দেশের জন্যই এক অনন্য দৃষ্টান্ত।’’ 

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, ফেমাস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইউনূছ উল্ল্যাহ, এলডিপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মো. মঞ্জুর খান এবং অন্যান্য ফোরাম সদস্যরা।

দ্বিতীয় অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক এবং দৈনিক আমার দেশ এর বিশেষ প্রতিনিধি নোমান সেলিম।

সভার একপর্যায়ে প্রস্তাব ও সমর্থনের ভিত্তিতে নতুন সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচন ঘোষণা করেন সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার ও সালেহ বিপ্লব।

ফোরামের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটির বাকি সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।

নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের অভিনন্দন জানান সদ্য সাবেক সভাপতি মিজান মালিকসহ ফোরামের অন্যান্য সদস্যরা। সভায় উপস্থিত সদস্যরা তাদের মতামত ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়েও মত বিনিময় করেন।

ঢাকা/এএএম/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ