বাইক এখন শুধু একটি বাহন নয়, প্রত্যেকের জীবনে হয়ে উঠেছে নিত্যদিনের সঙ্গী। কর্মজীবীদের রোজকার অফিস, বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজপড়ুয়াদের প্রতিদিন ক্লাস কিংবা বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে কোথাও যাওয়া—প্রতিদিনের পথচলায় বাইক যেন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেরই বাইকের নির্ভরতার নাম হলো ‘সুজুকি’।

সুজুকি এমন একটি ব্র্যান্ড, যেটি বাইক-চালকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে এর অসাধারণ প্রযুক্তি, স্টাইলিশ ফিচার এবং নির্ভরযোগ্যতার জন্য। এটি শুধুই পথচলার সঙ্গী নয়, রাইডারদের একটি আত্মবিশ্বাসের জায়গা, যেখানে মিশে রয়েছে গতি, নিয়ন্ত্রণ ও স্টাইলের একটি অসাধারণ কম্বিনেশন।

বাংলাদেশের বাজারে বর্তমানে সুজুকির একাধিক মডেল রয়েছে। তাই চাইলেই যে কেউ নিজের পছন্দমতো বাইক বেছে নিতে পারেন। যেমন কারও যদি শক্তিশালী এবং স্পোর্টি বাইক ভালো লাগে, তবে তাঁর জন্য ‘জিক্সার এফআই এবিএস’, ‘কার্ব ডিস্ক’ বা ‘জিক্সার মনোটোন’ একেবারেই পারফেক্ট। আবার যাঁরা প্রতিদিনের যাতায়াতকে সহজ, স্টাইলিশ ও ঝামেলাহীন রাখতে চান, তাঁদের জন্য আদর্শ একটি বাইক হলো ‘সুজুকি এক্সেস-১২৫’।

আর জিক্সার মনোটোন-এর মার্জিত লুকের জন্য এ সময়ের তরুণদের কাছে হয়ে উঠছে স্টাইলের নতুন ভাষা। স্পোর্টি ট্যাংক ডিজাইন, ডিজিটাল কনসোল, কমফোর্টেবল সিট এবং উন্নত মাইলেজ—সব মিলিয়ে এটি এমন একটি প্যাকেজ, যেটি শুধু দেখতেই নয়, চালাতেও অসাধারণ। এই বাইকটি মূলত তাঁদের জন্য, যাঁরা রোজকার জীবনে ইউনিক কিছু খোঁজেন।

অন্যদিকে জিক্সার এফআই এবিএস মডেলে রয়েছে উন্নত একক-চ্যানেল অ্যান্টিলক ব্রেকিং সিস্টেম, যা হঠাৎ ব্রেক করার সময় বাড়ায় আত্মবিশ্বাস। আর কার্ব ডিস্ক সংস্করণটি প্রাধান্য দেয় সহজ রক্ষণাবেক্ষণ এবং শক্তিশালী পারফরম্যান্সকে। এক্সেস-১২৫ স্কুটারটির রয়েছে জ্বালানি ইনজেকশন প্রযুক্তি, বড় আসন এবং ইউএসবি চার্জিং-সুবিধা। সবকিছু মিলিয়ে এটি আধুনিক জীবনের এক নির্ভরযোগ্য ও আরামদায়ক সঙ্গী।

সুজুকি বাইক যেমন একজন রাইডারের স্টাইল প্রকাশ করে, তেমনি তাঁর দৈনন্দিন জীবনের প্রয়োজনীয় গন্তব্যে পৌঁছানোকে করে তোলে আরও সহজ ও আত্মবিশ্বাসপূর্ণ। বর্তমানে বাইক রাইডাররা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং দেখেন কার্যক্ষমতা, বৈশিষ্ট্য, নিরাপত্তা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশ্বাসযোগ্যতা। আর এ ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে সুজুকিই এগিয়ে।

এই বিশ্বাসযোগ্যতা এসেছে শুধু ব্র্যান্ড থেকে নয়, বাংলাদেশের বাজারে সুজুকির পরিবেশক র‍্যানকন মোটরবাইকস লিমিটেডের কার্যকর ভূমিকার কারণেও। প্রতিষ্ঠানটি শুধু মোটরসাইকেল সরবরাহ করছে না, বরং দিচ্ছে একটি পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা—যার মধ্যে রয়েছে বিক্রয়োত্তর সেবা, আসল খুচরা যন্ত্রাংশ, প্রশিক্ষিত প্রযুক্তিবিদ এবং সারা দেশে বিস্তৃত ১৩০টিরও বেশি অনুমোদিত সেবাকেন্দ্র।

অনেক রাইডারের মতে, সুজুকি মোটরসাইকেল কিনে তাঁরা শুধু একটি বাহন নয়, বরং পেয়েছেন একধরনের মানসিক নিশ্চয়তা, যা তাঁদের প্রতিদিনের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জিক্সারের স্টাইল হোক, মনোটোনের ভিন্নতা কিংবা এক্সেস-১২৫-এর উপযোগিতা—প্রতিটি সুজুকি মডেল যেন রাইডারের ব্যস্ত জীবনের ছন্দে নিখুঁতভাবে মিশে যায়।

এভাবেই সুজুকি শুধু স্টাইল এবং প্রযুক্তির মিশ্রণ নয়, বরং রাইডারদের অভ্যাস, গতি, নিরাপত্তা ও আত্মপরিচয়ের সঙ্গে এক গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। সব মিলিয়ে সুজুকি মানেই আস্থা, আরাম, আধুনিকতা এবং আন্তর্জাতিক মান। এসব কারণেই সুজুকি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের আধুনিক রাইডারদের প্রথম পছন্দ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য জ বন র

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকের ইন্টার্ন থেকে টিকটকের সিইও—যেভাবে শো জি চিউয়ের পথচলা

সারা বিশ্বের টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি। এই প্ল্যাটফর্ম শুধু বিনোদন নয়, কোটি কোটি ছোট ব্যবসা, সৃষ্টিশীল তরুণ-তরুণীর জীবিকার উৎস। আর এই প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ আজ নির্ভর করছে একজন মানুষের কাঁধে—শো জি চিউ। তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ফেসবুকে ইন্টার্নশিপ দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন এবং আজ টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সাদামাটা শুরু: ইন্টার্ন থেকে ব্যাংকার

সিঙ্গাপুরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শো জি চিউ প্রথমে দেশটির নিয়মানুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। এরপর লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো অধ্যায় শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে এমবিএ করার সময়।

হার্ভার্ডে পড়ার সময়, যখন ফেসবুক ছিল একেবারে নতুন একটি স্টার্টআপ, চিউ সেখানে ইন্টার্নশিপ করেন। তখন হয়তো তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে একদিন ফেসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতৃত্ব দেবেন। ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা তাঁকে প্রযুক্তি খাতের প্রথম বাস্তব ধারণা দেয়।

হার্ভার্ডের পর তিনি দুই বছর গোল্ডম্যান স্যাকসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে কাজ করেন। এ সময় তিনি প্রযুক্তি খাতে বড় বিনিয়োগের কাজের সঙ্গে জড়িত হন, যা তাঁর ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বিনিয়োগ জগতে উত্থান এবং বাইটড্যান্সের সঙ্গে প্রথম সংযোগ

২০০৮ সালে চিউ যোগ দেন ডিএসটি গ্লোবাল নামের এক শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানে। সেখানে পাঁচ বছর কাজ করার সময় তিনি আলিবাবা, জেডি ডটকমসহ একাধিক প্রযুক্তি জায়ান্টে বিনিয়োগের সুযোগ পান।

২০১৩ সালে তিনি একটি দলকে নেতৃত্ব দেন, যারা প্রথম দিকে বাইটড্যান্সে বিনিয়োগ করেছিল। সেই সময় হয়তো চিউ ভাবতেও পারেননি, একদিন তিনিই সেই কোম্পানির প্রধান পণ্য টিকটকের সিইও হবেন।

আরও পড়ুনগণপূর্ত অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬৬৯২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫শাওমিতে বড় অর্জন

২০১৫ সালে চিউ চীনের স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) হিসেবে যোগ দেন। তাঁর আর্থিক কৌশলের দক্ষতায় শাওমি দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে।

২০১৮ সালে শাওমির আইপিও ইতিহাস সৃষ্টি করে, যা চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তি আইপিও ছিল। ২০১৯ সালে চিউ শাওমির আন্তর্জাতিক মার্কেটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং কোম্পানির বৈশ্বিক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই সাফল্য তাঁকে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি জগতে পরিচিত করে তোলে এবং টিকটকের দরজায় নিয়ে আসে।

আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগরের সামিয়া ইসলাম চার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কেন অক্সফোর্ডকেই বেছে নিলেন০১ অক্টোবর ২০২৫টিকটকের নেতৃত্বে যেভাবে 

মার্চ ২০২১ সালে চিউ বাইটড্যান্সে প্রথম সিএফও হিসেবে যোগ দেন। মাত্র দুই মাস পর, মে ২০২১-এ তাঁকে টিকটকের সিইও করা হয়। তখন টিকটক রাজনৈতিক চাপে ছিল। তাঁর পূর্বসূরি কেভিন মেয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে চিউকে শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনা নয় বরং প্রযুক্তি ও রাজনীতির এক জটিল যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে হয়।

হার্ভার্ডে পড়াশোনার সময় ই-মেইল চালাচালির সময়ে পরিচিত হন স্ত্রী ভিভিয়ান কাওয়ের সঙ্গে পরিচয় শো জি চিউর

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেসবুকের ইন্টার্ন থেকে টিকটকের সিইও—যেভাবে শো জি চিউয়ের পথচলা