‘শীতের রাতে কাঁথা-কম্বল নিয়ে ট্রাকে করে ঢাকায় আসতাম’
Published: 23rd, June 2025 GMT
সিডনির ডেনহ্যাম কোর্ট যেন হয়ে গিয়েছিল নব্বইয়ের ঢাকার একটুকরো নাট্যমঞ্চ। উপলক্ষ ছিল একটা আড্ডা। গত রোববার যাতে মেতে উঠেছিলেন বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনের কয়েকজন কুশীলব। কেন্দ্রে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়েকে দেখতে সিডনিতে আসা নির্মাতা শিহাব শাহীন, সিডনিতে পরিবার নিয়ে বসবাসরত অভিনেতা মাজনুন মিজান, ‘ঢাকা পদাতিক’-এর একসময়ের প্রধান অভিনেতা জন মার্টিন এবং মঞ্চ ও টেলিভিশন—দুই মাধ্যমে আলো ছড়ানো অভিনেত্রী মৌসুমী মার্টিন। সঙ্গে ছিলেন সিডনিপ্রবাসী বাংলাদেশি চিকিৎসাবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ড.
মঞ্চের সোনালি দিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যজীবনের স্মৃতিচারণা দিয়ে আড্ডা শুরু করলেন জন মার্টিন। তিনি বলেন, ‘প্রথম বর্ষেই “ইন্সপেক্টর জেনারেল” নাটকে কাজ করার সুযোগ পাই। এটা বাংলাদেশের প্রথম স্যাটায়ার মিউজিক্যাল কমেডি।’ বলতে বলতে হঠাৎ নাটকের গানের কয়েকটি লাইন আবৃত্তির ঢঙে উচ্চারণ করে ওঠেন, ‘ও তাঁর ডাইনে বুড়ি, বাঁয়ে কুমারী ছুড়ি, কারে ধরি, কারে রাখি, পড়েছি সেই বিষম বিপাকে...।’ মৌসুমী মার্টিন তখন হেসে বলেন, ‘মঞ্চনাটকের গানে এমনভাবে মন ঢুকে যেত যে আসল গান ভুলে গিয়ে সেই নাটকের গানই মনে থাকত। আজও সেসব সুর কানে বাজে।’
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়
আওয়ামী লীগ ও ভারতের জন্য বাংলাদেশে একটা দাঙ্গা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেছেন, তাহলে রাজনৈতিক মোড়টা ঘুরতে পারে, নির্বাচন বানচাল হতে পারে। সে জন্যই জাতীয় স্বার্থে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মতাদর্শের সনাতনীদের নিয়ে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটি এ সমাবেশের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শেখ মুজিব বিহারি-বাঙালি দাঙ্গা লাগিয়ে, বিহারি-বাঙালি আলাদা করে ১৯৭০–এর নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিলেন এই অঞ্চলের লোকদের বাঙালি বানিয়ে। এ ধরনের ঘটনা ঘটানোরও পেছনে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত পটু। দরকার হলে নিজের ঘরে আগুন দিয়ে দেবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা আরও বলেন, সাম্প্রদায়িকতার মাঝে একটা রাজনীতি আছে। এ ভারতবর্ষে, এ উপমহাদেশে অনেক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে। কিছু গুজবের কারণে। ভারতে এসব দাঙ্গা এখনো চলমান। রাজনৈতিক কুটিলতার মধ্যে এ সাম্প্রদায়িকতা এখন না, হাজার বছর আগে থেকে আছে।
কোনো মানুষ কিংবা ধর্ম সাম্প্রদায়িক নয় উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কখনো কোনো কিছু মোকাবিলা করার জন্য দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করাতে হয়। যাতে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি আরেক দিকে চলে যায়। এইচ এম এরশাদও ’৮৮ সালে এ কাজটা করেছিলেন। বাংলাদেশে মুসলমান নয়, হিন্দুরাই হিন্দুদের শত্রু, হিন্দুরাই হিন্দুদের ক্ষতি করে।
গয়েশ্বর আরও বলেন, ‘আমি হিন্দু–মুসলমানের ব্যবধান বুঝি না। আমি খারাপ আর ভালো লোকের ব্যবধান বুঝি। সৎ লোক–প্রতারকের ব্যবধান বুঝি। আমি সাম্প্রদায়িকতা পছন্দ করি না, অসাম্প্রদায়িক জীবন যাপন করতে পছন্দ করি।’
সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান আমরা একটা বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ। এখানে কোনো প্রভেদ ছিল না, কোনো বিভেদ ছিল না। এটাকে শেখ হাসিনা ভাঙতে চেয়েছেন।
দেখাতে চেয়েছেন এই দেশ বিভেদ–বিভাজনে ভরপুর। সুতরাং আমাকে সমর্থন করো। অন্য বিরোধী দল কাউকে সমর্থন করবে না। এ কারণে তিনি জোর করে জনসমর্থন ব্যতিরেকে দিনের ভোট রাতে করে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যেতে না দিয়ে নির্বাচন কমিশন দিয়ে ভোট করেছেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করেছেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পূজা উদ্যাপন ফ্রন্টের সভাপতি অপর্ণা রায় দাস। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহাদী আমিন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, যুগ্ম মহাসচিব মীর সরাফত আলী, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী এবং জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক।