Samakal:
2025-06-23@23:18:23 GMT

ইরার নীল রেইনকোট

Published: 23rd, June 2025 GMT

ইরার নীল রেইনকোট

শ্রাবণের বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা। রোহান আজকে এলো ইরাদের ছাতাটা নিয়ে, যেটি গতদিন পড়াতে এসে বৃষ্টির কারণে নিয়ে গিয়েছিল। ফলে আজকে ভিজতে হয়নি। কয়েকদিন ধরে টানা বৃষ্টি। এবার ঢাকায় এত বৃষ্টি ভাবা যায় না!
বৃষ্টি থেমে গেল। ইরা রোহানের হাতে একটা শপিংব্যাগ তুলে দিল। বলল, বাবা এটি আপনাকে দিতে বলেছেন। বাসায় গিয়ে খুলবেন।
রোহান নিতে না চাইলেও তার মামা কষ্ট পাবেন ভেবে নিল। রোহান ইরাকে পড়িয়ে কোনো টাকা নেয় না। আত্মীয়তা ও সম্পর্কের মধ্যে সে টাকা-পয়সা নিয়ে আসতে চায় না।
মেসে গিয়ে ব্যাগটা খুলে রোহান অবাক। নীল রঙের রেইনকোট এবং একটি চিরকুট। যেখানে লেখা, ‘রোহান ভাই, আর বৃষ্টিতে ভিজবেন না। অসুস্থ হলে আমাকে কে পড়াতে আসবে?’ 
ইতি– ইরা।
রোহান শুধু মুচকি হাসল। পুরো বর্ষায় এ রেইনকোটই তার সঙ্গী হয়ে গেল।
রোহান ইরার ফুফাতো ভাই। ইরা পদার্থবিজ্ঞানে অনার্স করছে, এবার ফাইনাল দেবে। রোহান একই সাবজেক্টে সদ্য পাস করে বেরিয়েছে। চাকরি না হওয়ায় মেসে থেকে টিউশনি করে। ইরার বাবার অনুরোধেই ইরাকে কয়েকদিন ধরে পড়াচ্ছে; ফাইনালে যাতে ভালো সিজিপিএ আসে। রোহানকে  ইরার পছন্দ আগে থেকেই। রোহানও জানে। চাকরি না হওয়া পর্যন্ত পুরো বিষয়টা চেপে যাবে দু’জনেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইরার পরীক্ষা শেষে রোহান গ্রামে যায়। মায়ের অসুস্থতা আর বাবার জমিজমা নিয়ে ঝামেলার জন্য বেশ কিছুদিন পর ফেরে। ইরাদের বাসায় গিয়ে শুনল, ইরার বিয়ে হয়েছে। স্বামীর সঙ্গে দেশের বইরে এখন। হঠাৎ বিয়ে হওয়ায় জানাতে পারেননি বলে ইরার বাবা দুঃখপ্রকাশ করলেন। হঠাৎ মনে হলো রোহান বাড়িতে যাওয়ার সময় রেইনকোট মেসে রেখে গিয়েছিল। এদিকে গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বৃষ্টির পানিতে তার মোবাইলটা ভিজে যায়। 
এরপর থেকে আর নেটওয়ার্ক কাজ করে না। গ্রামের বাজারে ঠিক না হওয়ায় ঢাকায় এসে ঠিক করাবে বলে রেখে দিয়েছিল। ইরা হয়তো অনেক চেষ্টা করেছে ফোনে।
রোহান একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি পায়। বাসা ও গাড়ির ব্যবস্থা হওয়ায় রেইনকোট পরার প্রয়োজন হয় না। বিভিন্ন রঙের অনেক রেইনকোট আছে এখন তার, মাঝেমধ্যে পরে।  ইরার দেওয়া সেই প্রিয় নীল রেইনকোট এখন আর পরে না। শুধু আলমারিতে যত্নে সাজিয়ে রেখেছে আজীবনের জন্য। v
সুহৃদ মৌলভীবাজার

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ র ইনক ট হওয় য়

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইরান-ইসরায়েল: ডোনাল্ড ট্রাম্প

হামলা পাল্টা হামলার মধ্যে চলা তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। এই যুদ্ধবিরতি চলমান সংঘাতের অবসানের পথে নিয়ে যাবে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। খবর-আল জাজিরা

তবে ইরান জানিয়েছে, তারা এখনও যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব পায়নি এবং তাদের কাছে এমন কোনো প্রস্তাবের প্রয়োজনও নেই। তেহরানের এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা সিএনএনকে এ কথা জানিয়েছেন। 

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য আমাদের কাছে প্রতারণার অংশ। এর মাধ্যমে তারা ইরানে হামলার যুক্তি দাঁড় করাতে চায়। এই মুহূর্তে শত্রু পক্ষ ইরানের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। আর ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা আরও জোরদার করার চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমরা শত্রুর মিথ্যা কথায় কান দিচ্ছি না। 

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। 

যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ১২ ঘন্টার জন্য একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য একমত হয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। যুদ্ধবিরতির সময় এক পক্ষ অন্য পক্ষের প্রতি শান্তিপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

তিনি বলেন, সবকিছু যেমনটি করা উচিত তেমনভাবে হবে। এই ধারণার উপর ভিত্তি করে আমি উভয় দেশ- ইসরায়েল ও ইরানকে অভিনন্দন জানাতে চাই, তাদের দৃঢ়তা, সাহসের অবসান ঘটানোর জন্য, যাকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বলা উচিত।

মাকির্ন  প্রেসিডেন্ট বলেন, এ যুদ্ধ বছরের পর বছর ধরে চলতে পারত এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত। কিন্তু তা হয়নি, এবং কখনও হবেও না! ঈশ্বর ইসরায়েলকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর ইরানকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর মধ্যপ্রাচ্যকে আশীর্বাদ করুন। ঈশ্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আশীর্বাদ করুন এবং ঈশ্বর বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন!

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার জবাবে কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এ অবস্থায় সংঘাত আরও চরমে পৌঁছার আশঙ্কার মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিরসনে একটি বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরও এই যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোলা রাখতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ