কালকিনিতে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, দোয়া শেষে মিষ্টি বিতরণ
Published: 24th, June 2025 GMT
মাদারীপুরের কালকিনিতে আওয়ামী লীগের ব্যানারে একটি ঝটিকা মিছিল হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মিছিলটি শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের মিয়ারহাট বাজারসংলগ্ন সেতুর ওপর থেকে শুরু হয়ে প্রায় ২০০ মিটার দূরেই শেষ হয়ে যায়। এর আগে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের কক্ষে আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন দলটির কিছু কর্মী।
গত বছর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর এটাই কালকিনিতে আওয়ামী লীগের প্রথম ঝটিকা মিছিল। এর আগে মাদারীপুর সদরেও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ব্যানারে কয়েকটি ঝটিকা মিছিল হয়েছিল।
গতকাল রাত আটটার পর ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিছিল ও মিলাদের ছবি এবং ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ৩১ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি একটি গ্রামীণ সেতুর ওপর দাঁড়িয়ে একটি ব্যানার হাতে নিয়ে হাঁটছেন ও স্লোগান দিচ্ছেন। স্লোগানে বলা হচ্ছিল, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ কাঁপবে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিকারমঙ্গল ইউনিয়নের একাধিক ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, মিছিলটি মিয়ারহাট বাজারসংলগ্ন সেতুর ওপর থেকে শুরু হয়। এতে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা কেউই আওয়ামী লীগের পদধারী নেতা-কর্মী নন। শিশু ও বিভিন্ন বয়সের ২৩ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি মিছিলে অংশ নেন। মিছিল শুরুর আগে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ১০ মিনিটের দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয় এবং পরে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। সেই মিলাদে ব্যবহৃত ব্যানারটিই পরে মিছিলে ব্যবহার করা হয়।
এ বিষয়ে কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ সোহেল রানাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
জানতে চাইলে মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও কালকিনি সার্কেল) চাতক মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিছিলটি কখন, কোথায় হয়েছে, তা আমরা নিশ্চিত নই। রাতেই বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা বিষয়টি যাচাই করার চেষ্টা করছি। আজ সকালে পুলিশ অনুসন্ধান শুরু করবে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ, শনিবার থেকে তিন ধাপে কর্মবিরতি
সিলেটে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সিলেট জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ সময় দাবি পূরণ না হলে সব পাথর কোয়ারিতে কর্মবিরতি, পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
কর্মসূচিতে তিনটি ধাপে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে। প্রথম ধাপে ২৮ জুন (শনিবার) সিলেটের সব পাথর কোয়ারি থেকে লোড-আনলোড পয়েন্টে মালিক-শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টা কর্মবিরতি। দাবি পূরণ না হলে ৩০ জুন থেকে সিলেটের সব পণ্য পরিবহনের মালিক-শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি ও ২ জুলাই থেকে সিলেটে জেলার সব ধরনের পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহনে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরিতি।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিকেরা বিক্ষোভ মিছিল করে নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে জড়ো হন। পরে সেখানে বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেলা দেড়টায় চৌহাট্টা এলাকা থেকে বন্দরবাজার মোড় পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা পাথর–সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল জলিল। সিলেটের বিমানবন্দর থানা পাথর ব্যবসায়ী ও স্টোন ক্রাশার মালিক সমিতির সহসভাপতি শাব্বির আহমদের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরের আমির ফখরুল ইসলাম, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, জাতীয় নাগরিক পার্টি সিলেট জেলার প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দীন সাহান, যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে মেজর (অব.) মোস্তফা আনওয়ারুল আজিজ সিলেট জেলা ট্রাক পিকআপ কাভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি দিলু মিয়া, কার্যকরী সভাপতি আবদুস সালাম, সদস্য আলী আহমদ।
আরও পড়ুন‘পাথরের সাম্রাজ্যে’ অভিযান, ৮৭ পাথর ভাঙার যন্ত্রের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন১৮ জুন ২০২৫আরও বক্তব্য দেন জাফলং বল্লাঘাট স্টোন ক্রাশার মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শামীম পারভেজ, বিছনাকান্দি পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, সিলেট সদর পাথর বালু ও স্টোন ক্রাশার মালিক সমবায় সমিতির সদস্য মন্তাজ আলী ও নাজিম উদ্দিন, সালুটিকর পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি দিলু মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পাথর ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি শওকত আলী, সিলেট জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নাজির আহমদ, জেলা ট্রাক মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক নুর আহমদ খান প্রমুখ।
মানববন্ধন কর্মসূচির একপর্যায়ে সিলেটের জিন্দাবাজার-চৌহাট্টা সড়কের এক পাশ বন্ধ রাখা হয়। এ সময় বক্তারা বলেন, পরিবেশের দোহায় দিয়ে পাথর উত্তোলনের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের অন্য কোনো উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। কারণ, তাঁদের নিকটাত্মীয়রা পাথর আমদানির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। ভিন্ন দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের গরিব মানুষকে মারার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে।
আরও পড়ুনকোয়ারি থেকে পাথর তুললে কী ক্ষতি হয়২০ জুন ২০২৫বক্তারা আরও বলেন, দেশের বেশির ভাগ পাথর কোয়ারি লিজ দেওয়া হলেও সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি লিজ দেওয়া হচ্ছে না। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই, কোনো বিশেষজ্ঞদের মতামত ছাড়াই সিলেটের পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখা হয়েছে। এ জন্য সিলেটের পাথর–সংশ্লিষ্ট লাখ লাখ মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। এখন স্টোন ক্রাশারগুলোর বিদ্যুৎ–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে গরিব অসহায় মানুষের পেটে আবার লাথি মারা হয়েছে।