এইচএসসি পরীক্ষার সময় বাংলা প্রথম পত্রের ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনি অংশের ৩০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। পরে পরীক্ষা হবে সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশের।

সেই সৃজনশীল অংশে সাতটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে, প্রতিটি প্রশ্নে ১০ করে ৭০ নম্বর। সময় থাকবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট অর্থাৎ ১৫০ মিনিট। এই সময়ের মধ্যে সাতটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ করা বেশ কঠিন। একমাত্র ‘সুনির্দিষ্ট ও পরিমিত’ উত্তর লেখালেই ‘সম্পূর্ণ উত্তর লেখা’ শেষ করা সম্ভব। বাংলায় এ‍ প্লাস পাওয়ার ওপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি অনেকাংশে নির্ভর করে থাকে। তাই তোমাকে এইচএসসি পরীক্ষার্থী হিসেবে বাংলায় এ‍ প্লাস পাওয়ার এই কঠিন কাজটিই সমাধান করতে হবে সহজভাবে। আর তা করতে তোমার প্রয়োজন বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষায় সঠিক ‘সময় পরিকল্পনা’ করা। তাহলে তুমি সহজেই ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে সৃজনশীল অংশের সাতটি প্রশ্নের উত্তর লিখে শেষ করতে পারবে।

প্রশ্ন নির্বাচন জরুরি

বাংলা প্রথম পত্রে সবচেয়ে জরুরি ‘সঠিক প্রশ্ন নির্বাচন’ করা। সৃজনশীলে প্রশ্ন থাকবে ১১টি, উত্তর লিখতে হবে ৭টি প্রশ্নের। সময় হাতে পাবে ২ ঘণ্টা ৩০ মিনিট মানে ১৫০ মিনিট। সৃজনশীল বা রচনামূলক অংশে ১১টি প্রশ্নই তোমাকে পড়তে হবে। যে প্রশ্নের উত্তর ভালো পারো, সেগুলোর তুমি উত্তর করবে। যেগুলো উত্তর করবে, সে প্রশ্নগুলো টিকচিহ্ন দিয়ে রেখো। তাতে লেখার সময় সহজেই তোমার চোখে পড়বে। প্রশ্ন নির্বাচন করতে তুমি সময় পাবে মাত্র—পাঁচ মিনিট।

উদ্দীপক পড়া ও বোঝা

বাংলা প্রথম পত্রের প্রশ্নের উত্তর লেখার সময় অবশ্যই তোমাকে উদ্দীপক পড়তে হবে, ভাবতে হবে, কল্পনা করতে হবে শেষে পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে মেলাতে হবে। তারপর তুমি উত্তর লেখা শুরু করতে পারবে। মনে রেখো, প্রতিটি উদ্দীপক পড়ে–বুঝে লেখার চিন্তা করতে সময় পাবে মাত্র এক মিনিট করে মোট সাত মিনিট।

সৃজনশীল প্রশ্ন লেখার সময়

১.

প্রতিটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর প্রাসঙ্গিক ও যথাযথভাবে লিখতে মোট চারটি অংশ লিখতে হবে। প্রথম ধাপটি হলো ক. জ্ঞানমূলক প্রশ্ন। নম্বর থাকবে এক। তুমি জ্ঞানমূলক প্রশ্নের উত্তর এক প্যারায় লিখবে। হতে পারে সর্বোচ্চ এক বা দুই লাইন। ক. অংশের জ্ঞানমূলক লেখার জন্য সময় ভাগ করে পাবে এক মিনিট।

২. প্রশ্নের ২য় অংশ হলো খ. অনুধাবনমূলক প্রশ্ন। নম্বর থাকবে দুই। তুমি অনুধাবনমূলক প্রশ্নের উত্তর লিখবে দ্বিতীয় প্যারায়। এর উত্তর হতে পারে অর্ধেক পৃষ্ঠা বা পুরো এক পৃষ্ঠা। খ. অনুধাবনমূলক অংশ লেখার জন্য সময় ভাগ করে পাবে চার মিনিট।

৩. প্রশ্নের তৃতীয় অংশ হলো গ. প্রয়োগমূলক প্রশ্ন। নম্বর থাকবে তিন। তুমি প্রয়োগমূলক অংশের উত্তর তিন প্যারায় লিখবে। এর উত্তর হতে পারে দেড় পৃষ্ঠা থেকে দুই পৃষ্ঠার মধ্যে। গ. প্রয়োগমূলক অংশ লেখার জন্য সময় ভাগ করে নেবে। সময় পাবে ছয় মিনিট।

৪. প্রশ্নের চতুর্থ অংশ হলো ঘ. উচ্চতর দক্ষতাবিষয়ক প্রশ্ন। এতে নম্বর থাকবে চার। তুমি উচ্চতর দক্ষতা প্রশ্নের উত্তর লিখবে চার প্যারায়। এর উত্তর হবে দুই পৃষ্ঠা থেকে তিন পৃষ্ঠার মধ্যে। এর মধ্যে প্রশ্নের উচ্চতর দক্ষতা, বিশ্লেষণ, উপসংহার ও তোমার মতামত সবই লিখতে হবে। উচ্চতর দক্ষতা উত্তর লিখতে সময় পাবে আট মিনিট।

মানে, একটি সৃজনশীল প্রশ্নের চারটি অংশ লিখতে সময় পাবে— (এক মিনিট+চার মিনিট+ছয় মিনিট+আট মিনিট)। মোট—১৯ মিনিট।

লেখা শেষে রিভিশন

পরীক্ষা শেষ তোমার খাতাটি অবশ্যই রিভিশন দিতে হবে। রিভিশন দিলে পরীক্ষার লিখিত খাতার ছোট-বড় অনেক লেখার ভুল পেতে পারো, যা শুধরে নিতে সহায়তা করবে। তাই তোমাকে অবশ্যই খাতা রিভিশন দেওয়ার জন্য সময় পাবে পাঁচ মিনিট।

একনজরে সময় পরিকল্পনা দেখে নাও

১. সৃজনশীল অংশের প্রশ্ন নির্বাচন করতে সময় রাখবে ৫ মিনিট।

২. সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক পড়ার জন্য সময় রাখবে ৭ মিনিট।

২. সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে সময় পাবে ৭ গুণ ১৯ মিনিট। মোট সময় ১৩৩ মিনিট।

৪. পুরো খাতা রিভিশন দেওয়ার জন্য সময় রাখবে ৫ মিনিট।

* লেখক: মোস্তাফিজুর রহমান, শিক্ষক, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স জনশ ল অ শ র জন য সময় ম লক অ শ সময় প ব পর ক ষ সময় র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষার কক্ষে যে ৮টি টিপস কাজে দেবে

চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ২৬ জুন। বাংলা প্রথম পত্র বিষয় দিয়ে এবারের পরীক্ষা শুরু হবে। এটি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। এইচএসসি পরীক্ষার কক্ষে কী করবে আর কী করবে না, এবার জেনে নাও। এসব টিপস পরীক্ষার সময় অনেক সহায়ক হবে।

দুশ্চিন্তা করবে না

এখন থেকেই পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করবে। দুশ্চিন্তা ভালো পরীক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা। অনেক শিক্ষার্থী অতিরিক্ত টেনশনের কারণে অনেক জানা প্রশ্নের উত্তরও সঠিকভাবে করতে পারে না। পরীক্ষার কক্ষে প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর প্রশ্নপত্রটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে।

খাতা হাতে পেয়ে যা করবে

পরীক্ষার কক্ষে প্রথমে খাতা হাতে পেয়ে পেনসিল দিয়ে মার্জিন টানতে হবে। উত্তরপত্রের ‘ওএমআর শিটে’ পরীক্ষার রোল, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড, বোর্ডের নাম ইত্যাদি সঠিকভাবে প্রথমে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লিখতে হবে। পরে বলপয়েন্ট কলম দিয়ে সঠিকভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই এইচএসসি পরীক্ষার খাতা বা উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না।

প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর যা করবে

প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর পুরো প্রশ্নটি মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। কোনো প্রশ্ন আংশিক পরিবর্তন করে দেওয়া হলো কি না, তা খেয়াল রাখতে হবে। প্রশ্নপত্র দেখে মনে মনে পুরো পরীক্ষার পরিকল্পনা করতে হবে। কীভাবে শুরু করবে এবং কীভাবে শেষ করবে, তার ছক মনে মনে করে নিলে পরীক্ষা অনেক সহজ হয়ে যাবে।

আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মানতে হবে যে ১০ বিশেষ নির্দেশনা১ ঘণ্টা আগে

সময় ভাগ করে নাও

প্রশ্নের মান অর্থাৎ নম্বর অনুযায়ী কতটুকু লিখতে হবে, তা নির্ধারণ করেই লেখা শুরু করতে হবে। শুরুর প্রশ্নগুলো যতটা সম্ভব ভালো করে দেওয়া উচিত, তবে তা হতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। একটি রচনামূলক প্রশ্নের বা সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য সাধারণত ১৯ থেকে ২০ মিনিট সময়ের মধ্যে লেখা শেষ করতে হবে।

প্রশ্ন নির্বাচনও গুরুত্বপূর্ণ

যেসব প্রশ্নের উত্তর ভালো জানা আছে, সেগুলো আগে লেখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। পরীক্ষক যখন খাতা মূল্যায়ন করবেন, তখন শুরুতেই লেখার মান ভালো দেখলে শিক্ষার্থীর প্রতি ইতিবাচক ধারণা পাবেন। এতে ওই বিষয়ে ভালো নম্বর পাওয়া সহজ হবে। তুলনামূলক সহজ ও জানা প্রশ্নের উত্তর পর্যায়ক্রমে লেখাই ভালো।

উত্তরপত্র পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে

পরীক্ষার খাতায় ওভার রাইটিং, কাটাছেঁড়া, অস্পষ্ট লেখা ইত্যাদি করা যাবে না। লেখায় কোনো ভুল হলে এক টানে কেটে দিতে হবে। লেখার ভাষা সহজ-সরল ও প্রাঞ্জল হওয়া উচিত। একটি প্রশ্নের উত্তর লেখা শেষ হলে পরের পৃষ্ঠায় প্রশ্নের উত্তর শুরু করবে। এ ছাড়া প্রশ্নের উত্তরে ধারাবাহিকতা ভালো ফলের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়।

আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষা: দেখে নাও নম্বর বণ্টন ও সময় বিভাজন৩ ঘণ্টা আগে

অপ্রাসঙ্গিক কিছু লেখা যাবে না

বেশি লিখলে বেশি নম্বর পাওয়া যায়, এটা ভুল ধারণা। অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক লিখে উত্তর বড় করা যাবে না। অপ্রাসঙ্গিক উত্তর লিখে খাতা ভরলে সময় নষ্ট হবে, বেশি নম্বর কিন্তু পাওয়া যাবে না। অনেকেই কয়েক লাইনে এক পৃষ্ঠা শেষ করে পরবর্তী পৃষ্ঠায় লেখা শুরু করে। এতে পরীক্ষকেরা বিরক্ত হন। মনে রেখো, প্রাসঙ্গিক ও যথাযথ উত্তরেই কিন্তু বেশি নম্বর পাওয়া যায়।

রিভিশন দাও লেখার শেষে

পরীক্ষার শেষে খাতা রিভিশনের জন্য পাঁচ থেকে সাত মিনিট সময় রাখবে। এ সময় সবার আগে লক্ষ করবে, প্রশ্নের সঙ্গে উত্তরপত্রে লেখা ক্রমিকের মিল আছে কি না। প্রশ্নের সৃজনশীল অংশের ক্রমিকও (যেমন ক, খ, গ, ঘ) ঠিকমতো লেখা হয়েছে কি না, দেখতে হবে। ক্রমিক নম্বর ভুল হলে কিন্তু পরীক্ষক নম্বর দেওয়ার জন্য প্রশ্ন ও উত্তরের মধ্যে মিল পাবে না। এ ছাড়া কোথাও কোনো ভুল আছে কি না, বা কোনো প্রশ্ন বাদ পড়ল কি না, মনোযোগ দিয়ে দেখতে হবে।

লেখক: অধ্যাপক মো.আফলাতুন, অধ্যক্ষ, শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ সরকারি কলেজ, গাজীপুর।

আরও পড়ুনএইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ৭ নির্দেশনা১৯ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১৫ আগস্ট পর্যন্ত কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ঘোষণা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
  • কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে মোশাররফের এইচএসসি পরীক্ষা অনিশ্চিত
  • এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে প্রবেশ নিষেধ
  • এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে জনসাধারণ প্রবেশ নিষিদ্ধ করল ডিএমপি
  • এইচএসসি পরীক্ষায় শেষ মুহূর্তে মনে রেখো ৭ বিষয়
  •  হোসেনপুর ডিগ্রী কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা
  • সিদ্ধিরগঞ্জ রেবতী মোহন পাইলট স্কুল এন্ড কলেজে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায়ী সংবর্ধনা
  • এইচএসসি পরীক্ষার কক্ষে যে ৮টি টিপস কাজে দেবে
  • এইচএসসি পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ