কর্মীদের ছোট ছোট দলের মধ্যে তর্কে উৎসাহ দিতেন স্টিভ জবস, কেন
Published: 25th, June 2025 GMT
অ্যাপল কম্পিউটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্টিভ জবস। প্রযুক্তি-দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটানো স্টিভ জবস দীর্ঘদিন অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁর প্রতিষ্ঠান পরিচালনার কৌশল প্রচলিত ব্যবসা–দুনিয়ার মতো ছিল না। তিনি নিজের প্রতিষ্ঠানকে বেশ আলাদাভাবে পরিচালনা করতেন। প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সমন্বয়ে গড়া ছোট ছোট দলের মধ্যে তর্ক আর লড়াইকে উৎসাহ দিতেন তিনি। স্টিভ জবস বিশ্বাস করতেন, প্রতিভাবান ব্যক্তিদের মধ্যে সংঘাত ও বিতর্ক নতুন উদ্ভাবনের পথ তৈরি করে। বিষয়টি অনেকটা সিরিশ কাগজ দিয়ে পাথর ঘষে চকচকে করার মতো। কর্মীদের ব্যক্তিত্বের সীমানা অতিক্রম করে নিত্যনতুন সৃজনশীলতাকে উৎসাহ দিলেও গভীর রাতে ফোন করা বা ছুটির সময়ও কাজের বিষয়ে কথা বলতেন স্টিভ জবস।
জীবদ্দশায় এক সাক্ষাৎকারে স্টিভ জবস জানিয়েছিলেন, প্রতিভাবানরা একে অন্যের বিরুদ্ধে ঝগড়া করেন। তাঁরা চিৎকার করেন। তাঁদের কিছু ভুল হয়। মাঝেমধ্যে তাঁদের তর্ক হয়, তাঁরা লড়াই করেন। এতে আসলে একে অপরকে তাঁরা শাণিত করেন। প্রকৃত অগ্রগতি তখনই আসে যখন মানুষ একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করতে বাধ্য হন। একমত হলেই অগ্রগতি নিশ্চিত নয়।
আরও পড়ুনস্টিভ জবসের সঙ্গে কাজ করে যে ৩টি বিষয় শিখেছেন টিম কুক২৪ অক্টোবর ২০২৪স্টিভ জবসের নেতৃত্বে কাজ করার অভিজ্ঞতা তুলে ধরে অ্যাপলের অনেক কর্মী জানিয়েছেন, আলাদা দলের মধ্য মিথস্ক্রিয়াকে উৎসাহিত করার জন্য টিম স্পেস গঠন করতেন স্টিভ জবস। প্রকৌশলী ও ডিজাইনারদের একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে পরস্পরের সমস্যা সমাধানের পথ তৈরি করতেন তিনি। আইফোন তৈরি ও পিক্সারেও একই কৌশল তিনি ব্যবহার করেন।
আরও পড়ুনস্টিভ জবসের যে দক্ষতাকে এখনো ঈর্ষা করেন বিল গেটস১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫পিক্সারের প্রধান সৃজনশীল কর্মকর্তা পিট ডক্টর জানিয়েছেন, স্টিভ জবস ঘণ্টার পর ঘণ্টা সহকর্মীদের ফোন করতেন। জবস যেকোনো সময়, দিন বা রাত, ভোর তিনটার সময় কল দিতেন। আপনি ছুটিতে থাকলেও তাঁর কিছু যায়–আসে না। অফিস সময়ের পরে জবসের ফোনকলের আলোচনা বেশ রূঢ় থাকত। সেই সব আলাপের তীব্রতা প্রায়ই ব্যক্তিগত সীমানাকে উপেক্ষা করত। সব সময় কাজ—এমন সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী ছিলেন স্টিভ জবস।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
আরও পড়ুনস্টিভ জবসের জীবনের ৩ বিচ্ছেদের গল্প শুনুন০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন স ট ভ জবস ট ভ জবস র কর ম দ র করত ন উৎস হ
এছাড়াও পড়ুন:
দিনাজপুরে মেতেছে বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা
দিনাজপুরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিজয়া দশমীতে অনুষ্ঠিত হলো ঐতিহ্যবাহী সিঁদুর খেলা।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) দুপুর থেকে শহরের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা বিসর্জন কেন্দ্রে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু ও প্রবীণ সবাই অংশ নেন এই আনন্দঘন উৎসবে।
আরো পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে উৎসবমুখর পরিবেশে প্রতিমা বিসর্জন
বুড়িগঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন, সদরঘাটে ভক্তদের ঢল
শঙ্খধ্বনি, ঢাক-ঢোলের তালে প্রতিমার সামনে একে অপরের মুখে, কপালে ও গালে সিঁদুর লেপন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন ভক্তরা। লাল রঙে রঙিন হয়ে ওঠে চারপাশ, সৃষ্টি হয় এক অনিন্দ্যসুন্দর পরিবেশ। সিঁদুর খেলাকে কেন্দ্র করে শহরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে।
দিনাজপুর শহরের বড় মণ্ডপ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপে একই দৃশ্য দেখা গেছে। প্রতিমা বিসর্জনের আগে এভাবেই মা দুর্গাকে বিদায় জানান ভক্তরা।
পণ্ডিতদের মতে, বিজয়া দশমীর সিঁদুর খেলা মূলত মা দুর্গাকে বিদায়ের আগে তাকে শুভকামনা ও আশীর্বাদ জানানোর একটি প্রতীকী রীতি। বিশেষত বিবাহিত নারীরা একে অপরকে সিঁদুর পরিয়ে স্বামীর দীর্ঘায়ু ও পরিবারের মঙ্গল কামনা করেন।
দিনাজপুর শহরের রাজবাটি, কালীতলা, বড় মণ্ডপসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ছিল এই উৎসবের প্রাণবন্ত আয়োজন। ছোট-বড় সবাই লাল সিঁদুরে রঙিন হয়ে একে অপরকে আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
শেষ বিকেলে ঢাক-ঢোলের বাদ্য, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়। দিনাজপুরে সিঁদুর খেলার এ উৎসব শুধু ধর্মীয় আবেগ নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির প্রাণের এক রঙিন প্রকাশ।
স্থানীয় পূজারী সুবর্ণা রায় বলেন, “মা দুর্গাকে বিদায় জানাতে মন খারাপ লাগে। তবে সিঁদুর খেলা আনন্দের মধ্য দিয়ে সেই বিষাদকে কিছুটা কমিয়ে দেয়।”
অর্পিতা এক কলেজ ছাত্রী জানান, সারা বছর অপেক্ষা করি দুর্গাপূজার জন্য। আজকের দিনটা আবেগের, আবার আনন্দেরও। মা-কে বিদায় জানালেও সিঁদুর খেলায় মন ভরে যায়।
দিনাজপুর পৌর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, “সিঁদুর খেলা আমাদের সংস্কৃতির অংশ। এই খেলায় আমরা শুধু আনন্দই পাই না, বরং ঐক্যের বার্তাও ছড়িয়ে যায়।”
আরেক তরুণ ভক্ত রুবেল দেবনাথ বলেন, “সিঁদুর খেলা শুধু একটি আচার নয়, এটি আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও আনন্দ ভাগাভাগি করার এক বিশেষ উপলক্ষ।”
ঢাকা/মোসলেম/মেহেদী