প্রশাসন ডেঙ্গুকে গুরুতর সমস্যা হিসেবে কখনো দেখেনি। ডেঙ্গু মোকাবিলায় তাদের আন্তরিকতার অভাবের বিষয়টি বারবার সামনে এসেছে। সর্বশেষ রোগনিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক মো. হালিমুর রশীদের বক্তব্যে বিষয়টি আরেকবার উঠে এল। ১৮ জুন রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) মিলনায়তনভর্তি মানুষের সামনে তিনি বলেন, টাকার অভাবে ডেঙ্গুমৃত্যু পর্যালোচনা (ডেথ রিভিউ) করতে পারেননি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বা তার অধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে টাকার অভাবে জনগুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ হতে পারেনি, এমন কথা এত স্পষ্ট করে এর আগে কেউ বলেননি। সিডিসির লাইন ডিরেক্টর যখন টাকার অভাবের কথা বলেছিলেন, তখন তাঁর পাশেই ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবু জাফর। তিনি হালিমুর রশীদের বক্তব্যের প্রতিবাদ করেননি। পরদিন ১৯ জুন প্রথম আলোয় ‘“টাকার অভাবে” হচ্ছে না মৃত্যু পর্যালোচনা’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

মৃত্যু পর্যালোচনা বা ডেথ রিভিউ হলো একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া, যেখানে কোনো মৃত্যুর ঘটনা বিশ্লেষণ করা হয়। এর মূল লক্ষ্য থাকে সেই মৃত্যু থেকে শিক্ষা নেওয়া এবং ভবিষ্যতে একই ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। এটি কেবল চিকিৎসা বা স্বাস্থ্যগত দিক নয়, বরং সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত কারণগুলোও বিবেচনায় নেওয়া হয়।

ডেঙ্গু নিয়ে সরকার কী করছে, অতীতে কী করেছে—দেশের মানুষ তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। এবার বেশি সমস্যায় পড়েছেন বরিশাল বিভাগের মানুষ, বিশেষ করে বরগুনার। বরগুনা জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর যেন ঢল নেমেছে। সরকার আগে ব্যবস্থা নিলে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যেত না বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।

দেশে এডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এরই মধ্যে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছেন। ২০১৯ ও ২০২৩ সালে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা দেশের মানুষ অসহায়ভাবে চেয়ে দেখেছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ডেঙ্গুতে মৃত্যু হলে সেসব মৃত্যুর পর্যালোচনার কেন দরকার? আর এই দরকারি কাজটি করতে কত টাকা লাগতে পারে?

এ দেশে মৃত্যুকেও তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয় না। দেশে মৃত্যুনিবন্ধন ঠিকভাবে হয় না। একজন মানুষ ঠিক কী কারণে মারা গেল, তা জানা কঠিন। সনদপত্রে লেখা থাকে—হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়াই মৃত্যুর কারণ। সব মৃত্যুর আগেই হৃদ্‌যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়। ডেঙ্গুতেও তা-ই হয়।

ডেঙ্গুর মৃত্যু পর্যালোচনা থেকে বেশ কয়েকটি বিষয় জানা যেতে পারে। সংক্ষেপে সেগুলো তুলে ধরা হলো।

ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রধান কারণ

ক.

শক সিনড্রোম (ডিএসএস): ডেঙ্গু মৃত্যুর সবচেয়ে বড় কারণ হলো শক সিনড্রোম। এ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ভাইরাসের কারণে রক্তনালি থেকে রক্তরস (প্লাজমা) বের হয়ে ফুসফুসসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জমা হতে থাকে। এতে রক্তচাপ মারাত্মকভাবে কমে যায়, যা শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোতে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত করে এবং শেষ পর্যন্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা বন্ধ (মাল্টি অর্গান ফেইলিওর) করে দেয়, যা রোগীর মৃত্যুর কারণ হয়। বাংলাদেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর প্রায় ৭০ শতাংশ শক সিনড্রোমের কারণে ঘটে।

খ. তীব্র রক্তক্ষরণ (সিভিয়ার ব্লিডিং): ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারের (ডিএইচএফ) একটি জটিলতা হলো রক্তনালি ফেটে গিয়ে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ। এটি মস্তিষ্ক, ফুসফুস, পরিপাকতন্ত্র বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে হতে পারে এবং মারাত্মক রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু ঘটতে পারে। প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকা কমে যাওয়ার কারণেও রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ে।

গ. তরলের ভারসাম্যহীনতা (ফ্লুইড ইমব্যালান্স): ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শরীরে তরলের ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। শরীরে অতিরিক্ত তরল চলে গেলে হার্ট ফেইলের ঝুঁকি থাকে। আবার তরলের অভাব হলে ডিহাইড্রেশন (তরলশূন্যতা) ও শক সিনড্রোম হতে পারে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণে তরল ব্যবস্থাপনা (ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট) করতে না পারলে এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

ঘ. একসঙ্গে একাধিক অঙ্গ অকার্যকর (মাল্টি অর্গান ফেইলিওর): ডেঙ্গু ভাইরাসের আক্রমণে কিডনি, লিভার, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো অকার্যকর হয়ে যেতে পারে, যা রোগীর মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করে।

দেরিতে হাসপাতালে আসা

ক. অনেক সময় রোগী ডেঙ্গুর গুরুতর লক্ষণগুলো চিনতে পারেন না বা অবহেলা করেন। ফলে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেরি হয়। ডেঙ্গুর জ্বর কমে যাওয়ার পর যে ক্রিটিক্যাল ফেজ বা জটিল অবস্থা শুরু হয়, তখন শকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে। রোগী বিষয়টি বুঝতে না পারায় হাসপাতালে আসতে দেরি করেন এবং গুরুতর অবস্থায় পৌঁছান, তখন রোগীকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পড়ে।

খ. প্রাথমিক বা উপজেলা পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শকে চলে যাওয়া রোগীদের উপযুক্ত পরিচর্যা না করে জেলা বা রাজধানীর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। গুরুত্বপূর্ণ সময় রাস্তাতেই নষ্ট হয় এবং রোগীর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়।

চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা

ক. হাসপাতালে দেরিতে চিকিৎসা শুরু হওয়া বা সঠিক চিকিৎসাপদ্ধতির অভাবও মৃত্যুর কারণ হতে পারে। বিশেষ করে ফ্লুইড ম্যানেজমেন্ট ও শক ম্যানেজমেন্টে ত্রুটি থাকলে রোগীর অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে পারে।

খ. অনেক সময় ডেঙ্গুর অন্য রকম বা অপ্রত্যাশিত (অ্যাটিপিক্যাল) লক্ষণ দেখা যায়। অর্থাৎ ডেঙ্গুর পরিচিত লক্ষণগুলো প্রকাশ না পাওয়ায় রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু হতে দেরি হয়।

গ. চিকিৎসাসেবায় প্রশিক্ষণের অভাব ও প্রটোকল মেনে না চলাও ডেঙ্গুতে মৃত্যু হওয়ার একটি কারণ হতে পারে।

ঝুঁকিপূর্ণ রোগী চিহ্নিতকরণ

ক. ডেঙ্গুমৃত্যু পর্যালোচনা থেকে জানা যায়, কোন ধরনের রোগীর মৃত্যুঝুঁকি বেশি। যেমন যাঁরা আগে ডেঙ্গুর অন্য কোনো সেরোটাইপ (ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি সেরোটাইপ বা ধরন আছে—ডেন-১, ডেন-২, ডেন-৩ ও ডেন-৪) দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁদের দ্বিতীয় বা তৃতীয়বারের সংক্রমণে জটিলতা ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি থাকে।

খ. যাঁদের দীর্ঘমেয়াদি অন্যান্য অসুস্থতা (যেমন কিডনি, হার্ট, লিভারের সমস্যা বা ক্যানসার) আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে ডেঙ্গু আরও মারাত্মক হতে পারে।

জনসচেতনতার অভাব

ডেঙ্গু সম্পর্কে ভুল ধারণা এবং প্রয়োজনীয় সচেতনতার অভাবে মানুষ সময়মতো চিকিৎসকের কাছে যান না, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে। জ্বর হলে ডেঙ্গু পরীক্ষা করিয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যে জরুরি, এ বার্তা সঠিকভাবে পৌঁছায় না।

মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কার্যকারিতা

মৃত্যু পর্যালোচনা থেকে পরোক্ষভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কার্যকারিতা সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যায়। যদি কোনো এলাকায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেশি হয়, তবে বুঝতে হবে, সেখানে মশা নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা দুর্বল।

নীতিনির্ধারণ ও গবেষণার সুযোগ

ডেঙ্গুমৃত্যু পর্যালোচনার ফলাফল নতুন নীতিমালা প্রণয়ন, বিদ্যমান নীতিমালা সংশোধন এবং ডেঙ্গু নিয়ে আরও গবেষণার পথ খুলে দেয়। এটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় আরও কার্যকর কৌশল গ্রহণে সহায়তা করে। যেমন ডেঙ্গুর কোন সেরোটাইপ বর্তমানে বেশি সক্রিয়, তা জানা গেলে প্রতিরোধের পরিকল্পনা আরও সুনির্দিষ্ট করা যায়।

ডেঙ্গুমৃত্যু পর্যালোচনা ডেঙ্গুর জটিলতা, চিকিৎসাব্যবস্থার দুর্বলতা, জনসচেতনতার অভাব ও মশা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এসব তথ্য ভবিষ্যতে ডেঙ্গুজনিত মৃত্যুহার কমানোর জন্য সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে অপরিহার্য।

আরও পড়ুনবরগুনায় ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসা চলছে মেঝেতে, নার্সদের ডেস্কের পেছনে, ওয়ার্ডের বারান্দায়১৮ জুন ২০২৫

কত টাকা দরকার ছিল

১৮ জুন আইইডিসিআর মিলনায়তনে হালিমুর রশীদ বলেছিলেন, তিনি ডেঙ্গুতে ১২৪টি মৃত্যুর সব কাগজপত্র সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু আসল কাজ, অর্থাৎ মৃত্যু পর্যালোচনা করেননি। কারণ টাকা নেই।

ডেঙ্গুতে মৃত্যু পর্যালোচনা আগেও হয়েছে। আগে করেছে আইইডিসিআর। তা নিয়ে সাংবাদিকেরা প্রতিবেদনও করেছেন। আগে যাঁরা পর্যালোচনা করেছেন, পর্যালোচনা করিয়েছেন, এমন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এই প্রতিবেদক কথা বলেছেন। তাঁরা ভিন্ন মত দিয়েছেন।

সাধারণত একটি কমিটির মাধ্যমে মৃত্যু পর্যালোচনা করা হয়। এ কমিটিতে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার বিশেষজ্ঞ রাখা হয়। যেমন মিডিসিন–বিশেষজ্ঞ, শিশুবিশেষজ্ঞ, প্রসূতিবিশেষজ্ঞ, হৃদ্‌রোগবিশেষজ্ঞ, রক্তরোগবিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ, রোগতত্ত্ববিদ ও কীটতত্ত্ববিদকে কমিটিতে রাখা হয়।

১০ জনের একটি কমিটি দিনে ১০টি মৃত্যু পর্যালোচনা করতে পারেন বলে জানা গেছে। এটি কিছুটা কমবেশিও হতে পারে। অর্থাৎ ১২৪টি মৃত্যু পর্যালোচনা করতে সর্বোচ্চ ১৩ কর্মদিবস প্রয়োজন। সরকারি নিয়মে এখন একজন কর্মকর্তাকে দৈনিক ২ হাজার ৭০০ টাকা সম্মানি দেওয়া হয়। এই হিসাবে সম্মানি বাবদ সাড়ে তিন লাখ টাকা প্রয়োজন। আনুষঙ্গিক অন্যান্য খরচের জন্য সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দরকার হতে পারে। সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ টাকায় গুরুত্বপূর্ণ এ কাজ করা সম্ভব ছিল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মৃত্যু পর্যালোচনার জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ থাকে না। এই টাকা খরচ করা হয় গবেষণা বা প্রশিক্ষণ খাত থেকে। গবেষণা খাত থেকে এই পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করা খুবই সম্ভব ছিল।

সম্ভব হয়নি মূলত সদিচ্ছার অভাবে। টাকা না থাকার কথা বলা দুর্বল অজুহাত মাত্র। স্বাস্থ্য বিভাগ বরাদ্দের শত শত কোটি টাকা প্রতিবছর ব্যবহার করতে পারে না। এ বছরও তা-ই হচ্ছে। বরাদ্দ ব্যবহারে তাদের অদক্ষতা বারবার সামনে এসেছে। ডেঙ্গুতে মৃত্যু পর্যালোচনা না হওয়া সেই অদক্ষতারই বহিঃপ্রকাশ।

আরও পড়ুনবরগুনায় সরকারি হিসাবের বাইরেও ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬ জনের মৃত্যু১৯ জুন ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন য ন য ক র যকর ব যবস থ দ র বল দরক র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় শিশু ধর্ষণের পৃথক দুটি মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর ও আলমডাঙ্গা উপজেলায় পৃথক দুটি শিশু ধর্ষণের মামলায় দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত। চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম আজ বুধবার দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

সাজা পাওয়া দুজন হলেন, আলমডাঙ্গা উপজেলার নাজমুল হক (৩৩) ও জীবননগর উপজেলার আবদুল খালেক (৫৫)। রায় ঘোষণার পর দুজনকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

ট্রাইব্যুনালের সরকার কৌঁসুলি (পিপি) এম এম শাহাজাহান মুকুল রায় বলেন, ‘দুটি মামলার সাক্ষী পর্যালোচনা করে মাননীয় আদালত আসামি দুজনকেই পৃথক পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে এক লাখ টাকা করে জরিমানার করা হয়েছে। এই রায় যথার্থ হয়েছে।’

মামলার এজাহার ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার একটি গ্রামে ২০২১ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ১৩ বছরের একটি কিশোরীকে ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেন নাজমুল হক। মেয়েটি তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। পরে তার বাবা বাদী হয়ে ওই বছরের ১৯ ডিসেম্বর আলমডাঙ্গা থানায় নাজমুল হককে আসামি করে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। আসামি নাজমুল ২০২২ সালের ৬ মার্চ আদালতে উপস্থিত হয়ে আত্মসমর্পণ করেন। পরে মেয়েটি সন্তান প্রসব করলে তার ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। ২০২২ সালের ২৬ অক্টোবর নাজমুলকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

অন্যদিকে ২০১৫ সালের ৮ জুন জীবননগর উপজেলার একটি গ্রামে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেন আবদুল খালেক। ওই ঘটনায় শিশুর বাবা বাদী হয়ে ৯ জুন জীবননগর থানায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। আবদুল খালেককে আসামি করে ওই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ