কয়েকবছর আগে গুঞ্জন উঠেছিল বলিউড অভিনেত্রী এশা গুপ্তার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেটার হার্দিক পান্ডিয়া। সে সময় একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতেও দেখা গিয়েছিল। গুঞ্জনের মধ্যেই অভিনেত্রী নাতাশা স্ট্যানকোভিচকে বিয়ে করেন হার্দিক।

হার্দিকের বিয়ের আগে এশার সঙ্গে সম্পর্কে থাকলেও কেন তারা বিয়ে করেননি তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেন অনুরাগীদের মনে। সম্প্রতি সিদ্ধার্থ কান্নানের ইউটিউব চ্যানেলে উপস্থিত হয়ে এই গুজবের জবাব দেন অভিনেত্রী। 

এশা গুপ্তা বলেন, ‘হ্যাঁ, বেশ কিছুদিন ধরেই আমদের মধ্যে কথা হয়েছিল। তখন আমাদের মধ্যে সম্পর্কের সম্ভাবনা ছিল যা বাস্তবায়িত হয়নি।’

এশা বলেন, ‘কিছুদিন আমরা কথা বলছিলাম। আমার মনে হয় না আমরা ডেটিং করছিলাম। আমাদের সম্পর্ক হয়তো হবে, হয়তো হবে না- এমন পর্যায়ে ছিলাম। ডেটিং পর্যায়ে পৌঁছানোর আগেই এটা শেষ হয়ে যায়।’

তাদের সম্পর্ক কীভাবে ভেঙেছিল সে বিষয়েও কথা বলেছেন অভিনেত্রী। এশা বলেন, ‘আমরা দ্রুতই বুঝতে পেরেছিলাম আমাদের মধ্যে তেমন মিল নেই। আর সবারই আলাদা একটা পছন্দ আছে। লাইমলাইটের চেয়ে আমি পরিবার ও বাস্তব জীবন বেশি পছন্দ করি। অবশ্যই আমি আমার কাজকে ভালোবাসি। ক্যামেরা না থাকলে এশা গুপ্তা থাকত না।’

সবশেষে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি না তিনি আমার মতো চিন্তা করতেন। তাই সম্পর্ক অগ্রসর হয়নি। এমন নয় যে তার বা আমার মধ্যে কিছু ঘাটতি ছিল। আমরা খুব আলাদা ছিলাম। এক বা দুই মাসের মধ্যে দুইজনেই বুঝতে পেরেছিলেন, আমি তার টাইপ নই। আমিও বুঝতে পেরেছিলাম তিনি আমার মত নন।’

এশাকে শেষবার ববি দেওলের সাথে ‘এক বদনাম আশ্রম পার্ট ৩’তে দেখা গিয়েছিল। তিনি ‘ওয়ান ডে: জাস্টিস ডেলিভার্ড’-এ ডিসিপি লক্ষ্মী রাঠির চরিত্রেও অভিনয় করেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ