সাম্প্রতিক অস্থিরতা কাটিয়ে বাংলাদেশে অর্থনীতিতে কিছুটা উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। উচ্চ মূল্যস্ফীতি থাকলেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল হয়েছে এবং টাকার মান কিছুটা ফিরে আসতে শুরু করেছে। এর সঙ্গে রপ্তানি খাতেও দেখা যাচ্ছে ইতিবাচক গতি। আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে। এমন পর্যবেক্ষণ দিয়েছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের গ্লোবাল রিসার্চ টিম। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বিষয়ে তাদের গ্লোবাল রিসার্চ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়। এখানে অংশ নেন সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিনিধি এবং ব্যাংকের গ্রাহকরা। 

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের সিইও নাসের এজাজ বিজয় বলেন, স্বল্পমেয়াদি বিষয়গুলো পরিবর্তনের ইঙ্গিত থাকলেও আমাদের আস্থা নিহিত দীর্ঘমেয়াদি মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর। এখনকার স্থিতিশীলতা ভবিষ্যতের টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের একটি সুযোগ সৃষ্টি করেছে। তবে এর জন্য দরকার পরিকল্পিত নীতি, চলমান বিদেশি সহায়তা এবং কাঠামোগত কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, যেগুলো বৈশ্বিক রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝেও দেশের প্রবৃদ্ধিকে টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করবে।’

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের অর্থনীতিবিদ সৌরভ আনন্দ জানান, গত বছরে গৃহীত বিভিন্ন নীতিগত পরিবর্তন অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোকে উন্নত করে বৈশ্বিক অস্থিরতার মাঝেও বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে একটি মজবুত অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। প্রবৃদ্ধির সূচকগুলো উন্নতির লক্ষণ দেখাচ্ছে। মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ডলার-টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে।

তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে, কিছু বিষয়ে দীর্ঘ মেয়াদে নজরদারি প্রয়োজন। যেমন– বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি কিছুটা কমে এসেছে এবং খেলাপি ঋণের হার এখনও বেশি। যদিও বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ এখনও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে রাজস্ব আয় কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। সামনের দিনে এসব বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা দরকার হবে। দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে হলে আয়-ব্যয়ের শৃঙ্খলা আনার সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজন নীতি সংস্কার, বিশেষ করে রাজস্ব এবং ভর্তুকি সংক্রান্ত সংস্কার। 

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিকবিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, বর্তমান বৈশ্বিক অস্থিরতায় বৈদেশিক মুদ্রা ও সুদের হার সংক্রান্ত ঝুঁকি মোকাবিলা করা অত্যন্ত জরুরি। সরকার দেশের ব্যবসা আরও সহজ করার পাশাপাশি বিদেশ থেকে বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশের টেকসই ও সর্বজনীন উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সঠিক নীতি গ্রহণের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব দ ধ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক

৭ বছরের বিরতির পর গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে (গবি) অনুষ্ঠিত হলো চতুর্থ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নির্বাচিত হয়েছেন নতুন নেতৃত্ব।

তবে পূজার ছুটি শেষ না হওয়ায় এখনও হয়নি অভিষেক ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। ফলে দায়িত্বভার নিতে পারছেন না নবনির্বাচিতরা।

আরো পড়ুন:

গকসুর জিএস, এজিএসের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে আপত্তি, পুনর্নির্বাচন দাবি

চাকসু নির্বাচন: দুই নারী প্রার্থীকে সাইবার বুলিংয়ের অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্গাপূজার পর অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচিত নেতৃবৃন্দের অভিষেক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও নির্দিষ্ট তারিখ জানানো হয়নি। এতে নির্বাচনের পর যে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, তা এখন রূপ নিয়েছে অপেক্ষার আবহে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে ২৫ সেপ্টেম্বর দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। ৭ বছরের ব্যবধান ঘুচিয়ে শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেন। ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, প্রার্থীদের প্রচারণা আর ভোটের দিন ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাসে ভরিয়ে তোলে।

ভোট শেষে বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হলেও আনুষ্ঠানিক অভিষেক না হওয়ায় এখনো কার্যক্রম শুরু করতে পারেননি তারা।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রেশমা আক্তার বলেন, “গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হলেও নির্বাচিত সদস্যরা এখনও শপথ গ্রহণ করেননি। এই বিলম্বের সুযোগে কিছু মহল নির্বাচন নিয়ে অপপ্রচার ও মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। এই গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে সফল করতে এবং অপপ্রচার রোধে নির্বাচিত সদস্যদের দ্রুত শপথ গ্রহণের ব্যবস্থা করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত অবিলম্বে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের দায়িত্ব পালন শুরু করতে পারেন।”

সদ্য নির্বাচিত সহ-সভাপতি ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান বলেন, “নির্বাচনের পরের দিনটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল এবং দুর্গাপূজার ছুটির কারণে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিল। উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন পূজার ছুটির পর যতদ্রুত সম্ভব অভিষেক ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ছুটি শেষে শপথ গ্রহণ ও অভিষেক অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা করা হবে। এখন পর্যন্ত কোনো তারিখ নির্ধারিত হয়নি।”

২০১৩ সালে প্রথমবার গকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ ২৫ সেপ্টেম্বর চতুর্থ নির্বাচনে সম্পাদকীয় ও অনুষদ প্রতিনিধি মিলিয়ে মোট ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ৫৮ জন প্রার্থী। ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৭৬১ জন।

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইন্দোনেশিয়ায় স্কুল ভবন ধস: ধ্বংসস্তুপের নিচে এখনও আটকা ৯১ জন
  • বাজেট বিল নিয়ে অচলাবস্থা, শাটডাউনের পথে যুক্তরাষ্ট্র
  • পূজার ছুটির পর গকসুর অভিষেক