বাংলাদেশে ‘হেড অ্যান্ড নেক’ অর্থাৎ ‘মাথা ও ঘাড়’ ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যা অনেক বেশি। বাংলাদেশের শিশুরা যত ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তার মধ্যে প্রায় ১০ ভাগ হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সারে আক্রান্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন ‘‘শিশুদের মধ্যে এই ক্যানসার জিনগত কারণে হয় বলে এটি প্রতিরোধের কোনো উপায় নেই। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে যা প্রতিরোধ করা যেতে পারে।’’
হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সার কী
আরো পড়ুন:
দেশের বিভিন্ন স্থানে স্বাস্থ্য সহকারীদের অবস্থান কর্মসূচি
আপনার সামনে কেউ ধীরে হাঁটলেই রাগ হয়?
মানুষের মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০টি অংশের ক্যান্সারকে বুঝিয়ে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে নাক, নাকের গহ্বর, সাইনাস, ঠোঁট, জিহ্বা, মাড়ি, গালের ভেতরের অংশ, মুখের তালু, গলা, কণ্ঠনালী, শ্বাসনালী, খাদ্যনালী, টনসিল, লালাগ্রন্থি, হেড নেকের ত্বক, ইত্যাদি।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হসপিটালের সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ‘‘পুরুষের প্রথম ১০টি ক্যানসারের মধ্যে অন্তত চারটি এই হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের সাথে সম্পৃক্ত। নারীদের প্রথম ১০টি ক্যানসারের মধ্যে তিনটি হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসারের সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ সব ক্যান্সারের মধ্যে হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।’’
হেড অ্যান্ড নেক ক্যান্সারের প্রায় ১১টি লক্ষণ দেখা যায়
১.
২. শ্বাস নিতে কষ্ট, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, শ্বাস নিতে গেলে শব্দ হওয়া, গন্ধের অনুভূতি কমে যাওয়া
৩.অবিরাম কাশি
৪. গালে, জিহ্বায় বা মুখ গহ্বরে কোথাও কোনো সাদা বা লাল ক্ষত হওয়া, যা দুই সপ্তাহ পরেও সারছে না
৫. দীর্ঘদিন সর্দি, নাক থেকে রক্তক্ষরণ
৬. গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে যাওয়া, কথা বলতে কষ্ট হওয়া
৭. মুখের কোনো অংশ যেমন চোখের ওপরে, ঘাড়ে, গলায়,নাকের চারপাশ, কানের আশপাশ বা চোয়াল ফুলে যাওয়া বা মুখের এক পাশ ফুলে যাওয়া, যা দীর্ঘদিনেও সারছে না
৮. মুখে ব্যথা, মুখ খুলতে সমস্যা, মুখে অসারতা বা মুখ ঝুলে যাওয়া
৯. কানে ব্যথা, এক কানে শুনতে সমস্যা
১০. দাঁতে ব্যথা
১১. থেমে থেমে জ্বর ও দীর্ঘদিন মাথাব্যথা
উল্লেখ্য, যেকোনো বয়সের মানুষের এই রোগ হতে পারে। সিটি স্ক্যান, এমআরআই, পিটিই, ন্যাজো অ্যান্ডোস্কোপি, সেইসাথে রক্ত ও প্রস্রাবের বিভিন্ন পরীক্ষা করার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় রোগটি নির্ণয় হলে এবং সঠিক সময় চিকিৎসা নিলে সব বয়সী রোগীর শতভাগ সেরে ওঠা সম্ভব।
সূত্র: বিবিসি
ঢাকা/লিপি
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও অনুপস্থিত বেশি
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মতো এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনামূলক বেশি। পরীক্ষার প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার মোট ১৯ হাজার ৭৫৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন। গত বছর এ পরীক্ষায় প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিলেন ১৫ হাজার ২০৩ পরীক্ষার্থী।
সারা দেশে ২ হাজার ৭৯৭টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে নিয়মিত-অনিয়মিত মিলিয়ে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ জন। এবার মোট পরীক্ষার্থী গতবারের চেয়ে ৮১ হাজারের বেশি কমেছে। তিন বছরের মধ্যে এবারই পরীক্ষার্থী সবচেয়ে কম। এ ছাড়া দুই বছর আগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করে উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তির পর রেজিস্ট্রেশন (নিবন্ধন) করেও সোয়া চার লাখের বেশি শিক্ষার্থী এবার পরীক্ষা দিচ্ছেন না।
প্রথম দিনের পরীক্ষা শেষে আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি জানিয়েছে, নয়টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত আজ এইচএসসির বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষায় অনুপস্থিত ছিলেন ১৪ হাজার ৫১৩ জন। এ ছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীন কোরআন মাজিদ বিষয়ের পরীক্ষায় ৪ হাজার ১৯৬ জন এবং কারিগরি বোর্ডের অধীন বাংলা পরীক্ষায় ১ হাজার ৫০ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।
অবশ্য কী কারণে এসব পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। এ ছাড়া অসদুপায়ের জন্য প্রথম দিন ৪৩ জন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুনএসএসসিতে অনুপস্থিতির বড় কারণ বাল্যবিবাহ ১৬ জুন ২০২৫গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়ও তুলনামূলক অনুপস্থিতি বেশি ছিল। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এই পরীক্ষার প্রথম দিনে অনুপস্থিত ছিল ২৬ হাজার ৯২৮ পরীক্ষার্থী। অথচ গত বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রথম দিন অনুপস্থিত ছিল ১৯ হাজার ৩৫৯ পরীক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষায় নিজেদের বোর্ডের অধীন পরীক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধান করেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় ৬ হাজার ৩৮৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে ১ হাজার ৩৫০ জন অনুপস্থিত পরীক্ষার্থীর তথ্য পাওয়া যায়। তথ্য পাওয়া এসব পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৪১ শতাংশের (৫৪৯) বিয়ে হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৯৭ শতাংশই ছাত্রী। ৩ শতাংশ ছেলে পরীক্ষার্থী বিয়ে করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অনুপস্থিতির প্রধান কারণ বাল্যবিবাহ। এ ছাড়া পারিবারিক অসচ্ছলতার জন্য কর্মক্ষেত্রে যোগ দেওয়া, অসুস্থতা, প্রস্তুতি ভালো না থাকাসহ নানা কারণে বাকিরা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি।
এইচএসসি পরীক্ষা দেখতে আজ রাজধানীর ভাষানটেক সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার)। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবাই সচেতন থাকলে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো সুযোগ অসাধু চক্র পাবে না। কেউ গুজব ছড়ালেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ে প্রতিবারই হুমকি থাকে, এবারও আছে। তবে এসএসসি পরীক্ষার মতো এইচএসসি পরীক্ষাতেও তাঁরা তৎপর আছেন।
আরও পড়ুনএইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা দিচ্ছেন না সোয়া ৪ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ১৭ জুন ২০২৫