ক্ষমতার দাপটের পরিণাম ভোগ করছে বিগত সরকার: বদিউল আলম মজুমদার
Published: 26th, June 2025 GMT
নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, সবচেয়ে বেশি ক্ষমতার দাপট দেখায় সরকার। সরকারের সঙ্গে যেসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠান থাকে, তারাও ক্ষমতার দাপট দেখায়। বিগত সরকারের ক্ষমতার দাপটে দেশে বিশৃঙ্খলার বিষয়ে সবাই জানেন। সেই দাপটের পরিণামই তারা ভোগ করছে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন বদিউল আলম মজুমদার। নাগরিক ঐক্যের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ক্ষমতার দাপট কমিয়ে সুষ্ঠু গণতন্ত্র ধরে রাখতে এমন একটি রাজনৈতিক দল দরকার, যাদের সব কার্যক্রমে স্বচ্ছতা থাকবে। নাগরিক ঐক্য তেমনি একটি দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
দেশে মব সৃষ্টির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যে সাবেক দুজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্রেপ্তার হয়েছেন। তবে একজন যে হেনস্তার শিকার হয়েছেন, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমি এটার নিন্দা জানাই। কেউ অপরাধী হলে অবশ্যই তিনি উপযুক্ত সাজা পাবেন।’
রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন থাকতে হয় উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নাগরিক ঐক্য এমন একটি দল হয়ে উঠবে, যারা জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করবে। ফ্যাসিবাদ পতনের পর নতুন বাংলাদেশের লড়াই আবেগের নয়, বরং বুদ্ধিবৃত্তিক হতে হবে।
‘আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারকাজকে রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্যোগে সফলতার দিকে নিয়ে যেতে চাই। এখন পর্যন্ত সংস্কার প্রশ্নে যতটা এগিয়েছি, এটা একটা বিরাট অর্জন। রাজনীতিতে নাগরিক ঐক্য একটি কল্যাণমুখী দল গড়ার চেষ্টা করছে’, বলেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে শিক্ষার্থী থেকে কৃষক—সবার জীবন বৈষম্যে পতিত হয়েছিল। নারীদের হয়রানি ও নির্যাতন ভয়াবহ ছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০ মাসেও অবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রমের সমালোচনা করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘কমিশন তথাকথিত ঐকমত্যের নামে মুক্তিযুদ্ধের ভাবধারা পরিবর্তন করতে চায়। সংস্কার করতে হলে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতি ঠিক রেখে সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, গত ১০ মাসে মব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (মার্কসবাদী) প্রধান সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন সরক র র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে মাটিতে পাকিস্তান-ভারতের পতাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার পর ভারতসহ কয়েকটি দেশের পতাকা একইভাবে সেঁটে দেওয়া হয়। এ নিয়ে দিনভর ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা দেখা যায়।
ভারত-পাকিস্তান ছাড়া আরো যেসব দেশের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্য। শিক্ষার্থীদের এসব পতাকা মাড়িয়ে প্রবেশ ও বাহির হতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী রাকিব রহমানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী প্রথমে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও ডাকসু ভবনের প্রবেশমুখে পাদদেশে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেয়।
ওই পতাকায় নো কম্প্রোমাইজ উইথ রাজাকারসহ গালিসূচক আরেকটি শব্দগুচ্ছ খচিত ছিল। তারা পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন এবং বিজয়ের মাসে ঢাবিতে কোনো পাকিস্তান প্রেম চলবে না বলে ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে সোমবার সকালে ডাকসু ভবনে প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকার পাশে ভারত ও ইসরায়েল এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে পাকিস্তানের পতাকার পাশাপাশি ভারতের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়।
তবে, কে বা কারা এসব করেছে তা জানা যায়নি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বিজয় একাত্তর হলের প্রবেশমুখে পাকিস্তান ও ভারত উভয়ের পতাকায় মাটিতে সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। বিকেলের দিকে ডাকসু ভবনের সামনে সাঁটানো পতাকার পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পতাকাও সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পতাকা সেঁটে দেওয়া নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনভর আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ঢাকা/সৌরভ/রাজীব