মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেই দেশে শান্তি লঙ্ঘিত হবে: সুলতানা কামাল
Published: 24th, November 2025 GMT
বেসরকারি সংগঠন ‘আমরাই পারি’র চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেছেন, ‘বাংলাদেশ হবে সাম্য, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদার দেশ। এর কোনো ব্যত্যয় ঘটতে পারবে না। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হলেই দেশে শান্তি লঙ্ঘিত হবে। সরকারের দায়িত্ব মানুষ যেন মাথা উঁচু করে শান্তিতে বসবাস করতে পারে, তা নিশ্চিত করা। যে সরকার সেটা করে সেই সরকার সু-সরকার আর যে সরকার করে না সে সরকারকে আমরা প্রশংসা করব না, সেই সরকারের আমরা সমালোচনা করব।’
আজ সোমবার দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘সমতল আদিবাসী সম্মেলন-২০২৫’–এ সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোট এই সম্মেলনের আয়োজন করে।
দেশের মালিক জনগণ উল্লেখ করে সম্মেলনে সুলতানা কামাল বলেন, ‘সরকার হচ্ছে সেই জনগণের সেবক। জনগণের হেফাজতের জন্য আমরা সেখানে নিযুক্ত করেছি। নির্বাচনের মাধ্যমে আমরাই সরকার নির্বাচিত করব। আর যাঁরা নির্বাচিত হতে চান, আমরা কিন্তু তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলি না—ভাই, আপনি নির্বাচিত হন। তাঁরাই আমাদের এসে বলেন—ভাই, আমাদের নির্বাচিত করেন, সেবা করার সুযোগ দেন। যেহেতু সেবা করার সুযোগটা তাঁরা চেয়ে নেন, সুতরাং নির্বাচিত হয়ে সদ্ব্যবহার করেন কি না সচেতন নাগরিক হিসেবে সেটা দেখার দায়িত্বটা আমাদেরই।’
সুলতানা কামাল বলেন, ‘প্রত্যেক মানুষই একেকজন মানবাধিকারকর্মী। আমি সামনে আছি বলেই আমার নামটা হয়ে গেছে মানবাধিকারকর্মী। কিন্তু প্রত্যেক মানুষ তার নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন, তার অধিকার রক্ষা করতে পারে এবং অন্যের অধিকার লঙ্ঘিত হলে তার জন্য প্রতিবাদ করতে পারে। এটিই মানবিক অধিকার, মানবিক দায়িত্ব ও নৈতিক দায়িত্ব।’
সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের প্রধান নির্বাহী জিন্নাত আরা হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর নুজহাত জাবিন। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক নীলা হাফিয়া, পিকেএসএসের নির্বাহী পরিচালক ডেইজি আহমেদ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের নেতা আশিক চন্দ্র বানিয়াজ, আদিবাসী কমিউনিটি সদস্য লাবনী এক্কা, মাধবী রাণী প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম নব ধ ক র আমর ই সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
সিএমএম আদালতে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের সম্মেলন কক্ষে শনিবার পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেসি কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে সিএমএম আদালত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কনফারেন্সে সাক্ষীদের হাজির করা, পুলিশ রিমান্ড ও অন্তর্বর্তী তদন্ত প্রতিবেদন, আদালত চত্বরের নিরাপত্তা বিধান, অনুসন্ধান বা তদন্তের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ, জখমি সনদ (ইনজুরি সার্টিফিকেট), ময়নাতদন্ত, মরদেহের ফরেনসিক ও ভিসেরা প্রতিবেদন, মালখানা থেকে আদালতে আলামত উপস্থাপন এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো.সাব্বির ফয়েজ। তিনি বলেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত ও দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি হচ্ছে। কিন্তু সেই সংবাদ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। অপরাধী যেই হোক না কেন, তাঁর যথোচিত বিচারও যেমন হতে হবে তেমনি বিচারের খবরটিও জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে সাব্বির ফয়েজ বলেন, মানুষ আপনাদের প্রশংসা করার জন্য মুখিয়ে আছে। তারা আপনাদের কাছ থেকে শুধু আন্তরিক ব্যবহার ও সহযোগিতা চায়। তারা চায়, আপনারা হাসি মুখে দায়িত্ব পালন করুন। মানুষ আপনার ক্ষমতা দেখতে চায় না। দায়িত্ব পালন দেখতে চায়।
ঢাকার সিএমএম মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে যাওয়ার পথে এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যার করা হয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। আদালতে আসা-যাওয়ার পথে বিচারপ্রার্থী জনগণ, বিচারক ও আইনজীবীবৃন্দ যদি নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন, তবে ন্যায়বিচার ব্যাহত হবে।
বৈষম্যবিরোধীর মামলার ব্যাপারে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির সংশোধনীর মাধ্যমে ১৭৩এ ধারাটি যুক্ত করার একটি ভালো উদ্দেশ্য রয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি, এই ধারাটির কিছু অপব্যবহার হচ্ছে। এই বিষয়ে প্রত্যেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
কনফারেন্সে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী, ঢাকা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. খোরশেদ মিয়া আলম, ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের ডিসি মিয়া মোহাম্মদ আশিস বিন হাছানসহ পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) প্রতিনিধিবৃন্দও উপস্থিত ছিলেন।