বাঁশখালীতে কৃষকদের নিয়ে ‘পার্টনার কংগ্রেস’ শীর্ষক সেমিনার
Published: 26th, June 2025 GMT
বাঁশখালীতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে কৃষকদের নিয়ে কৃষি বিভাগের এক ‘পার্টনার কংগ্রেস’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ জামশেদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত পার্টনার কংগ্রেসে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক হাবিবুন নেছা।
উপজেলা কৃষি অফিসার শ্যামল চন্দ্র সরকারের স্বাগত বক্তব্য ও পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ বিন মাহমুদ, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌসিবুল ইসলাম, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শওকতুজ্জামান প্রমুখ। সেমিনারে শতাধিক কৃষক, বিদ্যালয় প্রতিনিধি, সংবাদকর্মীসহ সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক হাবিবুন নেছা বলেন, সরকার কৃষি ও কৃষকবান্ধব। কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই কীভাবে অধিক ফলন ও লাভবান হওয়া যায় সে লক্ষ্যেই কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কাজ করছে। কৃষকদের সঙ্গে কৃষি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আজকের মুখোমুখি কর্মশালা তথা পার্টনার কংগ্রেস তারই প্রতিফলন। তিনি কৃষকদেরকে তাদের যে কোনো সমস্যায় কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিতে আহ্বান জানান।
এর আগে গত বুধবার কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ২ হাজার ২৫০ জন কৃষককে সার, বীজ ও চারা বিতরণ করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিসার জানান, সরকার কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সার, বীজ ও চারা বিতরণের মাধ্যমে সারা দেশের ন্যায় বাঁশখালীর কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প র টন র ক গ র স কর মকর ত ক ষকদ র উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা