হঠাৎ নিষেধাজ্ঞার কবলে হাজার হাজার ফেসবুক গ্রুপ, কী বলছে মেটা
Published: 26th, June 2025 GMT
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার ফেসবুক গ্রুপ কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। অসংখ্য ফেসবুকে গ্রুপের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গ্রুপের প্রশাসক ও সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ফেসবুক গ্রুপের প্রশাসকদের অভিযোগ, ‘নগ্নতা’ বা ‘সন্ত্রাসবাদ–সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট’ প্রচারের অভিযোগে তাদের গ্রুপগুলোর কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মেটা জানিয়েছে, কারিগরি ত্রুটির কারণে ফেসবুক গ্রুপগুলো নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছে। সমস্যা সমাধানে কাজ চলছে।
ফেসবুকের নতুন কারিগরি ত্রুটির কারণে পোষা প্রাণীর যত্ন, মা–বাবার সহায়তা, কেনাকাটায় ছাড়ের তথ্য, গেমিং, পোকেমন, মেকানিক্যাল কি–বোর্ড বা ইন্টেরিয়র ডিজাইনবিষয়ক গ্রুপগুলো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বিষয়ে মেটার যোগাযোগ বিভাগের মুখপাত্র অ্যান্ডি স্টোন বলেন, ‘আমরা একটি কারিগরি ত্রুটির কথা জানতে পেরেছি, যা কিছু ফেসবুক গ্রুপকে প্রভাবিত করেছে। আমরা এখন এই সমস্যা সমাধানে কাজ করছি।’ তবে এই ত্রুটির কারণে কোন কোন গ্রুপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বা এটি ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় মডারেশন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কি না, সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘রেডিট’-এ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া ফেসবুক গ্রুপের একাধিক প্রশাসক জানিয়েছেন, তাদের পরিচালিত গ্রুপগুলোকে একযোগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, আপত্তিকর কোনো কনটেন্ট না থাকা সত্ত্বেও তাদের গ্রুপে ‘সন্ত্রাসবাদ বা বিপজ্জনক সংগঠনের প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। কেউ আবার দাবি করেছেন, তারা ‘মেটা ভেরিফায়েড’ সাবস্ক্রিপশন কেনার কারণে প্রায়োরিটি গ্রাহক সহায়তা পেয়েছেন এবং তাদের কিছু গ্রুপ পুনরায় সচল হয়েছে।
হঠাৎ করে একযোগে হাজার হাজার ফেসবুক গ্রুপ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ায় বর্তমানে অনেকেই ব্যবসা ও অনলাইন কার্যক্রম পরিচালনায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন। আর তাই অনেকেই অনলাইন পিটিশনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এরই মধ্যে ১২ হাজারের বেশি স্বাক্ষর পড়েছে ওই পিটিশনে।
সূত্র: টেক ক্রাঞ্চ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ ধ জ ঞ র কবল ফ সব ক গ র প
এছাড়াও পড়ুন:
টাঙ্গাইলের কলেজে কুমিল্লার বাসিন্দাকে সভাপতি করায় সমালোচনা
টাঙ্গাইল শহরের মেজর জেনারেল মাহমুদুল হাসান আদর্শ কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মনোনীত করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের জামাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে। নজরুল ইসলামের পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লায়। এ নিয়ে টাঙ্গাইলের রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্থানীয়দের মাঝে সমালোচনা হচ্ছে। এক জেলার বাসিন্দা আরেক জেলা শহরের কলেজের সভাপতি কীভাবে হয়, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
গভর্নিং বডি গঠনের জন্য অভিভাবক প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, হিতৈষী সদস্য, দাতা সদস্য ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে গত ৩০ এপ্রিল তফসিল ঘোষণা করা হয়। ৩০ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হয়। ৬ মে থেকে ৭ মে পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা নেয়া হয়। ৮ মে মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। ১২ মে মনোনয়ন আপত্তি ও নিষ্পত্তি করা হয়। ১৩ মে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা হয়। ১৪ মে চুড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ও প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়। ১৮ মে কলেজ প্রাঙ্গনে ভোটারদের ভোট গ্রহণ করা হয়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকার গত ২৩ জুন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ নজরুল ইসলামকে সভাপতি ও মো. শফিকুল ইসলামকে বিদ্যোৎসাহী সদস্য মনোনীত করে কলেজের অধ্যক্ষ বরাবর চিঠি পাঠান।
আরো পড়ুন:
লক্ষ্মীপুরে কলেজছাত্রীর ১ মাসেরও খোঁজ মেলেনি
জাল প্রবেশপত্র: সিলেটে ছাত্রীর ১ বছর কারাদণ্ড
জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব এম এ বাতেন বলেন, ‘‘যেহেতু কলেজটি টাঙ্গাইলের। সেই ক্ষেত্রে টাঙ্গাইলের কেউ যদি সভাপতি মনোনীত হতেন, তাহলে কলেজ, কলেজের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারতেন।’’
জেলা বিএনপির সভাপতি ও কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি প্রার্থী হাসানুজ্জামীল শাহীন বলেন, ‘‘মাহমুদুল হাসান কলেজটি টাঙ্গাইলের সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান। যাকে মনোনীত করা হয়েছে, তার বাড়ি টাঙ্গাইলে না। তার শ্বশুর বাড়ি টাঙ্গাইলে। তার শ্বশুর আব্দুর রাজ্জাক ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তিনি ভুল বুঝিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সভাপতি হয়েছেন। এটার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। টাঙ্গাইল একটি বড় জেলা। সেই জেলা যদি ফ্যাসিস্ট সরকারের অনুসারীরা সভাপতি হয়, তাহলে বিষয়টি নিন্দনীয়।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘নজরুল ইসলামকে সভাপতি বাতিল করে টাঙ্গাইলের বাসিন্দা যিনি কলেজ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে পারবেন, এমন ব্যক্তিদের সভাপতি করার আহ্বান জানাই। তিনি কলেজে আসলে টাঙ্গাইলের মানুষ এর প্রতিবাদ জানাবে।’’
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আল আমিন বলেন, ‘‘আওয়ামী পরিবারের সদস্য নজরুল ইসলামকে মাহমুদুল হাসান কলেজের সভাপতি মনোনীত করার আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। ফ্যাসিস্টদের কোনো জায়গায় স্থান হবে না। প্রয়োজনে তাকে টাঙ্গাইলে প্রতিরোধ করা হবে।’’
জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন জেলা শাখার সভাপতি ফাতেমা রহমান বীথি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে আমি নিন্দা জানাই। টাঙ্গাইল সৎ, যোগ্য ও কলেজ এবং শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করবেন এমন ব্যক্তিদের মনোনীত করার দাবি করছি।’’
মাহদুল হাসান কলেজের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘অধ্যাপক নজরুল ইসলামকে আমরা চিনতাম না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিপূর্বে দুই বার এডহক কমিটির সভাপতি মনোনীত করেছিল। এবার তিনি সভাপতি হলেও আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম প্রস্তাবনায় পাঠাইনি। আমরা সভাপতি পদে তিন জন ও বিদ্যোৎসাহী সদস্য পদে তিন জনের নাম পাঠিয়েছিলাম।’’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক আব্দুল হাই সিদ্দিক সরকারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/কাওছার/বকুল