বর্ষায় ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে? কী করবেন
Published: 26th, June 2025 GMT
বর্ষার আর্দ্র পরিবেশ নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে ত্বকে। বিশেষ করে যাঁদের ত্বক এমনিতেই তেলতেলে, সমস্যাটা তাঁদেরই বেশি। এ সময় অনেকেরই মুখে দেখা দেয় অতিরিক্ত তেল, যা শুধু দেখতে খারাপ লাগে, তা-ই নয়, ব্রণ বা র্যাশের ঝুঁকিও বাড়ায়। কিছু সহজ নিয়ম মেনে চললে অবশ্য এ সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
১. দিনে দুই থেকে তিনবার মুখ ধুয়ে নিনত্বকে ধুলাবালু ও অতিরিক্ত তেল জমে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। দিনে অন্তত দুবার ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। যাঁদের ত্বক খুব তেলতেলে, তাঁরা জেলভিত্তিক ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত ধোয়ার দরকার নেই, এতে ত্বক আরও বেশি তেল উৎপাদন করতে পারে।
২.টোনার ব্যবহার করুন
মুখ ধোয়ার পর ত্বকের ছিদ্রগুলো সংকুচিত করতে অ্যালকোহলমুক্ত হালকা টোনার ব্যবহার করুন। এটি ত্বকে থাকা অবশিষ্ট তেল ও ময়লা দূর করতে সাহায্য করে।
আরও পড়ুনমেকআপ ছাড়াই সুন্দর দেখানোর ৮ উপায়০১ আগস্ট ২০২৪৩. ময়েশ্চারাইজার বাদ দেবেন নাঅনেকেই ভাবেন, ত্বক তেলতেলে হলে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর দরকার নেই। এটি ভুল ধারণা। তেলতেলে ত্বকের জন্য হালকা, ওয়াটার-বেজড ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন। এতে ত্বক আর্দ্র থাকবে, কিন্তু অতিরিক্ত তেল জমবে না।
৪. সানস্ক্রিন মাখতে ভুলবেন নাবর্ষার দিন মানেই যে সূর্যের ক্ষতি নেই, তা নয়। বাইরে বের হলে অবশ্যই অয়েল-ফ্রি সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
আরও পড়ুনত্বকের এই সমস্যাগুলো যে কারণে হয়০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪৫. মেকআপ কমানবর্ষায় ভারী মেকআপ করলে তা ঘামে গলে গিয়ে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। হালকা মেকআপ ব্যবহার করুন এবং মেকআপ করার আগে ভালো করে প্রাইমার লাগান।
৬. খাবারে নজর দিনভাজাপোড়া, অতিরিক্ত তেল-ঝাল খাবার বর্ষায় এড়ানোই ভালো। পর্যাপ্ত পানি এবং বেশি করে ফলমূল ও শাকসবজি খান।
শেষ কথাত্বকের যত্ন শুধু বাইরের পরিচর্যায় সীমাবদ্ধ নয়। শরীরের ভেতরের যত্ন, খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত পরিচর্যাই রাখতে পারে ত্বককে সুস্থ ও পরিষ্কার—এমনকি বর্ষার আর্দ্র দিনগুলোতেও।
আরও পড়ুনত্বকের বয়স কমাতে পাঁচ অভ্যাস১৫ অক্টোবর ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর ন ত বক র ম কআপ
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা