বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ১৫০ নেতাকর্মীর এনসিপিতে যোগদান
Published: 27th, June 2025 GMT
যশোরে গণঅভ্যুত্থান পক্ষের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে আসা ১৫০ নেতাকর্মী জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দিয়েছে। শুক্রবার বিকালে প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে দলীয় ফরম পূরণ করে তারা যোগদান করেন। এ সময় যোগদানকারীদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানান দলটির কেন্দ্রীয় ও যশোরের নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের কেন্দ্রীয় সংগঠক সাকিব শাহরিয়ার বলেন, ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে কোনো দেশের গোলামি করার জন্য নয়। এ দেশে আর যেন কোনো ফ্যাসিস্ট তৈরি না হয়, আর কেউ যেন একনায়কতন্ত্র কায়েম করতে না পারে, জুলুম-নির্যাতন, সন্ত্রাস-চাঁদাবাজি করতে না পারে, সেজন্য তারা ছাত্র-জনতাকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রতিহত করবেন। এনসিপি বাংলাদেশে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত গড়ে তুলতে চায়। রাজনৈতিক সচেতনতা, ন্যায়বিচার ও সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এনসিপির পথচলা অব্যাহত থাকবে। নতুন সদস্যদের যুক্ত হওয়ায় যশোর জেলার সাংগঠনিক ভিত্তি আরও মজবুত হবে বলে নেতৃবৃন্দ আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এ সময় আরও বক্তৃতা করেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ইয়াহিয়া জিসান, যশোর জেলার প্রধান সংগঠক নুরুজ্জামান, জেলা সংগঠক বোরহান উদ্দিন, জেলা দপ্তর সম্পাদক সাজিদ সরোয়ার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা জানান, ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে সদস্য সংগ্রহ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাবে এনসিপি যশোর জেলা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প যশ র র জন ত ক এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি
জুলাই ঘোষণাপত্রকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক প্রহসন উল্লেখ করে ঘোষণাপত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছেন গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ৬০ ছাত্রনেতা। তারা শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণকে অংশীদার করে নতুন ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানান ছাত্র নেতারা। এতে বলা হয়, হাজারো শহীদ এবং আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার কর্তৃত্ব চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চব্বিশের জুলাই ঊনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসনকে মেনে নেয়নি। আবার নব্বইয়ের মতো কেবল ব্যক্তি স্বৈরাচারীর অপসারণকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেনি বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙক্ষার মধ্য দিয়ে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে জাগ্রত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের আকাঙক্ষা অনুসারে নতুন কল্যাণমূলক, গণবান্ধব রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব পালনে অগ্রসর ভূমিকায় হাজির হয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যাদের ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
ছাত্রনেতারা বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগস্ট পুরোনো শোষণমূলক আমলাতন্ত্র, লুটেরা শক্তি ও পুরোনো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের সমর্থনে একটি প্রতারণামূলক ও অর্থহীন ডকুমেন্টকে জুলাই ঘোষণাপত্র নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা, জুলাই ঘোষণা ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানায়। পাশাপাশি শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন ও প্রকৃত ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন গণবান্ধব সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানায়।
এসব দাবি বাস্তবায়নে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা তথা পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, নারীসমাজ, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবীসহ ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হাজারো শহীদ ও আহত গাজী ভাই-বোনদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাদের অপরিসীম সাহস ও দেশপ্রেমকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে আমরা সত্যিকার গণবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম যেকোনো মূল্যে চলমান রাখবো।’
বিবৃতিতে সই করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরিফ সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ সালেহীন, মো. ওয়াহিদ উজ জামান, হামজা মাহবুব, মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবলী সাদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল তানভীর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাকিব হোসাইন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজিফা জান্নাত, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল, ঢাকা কলেজের মো. রাকিব, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদ বিন রনি, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম নীরব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণা রিয়া, স্টেট ইউনিভার্সিটির মিশু আলী সুহাস, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সিনথিয়া জাহিন, বিএল কলেজের (খুলনা) সাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।