জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীজন রিকশাওয়ালা ভাইয়েরা: আসিফ মাহমুদ
Published: 28th, June 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীজন আমাদের রিকশাওয়ালা ভাইয়েরা। ই-রিকশা লাইসেন্সিং (অনুমোদন দেয়া) সিস্টেমে নিয়ে আসলে আর কেউ তাদেরকে অবৈধ বলতে পারবে না এবং হয়রানিমূলক শাস্তি প্রদান করতে পারবে না। তারা যথাযথ নাগরিক মর্যাদা নিয়ে চলতে পারবে।
আজ শনিবার নগর ভবন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের অডিটোরিয়ামে (গুলশান-২) ‘তিন চাকার স্বল্প গতির ব্যাটারিচালিত রিকশা (ই-রিকশা) প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এ সব কথা বলেন। খবর বাসসের
এ সময় উপদেষ্টা বলেন, ই-রিকশা চালকের লাইসেন্স এবং গাড়ির লাইসেন্স হবে অনলাইনে যাতে করে দুর্নীতির সুযোগ না থাকে। শুরুতে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-১ এ নির্দিষ্ট সংখ্যক ই-রিকশা চলবে।
এছাড়া রিকশা এপস্, ওয়েবসাইট এবং রিকশায় কিউআর (ছজ) কোড থাকবে যেনো সহজে ট্রাফিক পুলিশ রিকশা সংক্রান্ত যেকোনো জটিলতায় তথ্য পেতে পারে বলে উল্লেখ করেন আসিফ মাহমুদ।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ৫ আগস্টের পরে যখন রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশ ছিলো না, তখন শিক্ষার্থীরা দেশপ্রেমের চেতনায় বিনা পারিশ্রমিকে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালন করেছে। পুলিশ এবং যুব অধিদপ্তরের পাশাপাশি মাস্টার ট্রেইনার প্রশিক্ষণে তাই শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ঈদে সড়ক সংক্রান্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে, সড়ক দুর্ঘটনার প্রায় ৩২ শতাংশ অটোরিকশার জন্য হয়েছে। অনেক জটিলতা এবং সময় স্বল্পতা সত্ত্বেও সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় আমরা এই কার্যক্রম শুরু করছি।’
কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে নগর ভবনের নিচতলায় সজ্জিত নতুন ডিজাইনের ব্যাটারিচালিত রিকশার গ্যারেজ পরিদর্শন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো.
এছাড়া এতে স্থানীয় সরকার বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই গণঅভ য ত থ ন স থ ন য় সরক র উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া ৬০ ছাত্রনেতার বিবৃতি
জুলাই ঘোষণাপত্রকে জনগণের সঙ্গে প্রতারণামূলক প্রহসন উল্লেখ করে ঘোষণাপত্রটি প্রত্যাখ্যান করেছেন গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ৬০ ছাত্রনেতা। তারা শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জনগণকে অংশীদার করে নতুন ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন।
রোববার রাতে এক যৌথ বিবৃতিতে এসব দাবি জানান ছাত্র নেতারা। এতে বলা হয়, হাজারো শহীদ এবং আহত ভাইবোনের রক্তাক্ত আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে সংঘটিত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশকে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ এবং শেখ হাসিনার স্বৈরাচার থেকে মুক্ত করেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে জনগণ বিদ্যমান শোষণ-নিপীড়নমূলক পুলিশ, আদালত, আইন-সংবিধান তথা পুরোনো ব্যবস্থার কর্তৃত্ব চূড়ান্তভাবে অস্বীকার করে নিজেদের ভাগ্য নির্ধারণের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, চব্বিশের জুলাই ঊনসত্তরের গণ–অভ্যুত্থানের মতো সামরিক শাসনকে মেনে নেয়নি। আবার নব্বইয়ের মতো কেবল ব্যক্তি স্বৈরাচারীর অপসারণকেই মূল লক্ষ্য হিসেবে নির্ধারণ করেনি বরং রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙক্ষার মধ্য দিয়ে গণবান্ধব রাষ্ট্র গঠনের বৈপ্লবিক চেতনাকে জাগ্রত করেছে। স্বাভাবিকভাবেই জনগণের আকাঙক্ষা অনুসারে নতুন কল্যাণমূলক, গণবান্ধব রাষ্ট্র তৈরির দায়িত্ব পালনে অগ্রসর ভূমিকায় হাজির হয়ে গণ–অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতারা যাদের ডাকে বিশ্বাস স্থাপন করে জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
ছাত্রনেতারা বিবৃতিতে বলেন, গত ৫ আগস্ট পুরোনো শোষণমূলক আমলাতন্ত্র, লুটেরা শক্তি ও পুরোনো দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের সমর্থনে একটি প্রতারণামূলক ও অর্থহীন ডকুমেন্টকে জুলাই ঘোষণাপত্র নামে চালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন অবস্থায় গণ–অভ্যুত্থানে সরাসরি নেতৃত্ব দেওয়া ছাত্রনেতারা, জুলাই ঘোষণা ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যান করে নতুন করে ঘোষণাপত্র প্রণয়নের দাবি জানায়। পাশাপাশি শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম গণপরিষদ নির্বাচন আয়োজন ও প্রকৃত ঘোষণাপত্রের সঙ্গে সংগতি রেখে নতুন গণবান্ধব সংবিধান প্রণয়নের দাবি জানায়।
এসব দাবি বাস্তবায়নে গণঅভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দানকারী সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা তথা পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, নারীসমাজ, কৃষক-শ্রমিক, পেশাজীবীসহ ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাইকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা বিশ্বাস করি, হাজারো শহীদ ও আহত গাজী ভাই-বোনদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে পারে না। তাদের অপরিসীম সাহস ও দেশপ্রেমকে অনুপ্রেরণা হিসেবে নিয়ে আমরা সত্যিকার গণবান্ধব ও জনকল্যাণমূলক বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রাম যেকোনো মূল্যে চলমান রাখবো।’
বিবৃতিতে সই করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরিফ সোহেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবদুল্লাহ সালেহীন, মো. ওয়াহিদ উজ জামান, হামজা মাহবুব, মো. সাইফুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল আহমেদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবলী সাদী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহুরুল তানভীর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাকিব হোসাইন, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজিফা জান্নাত, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মো. রাসেল, ঢাকা কলেজের মো. রাকিব, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদ বিন রনি, শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম নীরব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণা রিয়া, স্টেট ইউনিভার্সিটির মিশু আলী সুহাস, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের সিনথিয়া জাহিন, বিএল কলেজের (খুলনা) সাজিদুল ইসলাম প্রমুখ।