গ্লোবাল সুপার লিগের (জিএসএল) জন্য সাকিব আল হাসানকে দলে নিতে চেয়েছিল রংপুর রাইডার্স। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারকে দলে নেয়নি টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

২০ জুন স্কোয়াড ঘোষণা করেছে রংপুর রাইডার্স। আগামী ১০ থেকে ১৮ জুলাই গায়ানা প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে হবে জিএসএলের দ্বিতীয় আসর। গত বছর প্রথম আসরের শিরোপা জেতা রংপুরকে এবারও নেতৃত্ব দিচ্ছেন উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান নুরুল হাসান।

সাকিব ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তিনি এখনো দেশে ফেরেননি। এমনকি গত বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিদায়ী টেস্ট খেলতে চাইলেও পারেননি।

জিএসএল নিয়ে আজ সংবাদ সম্মেলনে রংপুর রাইডার্সের টিম ডিরেক্টর শানিয়ান তানিম সাকিবকে দলে না নেওয়ার প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর ভাষ্য, ‘সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের কেন, বিশ্বের যেকোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অন্যতম মূল্যবান ক্রিকেটার হতে পারে। আমরা তাকে দলে নিতে চাইনি—এমন নয়। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। এই পরিস্থিতির কারণে আমরা নিতে পারিনি।’

সাকিবকে না নেওয়ার বিষয়ে কোনো মহল থেকে নির্দেশনা ছিল কি না, এ প্রশ্নে শানিয়ান তানিম বলেন, ‘সাকিবকে নেওয়া যাবে কি না, এ বিষয়ে কেউ কোনো ইনস্ট্রাকশন দেয়নি। সিদ্ধান্তটি সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্টের। এখন দেশের যা পরিস্থিতি, তাতে আমরা জানি না সাকিবকে নেওয়ার পর কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। সাকিবও পরিস্থিতি সম্পর্কে জানে।’

রংপুর অধিনায়ক নুরুল সাকিবের প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘আমি শুধু ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকেই চিনি। সব সময় চাইব ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করতে। তাঁর সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করা আমার জন্য গর্বের। সাকিব যে দলেই থাকুক না কেন, (সেই দল) অনেক লাভবান হবে। সেটা বাংলাদেশ অনেক বছর ধরেই হয়ে এসেছে। ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানকে অবহেলা করার সুযোগ নেই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ক ব আল হ স ন পর স থ ত স ক বক

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্র-জনতার ব্যানারে আন্দোলন চলবে, সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা বিএম কলেজ শিক্ষার্থীদের

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সারা দেশের স্বাস্থ্য খাত সংস্কারের আন্দোলন এক মাসের জন্য স্থগিত ঘোষণা করেছেন বরিশাল ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার রাতে কলেজ ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে নগরের নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এসে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। তবে ছাত্র-জনতার ব্যানারে আরেক পক্ষ আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

স্বাস্থ্য খাতে সংস্কার, সরকারি হাসপাতালে দুর্নীতি-অনিয়ম, হয়রানি বন্ধসহ তিন দফা দাবিতে বরিশালে ছাত্র-জনতার ব্যানারে বেশ কিছু দিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাঁরা গত শুক্রবার থেকে এই দাবিতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দালন অব্যাহত রেখেছেন। এই ছয় দিনে তাঁরা সাড়ে ২৯ ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করায় সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন লাখো যাত্রী।

এ পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু জাফর বরিশালে আসেন। তিনি দুপুর ১২টার দিকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সম্মেলনকক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, চিকিৎসক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও হাপতাাল এবং কলেজ কর্তৃপক্ষকে নিয়ে আলোচনা সভায় যোগ দেন। বেলা সোয়া তিনটা পর্যন্ত এই সভা চলে। আলোচনায় মহাপরিচালক শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং মেডিকেল কলেজের পরিচালক কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন বলে জানান। অন্য দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়।

গতকাল রাতে নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমাবেশে বিএম কলেজের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বরিশাল জেলার সাবেক আহ্বায়ক সাব্বির হোসেন বলেন, ‘আমরা আশা করছি আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করা হবে এবং মেডিকেলের সকল সিন্ডিকেট ও দালালদের নির্মূল করা হবে। যদি তা না হয়, আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

এদিকে ব্লকেড কর্মসূচি অব্যাহত রেখে ও গণ–অনশনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন একটি পক্ষ। ছাত্র-জনতার ব্যানারে ওই আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনি। তিনি বলেন, ‘দাবিদাওয়া নিয়ে যে আলোচনা হয়েছে, তাতে আমাদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরিশালে এসেছেন। কিন্তু আমাদের যে দাবি, যে সমস্যা, তা সমাধানের জন্য যথেষ্ট সক্ষমতা (ক্যাপাসিটি) তাঁর নেই। এই সমস্যার সমাধান করতে হলে স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে বরিশালে আসতে হবে।’ এ সময় তিনি চলমান বরিশাল ব্লকেড কর্মসূচির পাশাপাশি নতুন করে গণ–অনশনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

আরও পড়ুনষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, ভুক্তভোগী যাত্রী-চালকদের ক্ষোভ১৬ ঘণ্টা আগে

আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজসহ দেশের সব সরকারি হাসপাতালে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ দেশের সব হাসপাতালে দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি, দলীয় লেজুড়বৃত্তিক চিকিৎসকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, ডিজিটাল অটোমেশন ও স্বচ্ছ জবাবদিহিমূলক টাস্কফোর্স গঠন; স্বাস্থ্য খাত সংস্কার কমিশনকে জনগণের ভোগান্তির বিষয় শুনে তদন্ত সাপেক্ষে আবার সুপারিশ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে জোরদার পদক্ষেপ নেওয়া।

আরও পড়ুনজনদুর্ভোগে বাড়ছে ক্ষোভ, মহাপরিচালকের আশ্বাসেও দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা১২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ