ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি: ধর্ম উপদেষ্টা
Published: 29th, June 2025 GMT
মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি। ইমাম-মুয়াজ্জিনদের স্বাবলম্বী করতে তাদের মাঝে ট্রাস্টের ৩৮ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
রবিবার (২৯ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় হিফজুল কোরআন ও সিরাত প্রতিযোগিতা এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের জাতীয় সম্মেলন ২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, “ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠার (২০০১) পর থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৬৩ হাজার ১৯৭ জন ইমাম ও মুয়াজ্জিনের মাঝে সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ ও অনুদান হিসেবে ৩৭ কোটি ৯২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ কোটি টাকা উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং ২০ কোটি ৯১ লাখ টাকা অফেরতযোগ্য এককালীন অনুদান দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ সালে বিতরণ করা হয়েছে ৪ কোটি ১১ লাখ টাকা।
আরো পড়ুন:
৭১ ও ২০০৯ এর পর রাষ্ট্রের মালিকানা একটি গোষ্ঠীর হয়ে যায়: ইবি উপাচার্য
Notice: Undefined variable: rsContent in /var/www/risingbd.
com/details.php on line 707
Notice: Trying to access array offset on value of type null in /var/www/risingbd.com/details.php on line 707
ইসলামী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনে ইসলামপন্থিরাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসবে: রেজাউল করীম
ইমামরা সমাজে অত্যন্ত সম্মানিত ব্যক্তি মন্তব্য করে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, “নৈতিকতা ও আদর্শিক মূল্যবোধের বিকাশে তাদের অবদান বিশাল। জনগণের সাথে তাদের সংযোগ সরাসরি। তারা সামাজিক শক্তির প্রতিভূ, তাদের সংগঠিত করা গেলে সমাজ পরিবর্তনের ধারাকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।”
“ইসলামের অপব্যাখ্যাকে রুখে দেওয়া, সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা এবং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রতিষ্ঠার এখন গুরুত্বপূর্ণ সময়। আমরা চাই এক শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ-যেখানে মসজিদ হবে জ্ঞানের কেন্দ্র, ইমাম হবেন নেতৃত্বের দিশারি।”
প্রতি বছর প্রতিযোগীরা আন্তর্জাতিক হিফজ ও ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় যে সাফল্য অর্জন করছে, তা গোটা জাতির জন্য গর্বের বিষয় উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “এটি প্রমাণ করে-আমাদের সন্তানদের মাঝে কোরআনের আলো জ্বলছে। এখন দরকার এই আলোর ব্যবস্থাপনা-আর সেই কাজেই ইমামদের প্রশিক্ষণ, উৎসাহ ও অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ।”
সম্মেলনে হিফজুল কোরআন ও সীরাত প্রতিযোগিতার জাতীয় পর্যায়ের বিজয়ী ৩ গ্রুপের ৯ জন করে প্রতিযোগী এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ইমামদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩ জন শ্রেষ্ঠ ইমাম, বিভাগীয় পর্যায়ে ২৪ জন, জেলা পর্যায়ে ১৯২ জন ইমাম এবং ৬৪ জন শ্রেষ্ঠ খামারী ইমামকে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার ২ লক্ষ টাকা, দ্বিতীয় ১.৫ লাখ, তৃতীয় ১ লাখ টাকা এবং সীরাত প্রতিযোগিতার প্রথম পুরস্কার ৫০ হাজার, দ্বিতীয় ৪৫ হাজার এবং তৃতীয় ৪০ হাজার টাকার চেক প্রদান করা হয়।
এছাড়া শ্রেষ্ঠ ইমাম ও খামারী ইমামদের ক্ষেত্রেও যথা নিয়মে নগদ অর্থ, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্ম সচিব একেএম আফতাব হোসেন প্রামাণিক।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) আব্দুস ছালাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্নর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, ড.খলিলুর রহমান মাদানী, ওলামায়ে কেরাম, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম অন ষ ঠ ন পর য য় ক রআন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষকদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য, ছাত্রদল নেতার চারিত্রিক সনদ বাতিল
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন মন্তব্য করায় ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করেছে উর্দু বিভাগ।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগের একাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়াও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে একাডেমিক কমিটি।
আরো পড়ুন:
ইউজিসির অর্থায়নে গবেষণা করবেন ইবির ১৪১ শিক্ষক-শিক্ষার্থী
নজরুল কলেজে বিসিএস অ্যাডুকেশন অ্যাসোসিয়েশনের ৮ দাবিতে মানববন্ধন
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা হলেন বুলবুল রহমান। তিনি উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বর্তমান ছাত্রদলের রাবি শাখার সহ-সভাপতি।
ভুক্তভোগী দুই শিক্ষক হলেন, উর্দু বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম ও একই বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নাসির উদ্দিন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই দুই শিক্ষককে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান লেখেন, “বিভাগের দুই কুলাঙ্গার শিক্ষক ভিসি নকিবের অনুগত কুকুর বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিনের বেহাল অবস্থা। এই দুই কুকুর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্ক করে খাতায় কম নম্বার দিত যার প্রমাণ স্বয়ং আমি। তাদের হায়া লজ্জা ঘৃণা বলে কি কিছুই নেই?”
বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি সূত্রে জানা যায়, উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও (বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল ৩.৫০ পেতে হবে কিন্তু তার অনার্সে প্রাপ্ত সিজিপিএ ৩.৩৫) আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করায় বাছাইয়ে তার আবেদনপত্র বাতিল হয়ে যায়। এজন্য তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বিভাগীয় সভাপতিসহ পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা, অসদাচরণ এবং বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।
এদিকে, উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন উপাচার্যের বাসভবনের মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রদলের এ নেতা। এতে উর্দু বিভাগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তিনি একটি বৃহৎ ছাত্রসংগঠনের পদে থাকায় তার ফেসবুক পোস্ট ও হুমকির কারণে উর্দু বিভাগের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ফলে বিভাগীয় একাডেমিক কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়, বিভিন্ন ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তে বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদপত্র ও সকল প্রত্যয়নপত্র বাতিল এবং ভবিষ্যতে বিভাগ থেকে তাকে কোনো প্রকার প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হবে না। উর্দু বিভাগে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষণা এবং ভবিষ্যতে তিনি বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
এছাড়া শৃঙ্খলাবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় পোস্ট করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানায় কমিটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, “চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তো আর হবে না। আমাকে এ বিষয়ে কেউ ডাকেনি এবং কেউ জানতেও চায়নি। তবে আমি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছি, তারা আমাকে নম্বর কম দিয়েছেন। এছাড়াও অ্যাকাডেমিক মিটিংয়ে সব শিক্ষক উপস্থিতও ছিলেন না।”
তবে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষকদের নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য তা কোনোভাবেই কাম্য না। অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদের কুকুরের সঙ্গে তুলনা করেছেন, যা শুধু আমাদের জন্য নয়, বরং সব শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর। আমরা প্রশাসন থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী