রাজশাহীর আওয়ামী লীগ নেতার নামে দুদকের মামলা
Published: 29th, June 2025 GMT
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে স্ত্রী, পুত্রসহ রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বালু ব্যবসায়ী আজিজুল আলম ওরফে বেন্টুর (৫৩) নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ রোববার সকালে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি করা হয়। মামলার বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রধান আসামি আজিজুল আলম আওয়ামী লীগ সরকারের আমল থেকে একচেটিয়াভাবে বালু ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। প্রভাব খাটিয়ে অল্প টাকায় বালুমহাল ইজারা নেওয়ার অভিযোগ আছে তাঁর বিরুদ্ধে। বালুমহাল থেকেই তিনি বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন। বৈধ আয়ের উৎস না থাকলেও বিপুল সম্পদের মালিক তাঁর গৃহিণী স্ত্রী নাসিমা আলম (৪৮) ও বেকার ছেলে রুহিত আমিন (২৯)। দুদকের মামলায় তাঁদেরও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, আজিজুল পরিবারের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু হয় আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই। আজিজুল, তাঁর স্ত্রী নাসিমা আলম ও ছেলে রুহিত আমিনের নামে দুদক ৩৬টি দলিলমূলে ৯ একরের বেশি জমি পেয়েছে। অনুসন্ধানে তাঁদের মোট ১৮ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৮ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়। অথচ সম্পদ বিবরণীতে তথ্য গোপন করে দুদককে ৭ কোটি ৬৪ লাখ ২৬ হাজার ৯৪৫ টাকার সম্পদের বিবরণ দেন তাঁরা। আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ১০ কোটি ৪৬ লাখ ৪৪ হাজার ৬৮১ টাকা।
অনুসন্ধানকালে দুদক দেখেছে, আজিজুল আলমের স্ত্রী নাসিমা আলম একজন গৃহিণী হলেও তাঁর নামে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, নাসিমার নামে মোট সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ৫৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৬৭ টাকার। অনুসন্ধানকালে নাসিমা আলমের আয়ের বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। স্বামীর অর্জিত সম্পদ নিজের আয়কর ফাইলে দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ছেলে রুহিত আমিনের পেশা ছাত্র হলেও তাঁর নামেও আয়কর নথি খোলা হয়েছে। ২০২৩-২৪ করবর্ষে দাখিলকৃত আয়কর নথি অনুযায়ী, রুহিতের নামে মোট সম্পদ ৭৮ লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯ টাকার। অনুসন্ধানকালে তাঁরও আয়ের বৈধ কোনো উৎস পাওয়া যায়নি। বাবার অর্জিত সম্পদ আয়কর ফাইলে নিজের দেখিয়ে আয়কর নথি খোলা হয়েছে। এ ছাড়া আয়কর নথিতে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুল আলম তাঁর স্ত্রী ও পুত্রকে গাড়ি কেনার জন্য ৬৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা দিয়েছেন।
দুদক বলছে, নাসিমা আলম তাঁর স্বামী আজিজুল আলমের অর্জিত জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। একইভাবে ছেলে রুহিত আমিনও তাঁর বাবা আজিজুল আলমের অর্জিত অবৈধ সম্পদ বৈধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ নামে আয়কর নথি খুলে সম্পদ অর্জন দেখিয়েছেন। এসব অবৈধ সম্পদ নিজেদের নামে রেখে ও ভোগদখল করে আজিজুল আলমের স্ত্রী ও ছেলেও অপরাধ করেছেন। তাই মামলায় তাঁদেরও আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী দুদকের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন জানান, মামলাটি দায়ের করার পর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতে নথি পাঠানো হয়েছে। তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আজ জ ল আলম র র হ ত আম ন র অর জ ত আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় যে ৫টি ভুল করা যাবে না
প্রথমবার আয়কর রিটার্ন দেওয়ার সময়ে একটু সাবধান হতে হবে। অনেকেই প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় সঠিকভাবে দেন না এবং কৌশলী হন না। এ জন্য পরে বিপাকে পড়েন তাঁরা।
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময়ে অনেকে ভুল করেন। তাঁদের অনেকের কাছেই অজানা যে প্রথম আয়কর রিটার্নে ঠিক কী কী দেখাতে হয়? প্রথমবার ভুল আয়কর রিটার্ন জমা দিয়ে বড় জরিমানার শিকার হন অনেক করদাতা।
মনে রাখবেন, এ বছর আপনি ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত আয়–ব্যয়ের বিবরণী দেবেন।
এবার দেখা যাক, প্রথম রিটার্ন দেওয়ার সময় যে পাঁচটি ভুল করা যাবে না।
১. নগদ টাকা
আপনার হাতে যত নগদ টাকা থাকুক না কেন, এর পুরোটাই দেখিয়ে দেবেন। অনেকে মনে করেন, নগদ টাকা বেশি দেখালে ঝামেলায় পড়তে পারেন। কিন্তু এই ভাবনা ঠিক নয়। আপনার আয় যদি বৈধ হয়, তাহলে দেখালে কোনো ভয় নেই। আয়কর ফরমে ‘ক্যাশ ইন হ্যান্ড’ ঘরে নগদ টাকা দেখিয়ে দেবেন।
২. সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস, শেয়ার
এত দিন আপনার কর শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ছিল না কিংবা রিটার্নও দেননি। কিন্তু কয়েক বছর ধরে আপনি সঞ্চয়পত্র, ডিপিএস, স্থায়ী আমানত (এফডিআর), শেয়ার ইত্যাদিতে বিনিয়োগ করেছেন। এবার প্রথম রিটার্ন দিতে যাচ্ছেন, তাহলে রিটার্নে অবশ্য এসব সম্পদ দেখাবেন। এগুলো রিটার্ন ফরমে আর্থিক পণ্য খাতে দেখাতে হবে।
৩. জমি–ফ্ল্যাট
আপনার নিজের নামে যদি জমি, ফ্ল্যাটসহ স্থাবর সম্পত্তি থাকে, তাহলে এনবিআরকে জানিয়ে দেবেন। এমনকি উত্তরাধিকার সূত্রে কিংবা উপহার বা দান সূত্রে পেলেও তা রিটার্নে উল্লেখ করে দেবেন। এখানে মনে রাখা দরকার, যদি আপনার সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ টাকার বেশি হয়, তাহলে রিটার্নে আলাদাভাবে সম্পদের বিবরণী দিতে হবে। সম্পদের বিবরণী দেওয়ার জন্য আইটি ১০বি ফরম ব্যবহার করতে হবে।
৪. গাড়ি
আপনার নামে কোনো গাড়ি, মোটরবাইক অথবা এ ধরনের সম্পদ থাকে, তাহলে তা অবশ্যই আয়কর নথিতে দেখাতে হবে। কারণ, গাড়ির জন্য প্রতিবছর আপনি অগ্রিম আয়কর দেন, যা বছর শেষে রিটার্ন জমা দিয়ে যখন কর দেবেন, তখন তা সমন্বয় করতে পারবেন। গাড়ি দেখিয়ে দেওয়া লাভও বটে।
৫. স্বর্ণালংকার
প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় নারী–পুরুষ করদাতা নির্বিশেষে স্বর্ণালংকারসহ দামি গয়না দেখিয়ে দেবেন। এমনকি উপহার পেলেও তা দেখাবেন। অনেক নারী করদাতার সোনার গয়নার পাশাপাশি ডায়মন্ডসহ দামি পাথরের গয়না থাকে। প্রথমবার রিটার্ন দেওয়ার সময় এসব দামি গয়না দেখাতে ভুলে যাবেন না।
মনে রাখতে হবেআপনি প্রথমবার আয়কর রিটার্নে নগদ টাকার পাশাপাশি যত সম্পদ দেখাবেন, এসব সম্পদ অর্জনের ব্যাখ্যা যেন থাকে। আয়ের উৎসের ব্যাখ্যাও দিতে হবে। এসব সম্পদের সপক্ষে যথাযথ প্রমাণ সংরক্ষণ করবেন।