কুমিল্লার মুরাদনগরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে এক নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও তাঁর ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে মধ্যযুগীয় বর্বরতা আখ্যা দিয়ে দ্রুত দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সনাতন সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রী ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতা–কর্মীরা।

আজ রোববার বিকেল পাঁচটায় চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এ দাবি জানান। কুমিল্লার মুরাদনগরে নারী ধর্ষণ ও খিলক্ষেতে দুর্গামন্দির ভাঙচুরসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু সনাতন সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের একজন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ছাত্র ঐক্য পরিষদের মহানগরের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, কুমিল্লার ঘটনার প্রতিবাদে সর্বস্তরের ছাত্রছাত্রীরা এ কর্মসূচির ডাক দেন। এখানে কারও একক ব্যানার নেই। তবে সমাবেশে বাংলাদেশ হিন্দু ছাত্র পরিষদ ও বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের ব্যানার দেখা গেছে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সীমান্ত দত্ত, অভিজিৎ দেব, মিনু রানী দেবী, জনি দত্ত, রুবেল দে প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এ দেশের হিন্দুরা প্রাণ দিয়েছেন। সম্ভ্রম হারিয়েছেন সনাতনী নারীরাও। কিন্তু এখনো যেন সেই স্বাধীনতা ভোগ করতে পারছেন না।

বক্তারা আরও বলেন, প্রতিবার সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ দেশে হিন্দুধর্মাবলম্বী মানুষজন নির্যাতনের শিকার হন। এখনো হামলা–নির্যাতন চলছে।

আরও পড়ুনমুরাদনগরে দরজা ভেঙে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ৫১১ ঘণ্টা আগে

বক্তারা আরও বলেন, ‘মুরাদনগরের ঘটনায় আমরা স্তম্ভিত। এর আগে ঢাকায় মন্দির ভাঙচুর করা হয়। লালমনিরহাটে কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে বাবা–ছেলেকে মারধর করে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা এসব ঘটনার বিচার চাই।’

সমাবেশে ‘আমি কে তুমি কে, সনাতনী সনাতনী,’ ‘প্রশাসন তুমি কার, ধর্ষক না ধর্ষিতার,’ ‘আমার মন্দির ভাঙল কেন, প্রশাসন জবাব চাই,’ বলে ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয়। পরে এ সমাবেশ থেকে মিছিল বের করা হয়।

আরও পড়ুনমুরাদনগরে দরজা ভেঙে এক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা১৯ ঘণ্টা আগে

প্রসঙ্গত, কুমিল্লার মুরাদনগরের একটি গ্রামে বসতঘরের দরজা ভেঙে এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গত শুক্রবার দুপুরে মুরাদনগর থানায় মামলা করেছেন ওই নারী। ওই নারী বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে স্বামীর বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বেড়াতে আসেন তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ফজর আলী (৩৮) নামের এক ব্যক্তি তাঁর বাবার বাড়ি গিয়ে ঘরের দরজা খুলতে বলেন। এ সময় তিনি দরজা খুলতে অস্বীকৃতি জানান। একপর্যায়ে ওই ব্যক্তি ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

এ ঘটনায় আজ সকালে অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান জানান। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীকে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকার সায়েদাবাদ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে ওই নারীকে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে। তাঁরা হলেন মো.

সুমন, রমজান আলী, মো. আরিফ ও মো. অনিক। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বাড়ি মুরাদনগর উপজেলায়।

আরও পড়ুনওই নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত ও অনলাইন থেকে ভিডিও-ছবি সরানোর নির্দেশ২ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ম র দনগর ওই ন র বক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মুরাদনগরে তিন শিশুকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

প্রতীকী ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ