৪৫তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (বিপিএসসি)। মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা) শুরু হবে আগামী ৮ জুলাই।
বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রতিযোগিতামূলক এবং মর্যাদাপূর্ণ পরীক্ষাগুলোর একটি। লিখিত পরীক্ষার বৈতরণী পার হওয়ার পর প্রার্থীদের জন্য অপেক্ষা করে চূড়ান্ত ধাপ– ভাইভা বা মৌখিক পরীক্ষা। এটি কেবল আপনার জ্ঞান যাচাইয়ের পরীক্ষা নয়, বরং আপনার ব্যক্তিত্ব, মানসিক দৃঢ়তা, উপস্থিত বুদ্ধি এবং যোগাযোগ দক্ষতারও পরীক্ষা। অনেক প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফল করেও ভাইভায় আশানুরূপ ফল করতে না পারায় চূড়ান্ত তালিকা থেকে ছিটকে পড়েন। তাই ভাইভার গুরুত্ব অপরিসীম।
শুরুতেই যা জানা জরুরি
ভাইভার প্রস্তুতি শুরু করার আগে আপনাকে কিছু মৌলিক বিষয় জেনে নিতে হবে:
নিজেকে জানুন: আপনার নিজের সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা অত্যন্ত জরুরি। আপনার নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, নিজ জেলা, পরিবার– সবকিছু সম্পর্কে নির্ভুল তথ্য এবং সেগুলোর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক সাধারণ জ্ঞান জেনে রাখুন।
সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক বিষয়াবলি : বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা দরকার। বিশেষ করে সংবিধান, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, ভূ-রাজনীতি, পরিবেশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক– এসব বিষয়ে আপনার স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। নিয়মিত সংবাদপত্র পড়ুন এবং দেশ-বিদেশের খবর সম্পর্কে খোঁজখবর রাখুন।
নিজ ক্যাডার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় :
আপনি যে ক্যাডারগুলো পছন্দের তালিকায় রেখেছেন, সেগুলোর কাজ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সরকারের অন্যান্য দপ্তরের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন। কেন আপনি এই ক্যাডারটি পছন্দ করেন, তা যুক্তি সহকারে ব্যাখ্যা করার প্রস্তুতি রাখুন।
প্রস্তুতি কৌশল: ধাপে ধাপে সফলতা
ভাইভা প্রস্তুতির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট কৌশল অনুসরণ করা বুদ্ধিমানের কাজ।
বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতি :
নিজ জেলা: আপনার জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য, বিখ্যাত ব্যক্তি, সমস্যা ও সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখুন। আপনার জেলার নামকরণের ইতিহাস বা কোনো বিশেষ স্থান সম্পর্কে প্রশ্ন হতে পারে।
শিক্ষাগত বিষয়: আপনার স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের বিষয়বস্তু সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা রাখুন। আপনার পঠিত বিষয়ের সঙ্গে বিসিএস ক্যাডারের কাজের কী সম্পর্ক, তা বোঝানোর ক্ষমতা থাকতে হবে।
মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, সংবিধানের মূলনীতি, গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ এবং সংশোধনীগুলো সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। এটি ভাইভার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি: দৈনন্দিন জীবনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার, গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার, পরিবেশ দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন – এসব বিষয়ে মৌলিক ধারণা থাকা উচিত।
নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন: এই বিষয়গুলো বিসিএস সিলেবাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলোর সংজ্ঞা, গুরুত্ব এবং বাস্তবায়নে আপনার ভূমিকা সম্পর্কে প্রশ্ন হতে পারে।
মৌখিক অনুশীলন (মক ভাইভা)
একা একা প্রস্তুতি নেওয়ার চেয়ে গ্রুপ স্টাডি বা মক ভাইভা দেওয়া অনেক বেশি কার্যকর। অভিজ্ঞ বিসিএস ক্যাডার বা শিক্ষক দ্বারা পরিচালিত মক ভাইভাগুলোতে অংশ নিন। এতে আপনার দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত হবে এবং আপনি সেগুলো শুধরে নেওয়ার সুযোগ পাবেন।
নেতিবাচকতা পরিহার: কোনো প্রশ্নের উত্তর জানা না থাকলে অযথা আন্দাজে কিছু বলবেন না। বিনীতভাবে বলুন যে আপনার জানা নেই। মিথ্যা তথ্য দেওয়া বা তর্ক করা থেকে বিরত থাকুন।
ইতিবাচক মনোভাব: চাপের মুখে শান্ত থাকা অত্যন্ত জরুরি। বোর্ড সদস্যরা আপনার মানসিক চাপ মোকাবিলার ক্ষমতাও যাচাই করবেন।
যোগাযোগ দক্ষতা : স্পষ্ট ভাষায়, গুছিয়ে এবং আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলুন। আঞ্চলিকতা পরিহার করে প্রমিত বাংলায় কথা বলার অভ্যাস করুন। অপ্রয়োজনীয় দীর্ঘ বাক্য বা শব্দ ব্যবহার না করে সরাসরি মূল বিষয়ে আসুন।
শেষ মুহূর্তের টিপস
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে নিন।
মানসিক চাপ কমাতে পরীক্ষার আগে পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
হাসিখুশি ও ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ভাইভা বোর্ডে প্রবেশ করুন।
বিসিএস ভাইভা আপনার স্বপ্ন পূরণের শেষ ধাপ। সুচিন্তিত প্রস্তুতি, আত্মবিশ্বাস এবং ইতিবাচক মনোভাব আপনাকে এই ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করতে সাহায্য করবে। v
[লেখক- ৩৬তম বিসিএস (কৃষি) ক্যাডার]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব স এস প রস ত ত আপন র জ ব স এস পর ক ষ
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্দান্ত লড়াই করা ফ্লামেঙ্গোকে হারিয়ে শেষ আটে বায়ার্ন
ক্লাব বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চার ক্লাবের মধ্যে সেরা ফুটবল খেলছিল ফ্লামেঙ্গো। রোববার রাতে তাদের ৪-২ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বায়ার্ন মিউনিখ।
হার্ড রক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে শুরুতেই ২-০ গোলের লিড নেয় ফ্লামেঙ্গো। ৬ মিনিটে আত্মঘাতী গোল খায় ব্রাজিলের ক্লাবটি। ৯ মিনিটে দূর থেকে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন হ্যারি কেইন।
৩৩ মিনিটে এক গোল শোধ করে ফেলিপে লুইজের দল। জেরসন দারুণ এক গোল করেন। কিন্তু গোরেস্কারের ৪১ মিনিটের গোলে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে বাভারিয়ানরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে গোল করে পুনরায় ম্যাচে ফেরে ফ্লামেঙ্গো। ৫৫ মিনিটে ইতালিয়ান মিডফিল্ডার জর্জিনহো পেনাল্টি থেকে ব্যবধান ৩-২ করেন।
ফ্লামেঙ্গো কামব্যাকের স্বপ্ন দেখলেও তা হতে দেননি বায়ার্নের ইংলিশ স্ট্রাইকার হ্যারি কেইন। তার ৭৩ মিনিটের গোলে বড় জয়ই নিশ্চিত হয় জার্মান জায়ান্টদের। ম্যাচে আক্রমণ, গোলে শট ও বলের দখলে এগিয়ে ছিল ফ্লামেঙ্গো। কিন্তু ম্যাচ শেষে পরাজিত দল তারা।