Samakal:
2025-11-17@12:32:20 GMT

বাদল দিনের বন্দনা

Published: 30th, June 2025 GMT

বাদল দিনের বন্দনা

‘এমন দিনে তারে বলা যায়/এমন ঘনঘোর বরিষায়।/এমন দিনে মন খোলা যায়–/এমন মেঘস্বরে বাদল-ঝরোঝরে/তপনহীন ঘন তমসায়।।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান, কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। সাংগঠনিক আলোচনার ফাঁকে চলে বর্ষাবন্দনা।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৬ জুন মার্কেটিং বিভাগের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠিত আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

তাজাম্মুল হক। সুহৃদদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সমকাল সুহৃদ সমাবেশ জবি নতুন কমিটির সবাইকে অভিনন্দন। সুহৃদরা ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক সৃজনশীলতা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ভালো কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করবেন এবং তাদের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কাজ আরও বেশি বেগবান করবেন– এটিই আমরা প্রত্যাশা করি।’ তিনি আরও বলেন, ‘সমকাল বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি যে সামাজিক ও মানবিক কাজ করে যাচ্ছে এটি জরুরি। আমরা সব সময় ভালো কাজ ও উদ্যোগের সঙ্গে আছি।’
অনুষ্ঠানে বর্ষার গান, আবৃত্তি ও বাঁশির সুরে মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা ছিল সুহৃদদের। জবি সুহৃদ সভাপতি রাকিবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সাফা খাতুনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুক্ত হন সুহৃদ বিভাগীয় সম্পাদক আসাদুজ্জামান, জবি সমকাল প্রতিনিধি ও সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ইমরান হুসাইন, কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য শাহীন আলম শাওনসহ অর্ধশত সুহৃদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আত্মোন্নয়ন এবং সৃজনশীলতার জন্য সামাজিক সংগঠনে সক্রিয় যুক্ততা জরুরি। সাংগঠনিক চর্চার মাধ্যমে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক কাজ আমাদের নিজেকে আবিষ্কার করতে সহায়তা করে। মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে উদ্বুদ্ধ করে।’ 
সুহৃদ সভাপতি রাকিব বলেন, ‘আমরা সমকাল সুহৃদ জবি পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ ও ভালোবাসার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগত মানোন্নয়ন করতে চাই।’ v
সুহৃদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ