নতুন দলের আবেদন যাচাইয়ে সাত সদস্যের কমিটি ইসির
Published: 1st, July 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলগুলোর করা আবেদন যাচাইয়ে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সোমবার ইসির জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেন।
কমিটির সদস্যরা হলেন- নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হাসান ভূঞা, বাজেট ও ফাইন্যান্স শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো.
আদেশে বলা হয়েছে, নতুন রাজনৈতিক দল থেকে প্রাপ্ত আবেদনগুলো আইন বিধি মোতাবেক সুচারুরূপে সন্নিবেশ ও যাচাই-বাছাইয়ের আগে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম নেওয়ার জন্য ছয় কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অফিস আদেশে তাদের কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, ওই কর্মকর্তারা নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য প্রাপ্ত আবেদনগুলো যাচাইয়ের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইকারী কর্মকর্তাদের পাঠানো চেক লিস্ট বা প্রশ্নমালা অনুযায়ী যাচাই-বাছাইয়ের আগে প্রয়োজনীয় তথ্য সন্নিবেশনসহ প্রতিবেদন তৈরি করবেন এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন (সফট কপি ও হার্ড কপিসহ) নির্বাচন সহায়তা শাখার উপ-সচিবকে দেবেন।
এর আগে ইসির গণবিজ্ঞপ্তি জারির পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধন পেতে ১৪৪টি দল আবেদন করে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলের ইসির নিবন্ধন পেতে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর অফিস, অন্তত ১০০টি উপজেলা বা মেট্রোপলিটন (মহানগর) থানায় কার্যালয় এবং প্রতিটি কার্যালয়ে ন্যূনতম ২০০ ভোটার তালিকাভুক্ত থাকতে হবে। এর বাইরে নিবন্ধনের জন্য দলের গঠনতন্ত্রে সুনির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে বিধান রয়েছে। যেমন- কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব কমিটির সদস্য নির্বাচিত করা, সব পর্যায়ের কমিটিতে অন্তত ৩৩ শতাংশ সদস্যপদ নারীদের জন্য নির্ধারিত রাখা এবং পর্যায়ক্রমে ২০৩০ সালের মধ্যে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা শ্রমিক ও অন্য কোনো পেশার সদস্যদের সমন্বয়ে অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন না থাকা ইত্যাদি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র সহক র র জন য ন র জন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তিন প্রতিষ্ঠান
দেশের বাইরে ২১ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশের তিন প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেবা ও বিপণনের ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতেই তারা দেশের বাইরে মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে কোম্পানি গঠন করবে। কোম্পানিগুলোকে রপ্তানিকারকের সংরক্ষিত কোটা (ইআরকিউ) হিসাব থেকে বিনিয়োগ করতে হবে। সম্প্রতি গভর্নরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ নিয়ে বাংলাদেশি ২৫ প্রতিষ্ঠান বিদেশে ৩৫টি কোম্পানি গঠনে বিনিয়োগের অনুমতি পেল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশে কোম্পানি খোলার অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোম্পানি খুলবে, যার নাম হবে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউএই লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইআরকিউ থেকে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ নেবে। করিম টেক্সটাইল নামের একটি কোম্পানি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে করিম রিসোর্সেস ইউএই গঠন করবে। এ ছাড়া সফটওয়্যার খাতের কোম্পানি ব্রেইন স্টেশন-২৩ লিমিটেড বিদেশে তিনটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি দেশে তারা বিনিয়োগ করবে ২ লাখ ডলার করে। মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসে কোম্পানি গঠন করবে।
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন প্রয়োজনে ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে ২০১৩ সাল থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা ছিল না। তবে ২০২১ সালে বিদেশে মূলধন বিনিয়োগ-সংক্রান্ত একটি বিধিমালা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিধিমালার আওতায় শুধু রপ্তানি আয় আছে, এমন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারে। অবশ্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে বাইরে বিনিয়োগের নজির রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়ন প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশ থেকে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে।
সম্প্রতি প্রকাশিত আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ পাঁচ বছরে বৈধভাবে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আর ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশি কোম্পানির বিদেশে বিনিয়োগ স্থিতি কমে ৩২ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমেছে, আগের বছর শেষে যা ৩৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ছিল।
আরও যত বিনিয়োগ
গত মার্চে বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্টের নেপালি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। একাধিক দেশে বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশি সাতটি কোম্পানির। নতুনভাবে অনুমোদন পাওয়াদের মধ্যে স্কয়ার ফার্মা আগ থেকেই কেনিয়া ও ফিলিপাইনে বিনিয়োগ নিয়েছে। বেক্সিমকো ফার্মার সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও এস্তোনিয়ায় কোম্পানি খুলেছে। ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি রেনেটা লিমিটেডের যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে বিনিয়োগ রয়েছে।
সামিট গ্রুপের সামিট পাওয়ারের ভারতে, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ও সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিংয়ের সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে। স্টিল খাতের কোম্পানি বিএসআরএম কেনিয়া ও হংকংয়ে কোম্পানি খুলেছে। আকিজ শিপিংয়ের সিঙ্গাপুর ও আকিজ হোল্ডিংয়ের মালয়েশিয়ায় কোম্পানি খোলার অনুমোদন রয়েছে। এ ছাড়া মবিল যমুনা সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমারে বিনিয়োগ নিয়েছিল। তবে মিয়ানমার থেকে বেশ আগেই তারা বিনিয়োগ গুটিয়ে এনেছে।
ডিবিএল গ্রুপ এস্তোনিয়ায়, এআইআইএম গ্লোবাল সংযুক্ত আরব আমিরাতে, এসিআই হেল্থ যুক্তরাষ্ট্রে, টেকআউট লিমিটেড শ্রীলঙ্কায়, এমবিএম গার্মেন্টস সিঙ্গাপুরে, প্রাণ ফুড ভারতে, এজে সুপার গার্মেন্টস সৌদি আরবে, কলম্বিয়া গার্মেন্টস হংকংয়ে, সাইফ পাওয়ারটেক সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং টাইগার আইটি নেপালে বিনিয়োগ নেওয়ার অনুমোদন পেয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতে এসব দেশে বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।