তিন দিনে হাজারের বেশি রোগী ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে
Published: 3rd, July 2025 GMT
দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে টানা তিন দিন দেশে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।
বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে আরও ৩৫৮ জন ভর্তি হয়েছেন। এতে জুলাইয়ের প্রথম তিন দিনে ভর্তি রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
গত বুধবার ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন ৪১৬ জন। এটি ছিল চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চ রোগী ভর্তির রেকর্ড। তিন দিনে সব মিলিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ১৬০ জন। চলতি বছর ১১ হাজার ৪৫৬ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ব্যক্তি বরিশালের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ভর্তি নতুন রোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরিশাল বিভাগে– ১৫০ জন। এছাড়া ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় ৭৮ জন, ঢাকা বিভাগে ৪৫ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচজন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩২ জন, খুলনা বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৯ জন এবং সিলেট বিভাগে দুজন ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ৩২৯ জন। তাদের মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৩৫১ জন, ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি ৯৭৮ জন।
১৯ হাজার কম্বো কিট দিলো চীন
ডেঙ্গু মোকাবিলায় চীন সরকার ১৯ হাজার কম্বো কিট দিয়েছে। আরও কার্যকরভাবে ডেঙ্গু শনাক্তে সক্ষম এসব কিটে একসঙ্গে এনএস-১, আইজিজি ও আইজিএম পরীক্ষা করা যাবে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে এ কিট হস্তান্তর করা হয়। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা.
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স ও ডায়াগনস্টিক কিটসহ সব ধরনের সহযোগিতা অতি দ্রুত পাঠানো হবে। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভেক্টর প্রোগ্রাম। এ শনাক্তকরণ প্রোগ্রাম ব্যর্থ হলে বা মৌসুম পরিবর্তনের কারণে হাসপাতালে রোগী বেড়ে যায়। এজন্য যে উৎসগুলোর কারণে এ পরিস্থিতি হচ্ছে, সেখানে নজর দিতে হবে। যার যার দায়িত্ব সে পালন করলে শুধুমাত্র চিকিৎসা নিয়ে উদ্বেগ পোহাতে হবে না। তবে ডেঙ্গু এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিশেষ সহকারী বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জাসহ চারটি ভাইরাসের উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। যার কারণে অনেকে সাধারণ রোগ ভেবে বাসায় থাকছেন। দেরিতে হাসপাতালে আসা আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থাকে জটিল করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, বিগত সময়ে স্বাস্থ্যখাত কখনো অগ্রাধিকারে ছিল না, কখনোই পাঁচে স্থান পায়নি। অন্তর্বর্তী সরকার স্বাস্থ্যকে সব জায়গায় গুরুত্ব দিচ্ছে।
দেশে ২০২৪ সালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ১ লাখ ১ হাজার ২১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। মৃত্যু হয় ৫৭৫ জনের। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর এ সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। মৃতের সংখ্যায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০২৩ সালে এ রোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি ৩ লাখ ২১ হাজার ১৭৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। মারা যান সবচেয়ে বেশি ১ হাজার ৭০৫ জন। ২০২২ সালে ১ লাখ ১ হাজার ৩৫৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কংগ্রেসে ট্রাম্পের আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ দেশটির কংগ্রেসে চূড়ান্ত বাধা পেরিয়েছে। কংগ্রেসের রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার অল্প ব্যবধানে কর হ্রাস ও সরকারি ব্যয়ের বিশাল এই প্যাকেজ পাস হয়।
প্রতিনিধি পরিষদে ২১৮-২১৪ ভোটের ব্যবধানে বিলটি পাস হয়েছে। পরে এতে সই করেন স্পিকার মাইক জনসন। আলোচিত এই বিলটি কংগ্রেসে পাস হওয়া প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বিলটি নিয়ে ট্রাম্পের নিজ দলেও প্রবল বিরোধিতা ছিল। শেষ পর্যন্ত বিলটি পাস হওয়ায় রিপাবলিকান পার্টির জ্যেষ্ঠ সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এখন তিনি সই করলেই বিলটি আইনে পরিণত হবে।
এর আগে মঙ্গলবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে বিলটি বিলটি কোনোরকম উতরে যায়। সিনেটে বিলটি ৫১-৫০ ভোটে পাস হয়। বিলের পক্ষে-বিপক্ষে সমান ভোট পড়ায় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স ‘টাই’ ভেঙে বিলের পক্ষে ভোট দেন। বিলটির বিপক্ষে ভোট দেওয়া ডেমোক্র্যাটদের ৪৭ সদস্যের সঙ্গে ৩ জন রিপাবলিকানও যোগ দেন।
এই বিলে কর কমানো, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমানো, সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে খরচ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
বিলটি ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদকালে দেওয়া কর ছাড়েরই সম্প্রসারিত রূপ। পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে খরচও বাড়ানো হবে।
এই বিলে কম আয়ের মার্কিন নাগরিকদের জন্য মেডিকেইড নামের স্বাস্থ্য কর্মসূচি ও খাদ্যসহায়তা কর্মসূচির খরচ থেকে প্রায় ৯৩ হাজার কোটি ডলার কাটাছাঁটের কথা বলা হয়েছে। এতে লাখ লাখ আমেরিকান স্বাস্থ্য বিমার বাইরে চলে যাবেন।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে মাত্র এক ভোটের ব্যবধানে পাস হলো ট্রাম্পের আলোচিত ব্যয় বিল ০২ জুলাই ২০২৫