ভারতের সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ এখন খুনিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সীমান্তে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে বিএসএফ। হত্যা বন্ধ করতে হলে আমাদের এই বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র নবম দিন বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে এক পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।

এ সময় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেন আর কোনো এক-এগারো না হয়– সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তার আগে সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’

পথসভায় বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.

তাসনিম জারা, যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজা, মাহিন সরকার প্রমুখ।

আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি জানান, উপজেলার আলতায়েবা মোড়ে দুপুরে পথসভায় আখতার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে চাই, যা সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা গণহত্যা করেছে, তাদের বিচার হবেই। শেখ হাসিনা সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন– এমন তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে একদিন ইতিহাসের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার হাটবোয়ালিয়া এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে এনসিপি নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় সারজিস আলম পথসভা থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের ভালোবাসায় আমরা গর্বিত। তবে পড়াশোনাই এখন তোমাদের প্রধান দায়িত্ব। ক্লাস ফেলে পথে আসা কাম্য নয়।’

পরে চুয়াডাঙ্গা সদরের বড়বাজার এলাকায় আরেকটি সভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা দামুড়হুদা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত এক কৃষকের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানান।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প ট য় হত য ব এসএফ এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না বিএসএফের পুশ ইন করা ভারতীয় নাগরিক

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশ ইন) ছয় ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন পিছিয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয় আদালত) আশরাফুল ইসলাম এ আদেশ দেন।

অভিযোগ গঠনের দিন পেছানোয় ছয় ভারতীয় নাগরিক এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না। এর আগে এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। এতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওই ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ধিতোরা গ্রামের দানিশ শেখ (২৮), তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), তাঁদের ৮ বছর বয়সী ছেলে এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তাঁর ১৬ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে। তাঁদের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ভারতীয় নাগরিকেরা দিল্লিতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। দিল্লি পুলিশ তাঁদের আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক হলে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, আদালত আগামী ৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জনই ভারতীয় নাগরিক। এ–সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তাঁরা বিএসএফের মাধ্যমে পুশ ইনের শিকার।

গ্রেপ্তার ছয়জনের মামলার তদারক করতে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের নাগরিক মফিজল শেখ। গতকাল চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দিল্লি পুলিশ জঘন্য একটি কাজ করেছে। শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। বিচারপতি রায় দিয়েছেন, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফেরাতে হবে। শুক্রবার চার সপ্তাহ শেষ হচ্ছে। এরপরও কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।

মফিজল শেখ বলেন, ‘তারা অসহায়-গরিব মানুষ। আমরা চাই তারা দেশে ফিরে যাক। ছয়জনের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। বাংলাদেশের কোর্টের কাছে আমরা আবেদন করেছি যে তাঁদের বিচার যেন দ্রুত শুরু করা হয়। বাংলাদেশের আইনকে সম্মান জানিয়েই আমরা তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পুশ ইনের পর ওই ছয় ভারতীয় নাগরিক ঢাকায় গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের দেশে ফেরার আকুতি ছিল। কিন্তু বৈধ কোনো কাগজপত্র (পাসপোর্ট-ভিসা) না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিকেএসএফে নিয়োগ, শুরুতে বেতন দুই লাখ
  • এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না বিএসএফের পুশ ইন করা ভারতীয় নাগরিক
  • পাথারিয়ার বনে কেন পুরুষ হাতি ছাড়তে চায় বন বিভাগ