সীমান্ত হত্যা বন্ধে দাঁড়াতে হবে বিএসএফের বিরুদ্ধে: নাহিদ ইসলাম
Published: 10th, July 2025 GMT
ভারতের সীমান্ত বাহিনী বিএসএফ এখন খুনিতে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ২০০০ সালের পর থেকে বাংলাদেশের সীমান্তে অসংখ্য মানুষ হত্যা করেছে বিএসএফ। হত্যা বন্ধ করতে হলে আমাদের এই বাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে।
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র নবম দিন বুধবার সন্ধ্যায় ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে এক পথসভায় এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।
এ সময় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেন আর কোনো এক-এগারো না হয়– সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে। আমরা অবশ্যই একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। তার আগে সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
পথসভায় বক্তব্য দেন এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.
আলমডাঙ্গা (চুয়াডাঙ্গা) প্রতিনিধি জানান, উপজেলার আলতায়েবা মোড়ে দুপুরে পথসভায় আখতার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার ছাড়া নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। আমরা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে চাই, যা সব ধর্ম ও শ্রেণির মানুষের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা গণহত্যা করেছে, তাদের বিচার হবেই। শেখ হাসিনা সরাসরি হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন– এমন তথ্য আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এসেছে। তাঁকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য ভারত সরকারকে একদিন ইতিহাসের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।
বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে উপজেলার হাটবোয়ালিয়া এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সড়কের দুই পাশে দাঁড়িয়ে এনসিপি নেতাদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় সারজিস আলম পথসভা থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের ভালোবাসায় আমরা গর্বিত। তবে পড়াশোনাই এখন তোমাদের প্রধান দায়িত্ব। ক্লাস ফেলে পথে আসা কাম্য নয়।’
পরে চুয়াডাঙ্গা সদরের বড়বাজার এলাকায় আরেকটি সভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতারা দামুড়হুদা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত এক কৃষকের বাড়ি গিয়ে সমবেদনা জানান।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প ট য় হত য ব এসএফ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
সীমান্তে শেষবারের মতো বাংলাদেশি মায়ের মুখ দেখলেন ভারতীয় মেয়ে
বাংলাদেশি এক নারীর মৃত্যুর পর তাঁর ভারতীয় মেয়ের অনুরোধে চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তের শূন্যরেখায় লাশ দেখার সুযোগ করে দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বিজিবি জানায়, গতকাল সোমবার রাতে বার্ধক্যের কারণে মারা যান বাংলাদেশি তারা বানু (৮০)। খবর পেয়ে ভারতের মালদা জেলার দুইশতবিঘি গ্রামের বাসিন্দা মেয়ে মালেকা বেগম বিএসএফের মাধ্যমে লাশ দেখার আবেদন করেন বিজিবির কাছে। বিষয়টি জানার পর মানবিক বিবেচনায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৫৯ বিজিবি। আজ মঙ্গলবার সকালে শিবগঞ্জ সীমান্তের কিরণগঞ্জ সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকার সীমান্ত পিলার ১৭৯/৩–এস–এর শূন্যরেখায় বিজিবি ও বিএসএফের উপস্থিতিতে স্বজনদের লাশ দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়।
শূন্যরেখায় মায়ের মুখ দেখে আবেগে ভেঙে পড়েন মেয়ে মালেকা বেগম। আত্মীয়েরা শেষবারের মতো লাশ দেখার এমন সুযোগ পেয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
তারা বানুর ছেলে কুরবান আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোট বোনটাক শেষবারের মতো মায়ের মুখখান দেখাইতে পারনু। নাহিলে সারা জীবনের লাইগ্যা আফসোস থাইক্যা যাইতোক অরও, হামারও। বোনটার সাথে ভগ্নিপতি, দুই ভাগনি, ভাগনিজামাইসহ ১৫–১৬ জন আত্মীয় আইস্যাছিল। কাঁটাতারের বেড়ার আগে অবাধে যাওয়া–আসা ছিল। মাত্র তো দুই শ গজ দূরের গাঁ। এপারের অনেক মেয়ের যেমন ওপারে বিয়ে হয়েছে, তেমনি ওপারের অনেক মেয়ে এপারে আছে। হামি বিজিবি–বিএসএফের কাছে কৃতজ্ঞ।’
এর আগে গত শুক্রবার একই সীমান্তে ভারতীয় মৃত বোনের মুখ দেখার সুযোগ পেয়েছিলেন বাংলাদেশি ভাই।
৫৯ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া বলেন, বিজিবি সব সময় মানবিক প্রয়োজনে সহানুভূতিশীল ভূমিকা পালন করবে।