জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন পদ্ধতি নিয়ে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে। সংসদের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের প্রস্তাব করা হয়েছে। সব দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তবে চাই, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা যেন ত্রুটিমুক্ত হয়।’

রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিষয়ে আলোচনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নিয়ে খানিকটা অগ্রগতি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য আছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান নিয়োগ করার ক্ষেত্রে আইনসভার মাধ্যমে প্রস্তাব করা বা নিয়োগের ব্যবস্থা করার প্রস্তাব দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন।’

ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘আজ (বৃহস্পতিবার) এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মতামত পাওয়া গেছে। এ মতামতের ভিত্তিতে আরও সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব আলোচনার টেবিলে আছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দল চায়, তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা যেন ত্রুটিহীন হয়; ভবিষ্যতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা যাতে বিতর্কের মধ্য না পড়ে।’

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘অতীতে তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে অনেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বিচার বিভাগ এবং রাষ্ট্রপতিকে যুক্ত করতে চাইছে না। পঞ্চদশ সংশোধনী মামলার রায়ে তত্ত্বাবধায়ক ইতোমধ্যে ফিরেছে। বিএনপি চায়, বিদ্যমান ব্যবস্থা চতুর্থ বিকল্প হিসেবে থাকুক।’ 

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড.

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘জামায়াত তত্ত্বাবধায়কের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতিদের ধারাবাহিকভাবে চায়, অতীতে যেমন ছিল। তবে নতুন প্রস্তাব আলোচনার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।’ 

আর এনসিপি জানিয়েছে, সংসদের উচ্চকক্ষের ভোটের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার চায় তারা।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আল র য় জ প রস ত ব ব যবস থ ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

৭ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে ফিরছে জেএসএস

পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্যতম বড় আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) জাতীয় নির্বাচনের রাজনীতিতে ফিরছে। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও আগামী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে দলটি।

ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি—তিন আসনেই প্রার্থী দেবে দলটি। তফসিল ঘোষণার পর প্রার্থীর নাম ঘোষণা করার কথা জানিয়েছে জেএসএস।

২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির ২৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেন জেএসএসের সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার। তিনি বলেন, নির্বাচন হলে জেএসএস অংশ নেবে। নির্বাচনে জয়লাভের ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ঊষাতন তালুকদার। তবে দেশের ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।

২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে আওয়ামী লীগের (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) প্রার্থী দীপংকর তালুকদারকে হারিয়ে জিতেছিলেন জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

জেএসএস সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল ২০১৮ সালে। ওই বছর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে দ্বিতীয় হয়েছিলেন জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার।

জাতীয় নির্বাচনে জেএসএসের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণায় পার্বত্য চট্টগ্রামের নির্বাচনী রাজনীতির হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো। কেননা, ৫০ বছরের বেশি পুরোনো পাহাড়ের এই রাজনৈতিক দলের স্থানীয় রাজনীতিতে বেশ প্রভাব রয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাবনা কার্যত নেই। এতে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে মূল লড়াই হওয়ার কথা থাকলেও পাহাড়ে তা হচ্ছে না। এখানে অন্যতম মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে থাকবে জেএসএস। ইউপিডিএফও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারে বলে স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথমে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন ঊষাতন তালুকদার। তবে দেশের ওই সময়ের পরিস্থিতি বিবেচনা করে দলীয় সিদ্ধান্তে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছিলেন তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জানান, পাহাড়ের স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে ভূমিকা রাখে আঞ্চলিক দলগুলো। এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ) না থাকায় এই দলগুলোর গুরুত্ব আরও বাড়বে।

রাজনৈতিক দল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির আত্মপ্রকাশ ঘটে ১৯৭২ সালে। সক্রিয় রাজনৈতিক দল না হলেও ১৯৭০ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম উপজাতি কল্যাণ পরিষদের’ ব্যানারে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন মানবেন্দ্র নারায়ণ (এম এন) লারমা। যিনি জেএসএসের প্রতিষ্ঠাতা।

পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে গঠিত হয় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)। ২০০৭ সালে জেএসএস ভেঙে তৈরি হয় জেএসএস (এম এন লারমা)। ২০১৭ সালের নভেম্বরে ইউপিডিএফ ভেঙে তৈরি হয় ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক)।

জেএসএসের সহসভাপতি ঊষাতন তালুকদার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কিশোরগঞ্জে মনোনয়ন না পাওয়া ৫ নেতা ও দলীয় প্রার্থীর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মৌনমিছিল
  • হবিগঞ্জে বিলের দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ৩০ আহত
  • কিশোরগঞ্জ-১: বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত চার নেতা এক মঞ্চে, একসঙ্গে বিক্ষোভ
  • ফিকির নতুন সভাপতি হচ্ছেন রুপালী হক চৌধুরী
  • গোপালগঞ্জে জামায়াতের হিন্দু শাখা থেকে ৯ নেতার পদত্যাগ
  • ৭ বছর পর জাতীয় নির্বাচনে ফিরছে জেএসএস