জাতীয় নির্বাচনের আগেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় হওয়া ঐকমত্যের বিষয়গুলোর আইনি ভিত্তি দেওয়া প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তিনি বলেছেন, আইনি ভিত্তি দিতে যাতে কেউ এসব বিষয় এড়িয়ে যেতে না পারে।

রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় ধাপের বৈঠকের ১২তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মোহাম্মদ তাহের।

ঐকমত্যে পৌঁছানো বিষয়গুলোর আইনি ভিত্তি কী হবে, সে বিষয়টি এখনো আলোচনায় আসেনি বলে জানান আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি আলোচনায় আসলে ভিন্নতা থাকবে, যুক্তি থাকবে। সবকিছুর পরে আশা করি, আমরা একটা জায়গায় যেতে পারব।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এদিনের আলোচনার বিষয় ছিল প্রধান বিচারপতি নিয়োগ, জরুরি অবস্থা জারি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন।

জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়ে বলেছি, জ্যেষ্ঠতম বিচারপতি যিনি থাকবেন তিনিই প্রধান বিচারপতি হবেন। কারণ, এর বেশি হলে অতীতের মতো শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদেরা বিচারপতি হওয়ার সুযোগ পাবেন। কিছু দল দুজনের (আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ দুজনের একজনকে নিয়োগ) কথা বলেছে। তবে তাদেরকে নির্বাচনী ইশতেহারে সেটি উল্লেখ করে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে এলে আইন পরিবর্তনের মাধ্যমে সেটি করতে হবে।’

জামায়াতের এই নেতা বলেন, রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে জাতীয় জরুরি অবস্থার ব্যবহার যেন না হয় সে বিষয়ে তাঁদের প্রস্তাব ছিল। এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। তিনি আরও বলেন, জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিষয়ে সবাই একমত হয়েছে। পাশাপাশি মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা থাকবেন, কোনো কারণে তিনি না থাকলে বিরোধীদলীয় সংসদীয় উপনেতা উপস্থিত থাকার বিষয়ে সবগুলো রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।

আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জরুরি অবস্থার সময় নাগরিকের মৌলিক অধিকার যাতে খর্ব না হয় সে বিষয়ে আমরা রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তাব রেখেছি। যাতে রাইট টু লাইফ ঠিক থাকে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব চ রপত ঐকমত য অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের পর ড্রেনে ফেলার ‘ভিডিওটি ভুয়া’

ঢাকার বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ করে রাস্তার পাশে ড্রেনে ফেলে যাওয়ার যে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানো হয়েছে, সেটি ভুয়া।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং ফ্যাাক্ট চেকের ফেসবুক পেজে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) রাতে ওই ভিডিওর ছবি পোস্ট করে লেখা হয়েছে, এই ঘটনা বাংলাদেশেরই নয়, এটি ভারত থেকে পরিচালিত একটি ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও। 

আরো পড়ুন:

নির্বাচনে পুলিশকে ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ পালনের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

দেশের সুরক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর ত্যাগ ও নিষ্ঠা দৃষ্টান্তমূলক: প্রধান উপদেষ্টা

প্রেস উইং ফ্যাক্ট চেকের পোস্ট হুবহু তুলে ধরা হলো:
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে, ঢাকার বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ করে রাস্তার পাশে ড্রেনে ফেলে যায় তিন সন্ত্রাসী। ভিডিওটিতে দেখা যায়, রাস্তার পাশে একজন তরুণী পড়ে আছে, তার কাছেই পড়ে আছে জুতা এবং পানির বোতল।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, দাবিটি সত্য নয়। মূল ভিডিওটি ‘ওমা মেজেম’ নামক ভারতীয় একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। একটি সাজানো ভিডিওকে প্রচার করা হচ্ছে ধর্ষণ-পরবর্তী ভিডিও বলে।

অনুসন্ধানের শুরুতে ভিডিওটির বিভিন্ন কি-ফ্রেমের সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চে ইউটিউবের একটি লিংক পাওয়া যায়। ‘ওমা মেজেম’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত ভিডিওর সাথে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা ছাড়া বাকি দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। এই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা- ‘#shorts #comedy #funny #bodocomedy’। ক্যাপশন থেকে বোঝা যায়, এটি কমেডি ধারার ভিডিও। 
দেখুন: https://www.youtube.com/shorts/XML5_4O6ez8

চ্যানেলটি যাচাই করে ওই নারীর একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। বেশির ভাগ ভিডিও মজার ছলে তৈরি। ইউটিউবে ওই চ্যানেলের বিবরণ সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, @Bodo_credit ইউজার নাম দিয়ে চলতি বছরের ২১ মে চ্যানেলটি খোলা হয়েছে। ভারত থেকে চ্যানেলটি তাদের কন্টেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে। অর্থাৎ, ভিডিওর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের দাবিটি সঠিক নয়। 

অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যম যাচাই করে, সম্প্রতি বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ বা এ-সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ