রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনা অব্যাহত রাখায় ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার একই কারণে চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ট্রাম্প। গতকাল বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, পরিস্থিতির ওপর বিবেচনা করে তিনি চীনের ওপর আরও শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিতে পারেন।

ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে সামনে আরও অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসবে বলে মনে করেন ট্রাম্প। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা হতে পারে.

..আমি এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমরা ভারতের সঙ্গে এটা (অতিরিক্ত শুল্কারোপ) করেছি। আমরা খুব সম্ভবত আরও বেশ কয়েক দেশের সঙ্গে এটা করতে চলেছি। তাদের একটি হতে পারে চীন।’

গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট চীনকে সতর্ক করে বলেছিলেন, যদি তারা রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখে, তবে তারাও বাড়তি শুল্কের মুখে পড়তে পারে।

এ নিয়ে বিস্তারিত আর কোনো তথ্য দেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এর আগে দেশটির ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার কারণে ‘জরিমানা’ হিসেবে এবার অতিরিক্ত এই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। দুটি মিলিয়ে ভারতীয় পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।

এটা হতে পারে...আমি এখনই এ নিয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমরা ভারতের সঙ্গে এটা (অতিরিক্ত শুল্কারোপ) করেছি। আমরা খুব সম্ভবত আরও বেশ কয়েক দেশের সঙ্গে এটা করতে চলেছি। তাদের একটি হতে পারে চীন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ভারত ছাড়াও রাশিয়ার তেলের বড় ক্রেতা দেশ চীন। কিন্তু গতকাল হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া আদেশে চীনের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

তবে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট চীনকে সতর্ক করে বলেছিলেন, যদি তারা রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রাখে, তবে তারাও বাড়তি শুল্কের মুখে পড়তে পারে।

আরও পড়ুনভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ ট্রাম্পের, মোট দাঁড়াল ৫০১৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের এসব পদক্ষেপ অন্যায়, অন্যায্য ও অযৌক্তিক: ভারত১৫ ঘণ্টা আগে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র শ ল ক আর প র প কর ছ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

ভুল অব‍্যাহত রাখলে দেশ অনিবার্য ‘ওয়ান–ইলেভেনের’ দিকে যাবে: এবি পার্টি

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না হলে এবং বিভেদ ও অনৈক্যজনিত ভুল অব‍্যাহত রাখলে দেশ অনিবার্য ‘ওয়ান–ইলেভেনের’ দিকে যাবে বলে সতর্ক করেছেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। আজ মঙ্গলবার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘পদধ্বনি নয়, আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, ২০০৭ সালের ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে দেশ যেদিকে হেঁটেছিল, এখন আমরা সবাই মিলে সেদিকেই রওনা হয়েছি।’

জুলাই গণ–অভ‍্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উদ্‌যাপন উপলক্ষে আজ সকালে রাজধানীতে এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন দলের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। পরিস্থিতির উত্তরণে সংখ‍্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন, না হয় গণ–অভ্যুত্থানের অংশীদার দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তাব করেন তিনি।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই ভূখণ্ডে নাগরিক অধিকার কখনোই পুরোপুরি প্রতিষ্ঠা পায়নি। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধ, ১৯৯০ সালের গণ–অভ্যুত্থান—কোনোটিই আমাদের নাগরিক অধিকারকে পূর্ণতা দিতে পারেনি। নব্বইয়ের নায়কেরা গণ–অভ্যুত্থান ঘটাতে পারলেও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হয়েছেন। গত ১৬ বছরে গুম-খুন রাষ্ট্রকে গ্রাস করেছে; আর তার চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে ২০২৪ সালে; যেখানে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করা হয়, লাশ গুম করা, গণকবর দেওয়া হয়—আমরা যেন এক বিভীষিকাময় সময় অতিক্রম করেছি।’

গণ-অভ্যুত্থানে এবি পার্টির ভূমিকাকে স্পষ্ট করে মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ‘আমরা গোপনে নয়, দলীয়ভাবে, সাহসিকতার সঙ্গে প্রকাশ্যে আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। ছাত্রদের গ্রেপ্তারের পর আমাদের আইনজীবী টিম পাশে দাঁড়িয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা, আলেম-ওলামাদের সম্পৃক্ত করা, আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া—সবখানেই আমাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। এবি পার্টি সমান্তরালভাবে জনগণের সঙ্গে থেকে লড়াই করেছে।’

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর একমাত্র স্বপ্ন ছিল হাসিনার পতন। কিন্তু এখন বিভেদের রাজনীতিতে জাতি আবারও দ্বিধাবিভক্ত হওয়ার আশঙ্কায়। এখন অবদানের চেয়ে গোপন তথ্য ফাঁস করা হীন মানসিকতার পরিচয়।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এখানে ফ্যাসিবাদ শুধু রূপ পরিবর্তন করেছে। সমঝোতার ভিত্তিতে আগামী পাঁচ বছর জাতীয় সরকার গঠন করা সম্ভব কি না, তা এখনই ভাবতে হবে। অন্যথায় অন্তর্দলীয় বিভেদ ও পরিণতির ভার সবাইকে বহন করতে হবে। অংশীদারত্ব নিয়ে বিতর্ক এখনই সমাধান না করলে জাতি আবারও বিভক্ত হবে। বিশেষ করে জুলাই নিয়ে আমরা কোনোরূপ বিভেদ চাই না। জুলাই ঘোষণাপত্র যেন অলংকার না হয়ে বাস্তবায়নযোগ্য হয়, যেন তা একটি ঐতিহাসিক দলিল হয়ে ওঠে।

দলের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘জুলাইয়ের শহীদদের বেওয়ারিশ হিসেবে দেখতে চাই না। দ্রুত লাশ শনাক্ত করে যথাযোগ্য সম্মানের সঙ্গে দাফনের ব্যবস্থা নিতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রটি যদি সব রাজনৈতিক দলের পরামর্শ নিয়ে করা হতো, তাহলে তা আরও গ্রহণযোগ্য ও সার্বজনীন হতো।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আবদুল ওহাব মিনার, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসরিন সুলতানা, আমিনুল ইসলাম, আলতাফ হোসাইনসহ আরও অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভুল অব‍্যাহত রাখলে দেশ অনিবার্য ‘ওয়ান–ইলেভেনের’ দিকে যাবে: এবি পার্টি