স্ত্রীকে নিয়ে নোংরা মন্তব্য, নীরবতা ভাঙলন আবির
Published: 10th, August 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার অভিনেতা আবির চ্যাটার্জি। ব্যক্তিগত জীবনে নন্দিনী চ্যাটার্জির সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। কিন্তু মিডিয়ার আলো থেকে বরাবরই স্ত্রী-সন্তানকে আড়ালে রাখেন। কারণ স্ত্রীর ছবি প্রকাশ করে কটাক্ষের শিকার হয়েছেন।
কয়েক মাস আগে একটি সিনেমার প্রিমিয়ারে স্ত্রীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন আবির। সেখানে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ক্যামেরায় পোজ দেন। সেই মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও অন্তর্জালে ভাইরাল হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার এসব পোস্টে নন্দিনীকে নিয়ে নোংরা মন্তব্য করেন নেটিজেনরা। তবে এ নিয়ে তখন টুঁ-শব্দটি করেননি আবির।
কয়েক দিন আগে ‘স্টেট আপ উইথ শ্রী’-তে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবির। এ আলাপচারিতায় ট্রলাদের নোংরা মন্তব্য নিয়ে কথা বলেন এই নায়ক। আবির বলেন, “আমার যেটা সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে, তা হল আমি এটা কখনো বদলাতে পারব না। আমার সান্তনা দেওয়ার জায়গাও নেই। এটা আমার সবচেয়ে খারাপ লাগার জায়গা, আমি কিছু করতে পারি না।”
আরো পড়ুন:
সন্তানহীন সংসারে পাকা অভিনেত্রী হয়ে ওঠার গল্প বললেন অপরাজিতা
বাথরুমে গিয়ে কেঁদেছি: শুভশ্রী
‘ফাটাফাটি’ সিনেমায় অভিনয় করেন আবির। মূলত, সিনেমাটি বডি পজিটিভিটির গল্প বলেছে। এ বিষয়ে আবির বলেন, “এমনকী ফাটাফাটি সিনেমার সময় বলেছিলাম, একটা সিনেমা কি কিছু বদলাতে পারবে? পারবে না। কিন্তু এটা নিয়ে আলোচনার জায়গাটা অন্তত তৈরি হবে।”
ট্রলিং প্রসঙ্গে আবির বলেন, “এটা নিয়ে আমাকে সব জায়গাতেই প্রশ্ন করা হয়। তবে আমার মনে হয় যারা এগুলো করে তারা এই সময়টা পাওয়ারও যোগ্য নয়। তাই এটা নিয়ে আলোচনায় না যাওয়াই উচিত। এটাকে এড়িয়ে যাওয়া উচিত। এর চেয়ে বড় অপমান তাদের করা যাবে না।”
এমবিএ পড়তে গিয়ে নন্দিনীর সঙ্গে পরিচয় হয় আবির চ্যাটার্জির। ২০০৭ সালে সাতপাকে বাঁধা পড়েন এই যুগল। দাম্পত্য জীবনের প্রায় দেড় যুগ পার করছেন তারা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা