প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালে চাকরি, পদ চুক্তিভিত্তিক
Published: 11th, August 2025 GMT
বেসরকারি সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে জনবল নিয়োগ দেবে। সংস্থাটি ট্রেনিং এক্সপার্ট পদে কর্মী নেবে। চাকরির মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩০ মাস। প্রাথমিকভাবে এক বছরের চুক্তি হলেও কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে নবায়নের সুযোগ রয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
এক নজরে চাকরির বিববরণপদের নাম: ট্রেনিং এক্সপার্ট
পদসংখ্যা: উল্লেখ নেই
আরও পড়ুনপানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পদ ২৮৪১০ আগস্ট ২০২৫যোগ্যতা: সামাজিক মানস পরিবর্তন, জেন্ডার সমতা ও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি (GESI), জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা (GBV) প্রতিরোধ এবং যৌন হয়রানি ও শোষণ প্রতিরোধে (PSHEA) অন্তত ১০ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। প্রশিক্ষণ পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন, প্রশিক্ষণ উপকরণ তৈরি, কর্মশালা পরিচালনায় দক্ষতা থাকতে হবে। বাংলা ও ইংরেজি—দুই ভাষায় সাবলীল হতে হবে। সরকারি সংস্থা, বাস্তবায়নকারী অংশীদার ও কমিউনিটি গ্রুপের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ডিজিটাল টুলস ব্যবহারে দক্ষতা থাকতে হবে।
চাকরির ধরন: চুক্তিভিত্তিক (প্রাথমিকভাবে এক বছর, নবায়নযোগ্য)
চাকরির মেয়াদ: সর্বোচ্চ ৩০ মাস
কর্মস্থল: বাংলাদেশ (উল্লেখ নেই)
সুবিধা: প্রতিযোগিতামূলক বেতন, সঙ্গী ও সন্তানের জন্য চিকিৎসাসুবিধা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, উৎসব ভাতা, ছুটি, বিমা, বার্ষিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, মুঠোফোন ভাতা, মাতৃত্ব/পিতৃত্বকালীন ছুটি ও ডে-কেয়ার সুবিধা।
আরও পড়ুনঅবহেলায় শিক্ষা খাত, সংস্কারে কমিশনও করা হয়নি ৬ ঘণ্টা আগেযেভাবে আবেদনআগ্রহী প্রার্থীদের প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিয়োগ ও আবেদনের বিস্তারিত প্রক্রিয়া জেনে নিয়ে অনলাইনে আবেদন করতে হবে।
আবেদনের শেষ তারিখ: ১৬ আগস্ট ২০২৫।
আরও পড়ুনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে চাকরি, স্বাস্থ্য সহকারীসহ ৫ পদে নেবে ২১০৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর র
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা