সাদা পাথর লুট: সিলেটে বিএনপি সভাপতির পদ স্থগিত
Published: 12th, August 2025 GMT
সিলেটের কোম্পানিগঞ্জের সাদা পাথর লুটের ঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করেছে দলটি।
সোমবার (১১ আগস্ট) রাতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে সাহাব উদ্দিনের সব দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। তাঁর স্থলে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি হাজী আব্দুল মান্নান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
দেশের সবচেয়ে বড় পাথর কোয়ারি ভোলাগঞ্জ কোয়ারির পাশে সরকারের অন্তত ২৭৫ একর উন্মুক্ত জায়গা আছে। ২০০১ সালের দিকে এসব জায়গার দখল নেন স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েকজন। এর মধ্যে সাহাব উদ্দিনের দখলে চলে যায় অর্ধেকের বেশি জমি। পাশে কোয়ারি থাকায় দখলকারীরা জায়গাগুলো পাথর ভাঙার মেশিনের মালিকদের কাছে ভাড়া দেন।
বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলেও আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে মিলেমিশে সরকারি জায়গা দখল করে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছিলেন তিনি। বিগত সরকারের শেষের দিকে প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে। কিন্তু ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জে ১০ নম্বর সাইট এলাকায় সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ উঠে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সাহাব উদ্দিনকেও এ ঘটনায় লিখিতভাবে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো।”
এ ব্যাপারে জানতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনকে বার বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঢাকা/নূর/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স সরক র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫
ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।
সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।
জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।
সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”
অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।
সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”
ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”
সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।
ঢাকা/হিমেল/এস