গণপিটুনির মতো গণলুটের আনন্দ আলাদা। গণপিটুনিতে লোক মরে কিন্তু খুনের দায় কাউকে নিতে হয় না। এ বলে, ‘আমি তো মোটে একটা ঘুষি মারছি’, ও বলে, ‘আমি সামান্য দুইটা চড় মারছিলাম’, আরেকজন বলে, ‘আমি খালি বুকের ওপর ছোট্ট একটা পাড়া দিছিলাম’। পুলিশ আসে। লাশ নিয়ে যায়। মামলায় লেখে ‘মবের কবলে পড়ে মৃত্যু’। শ খানিক অজ্ঞাত লোক আসামি হয়। তারপর ঘটনা শেষ।

গণলুট বা গণচুরিও তাই। এখানেও আয়েশ করে খায়েশ মেটানো যায়। লুটপাট শেষ হওয়ার পর এ বলে, ‘আমি কিছু করি নাই’, ও বলে ‘আমি কিছু জানি না।’ মাঝখান থেকে বিরাট গোডাউন ফাঁকা হয়ে যায়। পরে পুলিশের শোডাউন হয়। সবাই বলে পাবলিক লুটপাট করে নিয়ে গেছে। কিন্তু ‘পাবলিকের মধ্যে আমিও ছিলাম’—এই কথা কেউ বলে না। সব দায় পড়ে অশরীরী ‘পাবলিকের’ ঘাড়ে; ব্যক্তির ঘাড়ে পড়ে না।

সিলেটের সাদাপাথর এলাকার পাথর লুটের ছবি দেখে মনে হলো, যাঁরা শত শত নৌকা নিয়ে এসে কোদাল-বেলচা দিয়ে উন্মাদের মতো পাথর তুলে নিচ্ছেন, তাঁরা নির্ঘাত গণপিটুনিতে যোগ দিয়ে ‘হাতের সুখ’ নেওয়ার মতো সুখ পেয়েছেন। হরিলুটের বাতাসা কুড়ানোর সাথে তাঁদের পাথর কুড়ানোর মিল পাওয়া গেছে।

আরও পড়ুনপাথর উত্তোলনকারী চক্রকে থামান০৭ জানুয়ারি ২০২৫

মেঘালয় থেকে নেমে আসা বরফ গলা ছোট্ট নদীর পাড় ধরে প্রকৃতির বিছিয়ে রাখা লাখ লাখ পাথর এখন নাই হয়ে গেছে। সবার চোখের সামনে সেগুলো তুলে নেওয়া হয়েছে। সাদাপাথর এখন ‘কালাবালু’ হয়ে গেছে।

এই পাথর যেভাবে গায়েব করা হলো, তাকে চুরি নাকি ডাকাতি নাকি ছিনতাই নাকি লুট বলব বুঝে উঠতে পারছি না। হাজার হাজার শ্রমিক লাগিয়ে বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতারা পাথর সরিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করতে গেলেই তাঁরা ডাকাতের মতো জানে মারার হুমকি দিয়েছেন। সরকারের উপদেষ্টারা পর্যন্ত তাঁদের থামাতে ফেল মেরেছেন।

আদতে এখানে যা হয়েছে তার নাম ‘সর্বদলীয় লুট’। এখানে হয়েছে একটা জাতীয় ঐকমত্যের ডাকাতি। এই ডাকাতির সময় মাঝে মাঝে ‘আমি খাঁড়ায়ে যাব, আপনি আমারে বসায়ে দেবেন’ স্টাইলে কখনো কখনো পুলিশ এসে ধাওয়া দিয়েছে; তখন শ্রমিকেরা সরে গেছেন। রাতে আবার শ্রমিকেরা নৌকা নিয়ে হাজির হয়েছেন। পুলিশকে সম্মান দেখিয়ে মাঝে মাঝে তাঁরা দিবালোকের লুট স্থগিত রেখে রাতের অন্ধকারে সর্বদলীয় চুরি চালিয়ে গেছেন।

সাদাপাথর এখন ‘কালাবালু’ হয়ে গেছে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অ্যালবামের নাম ‘প্রাণ-ত’, এনজেল বললেন...

প্রথম মৌলিক গান গেয়েই তারকাখ্যাতি পান এনজেল নূর। ‘যদি আবার’ শিরোনামের গানটি ঢাকার গণ্ডি পেরিয়ে কলকাতায়ও আলোচিত হয়েছে। আরেক মৌলিক গান ‘তিল’ও প্রশংসা কুড়িয়েছে। দুই গানেই নিজের জীবনকে গল্প বলার ঢঙে সামনে এনেছেন তিনি। এবার আর একক গান নয়, পুরো অ্যালবামে হাত দিয়েছেন এনজেল। তাঁর প্রথম অ্যালবামের নাম হবে ‘প্রাণ-ত’।

অ্যালবামের এই ব্যতিক্রমী নামকরণ বিষয়ে জানতে চাইলে এই তরুণ গায়ক বলেন, ‘গানগুলো আমার একদম প্রাণের কাছের, ফলে অ্যালবামের নাম ‘প্রাণ-ত’। এতে প্রাণজুড়ানো কিছু গান থাকবে, যেখানে কষ্ট বা সুখকে না এড়িয়ে অনুভব করার কথা বলা হয়।’

এনজেল নূর

সম্পর্কিত নিবন্ধ