দেশের নীতি নির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, এডিবি ও জাইকা: আনু মুহাম্মদ
Published: 13th, August 2025 GMT
শেখ হাসিনার আমলে যারা সিদ্ধান্ত নিত, ইউনূস আমলেও তারাই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। তিনি বলেন, ‘দেশের সব নীতি নির্ধারণ করছে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও আইএমএফ। তাদের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আমাদের আমলাতন্ত্র আর ব্যবসায়ীরা।’
সকালে রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউটে নাগরিক উদ্যোগের আয়োজনে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে এক সেমিনারে এ কথা বলেন আনু মুহাম্মদ। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
আনু মুহাম্মদ বলেন, উন্নয়ন সহযোগীরা শেখ হাসিনার উন্নয়ন মডেলকে মিরাকল বা অলৌকিক বলেছিল। তারা আলাদা উন্নয়ন ধারা তৈরি করেছিল। এখন তারাই আবার নীতি নির্ধারণ করছে। উপদেষ্টারাও বিদেশিদের জন্য নীতি নির্ধারণে বেশি উৎসাহী।
গোপন চুক্তি নিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করতে জনগণকে জানাতে হবে। এটাই মুক্তবাজার অর্থনীতির নীতি। গোপন চুক্তি না করে এই সরকারের পরিবর্তনের দিশা তৈরির সুযোগ ছিল। তারা আগের গোপন চুক্তিগুলো প্রকাশ করতে পারত, যাতে পরের সরকারগুলো এমন চুক্তি করতে উৎসাহী না হয়। কিন্তু এসব বিষয়ের কোনো পরিবর্তন হয়নি, বিষয়টি আশা ভঙ্গের।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, ‘এলডিসি উত্তরণ করা বা বিলম্ব করার বিষয়ে এখনো সরকারের সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রকৃত অর্থে বাংলাদেশ এখনো এ জন্য প্রস্তুত নয়, যদিও আমরা আগের পরিসংখ্যান বয়ে বেড়াচ্ছি। নতুন সরকার হয়তো উত্তরণ করবে। আমরা নিয়মের মধ্যে কিছু প্রস্তুতি নিচ্ছি মাত্র।’
মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নিয়ে প্রধান অতিথি বলেন, এফটিএ মানে ফোর্স ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট বা জোরপূর্বক বাণিজ্য চুক্তি, এটা ছাড়া কোনো অর্থ হয় না। সেমিনারে এলডিসি উত্তরণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির সঙ্গে আইএমএফের বৈঠক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এনসিপির সঙ্গে আইএমএ এর মিশন টিমের সঙ্গে বৈঠক হয়।
আরো পড়ুন:
এনসিপিকে নিয়ে প্রথম বই ‘এনসিপির যাত্রা`
এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, যুবক আটক
বৈঠকে এনসিপি প্রতিনিধি দল দেশের সংকটময় সময়ে বাংলাদেশকে সহায়তা প্রদান এবং জরুরি সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেওয়ার প্রতি আইএমএফ-এর ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।
বৈঠকে উপস্থিত (আইএমএফ) বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি, রাজস্ব আহরণ, রাজস্ব–জিডিপি অনুপাত, ডিস্ট্রেসড অ্যাসেট এবং যুব কর্মসংস্থান বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।
এনসিপি প্রতিনিধিরা এসব চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে বলেন, যে তারা রাজস্ব ডিজিটালাইজেশন, আর্থিক খাতের চলমান সংস্কারকে সমর্থন এবং সংস্কার বাস্তবায়নের ধীরগতির বিষয়ে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
সভায় আরো আলোচ্য ছিল পূর্ববর্তী সরকারের ‘ক্লেপ্টোক্রেসি’ কীভাবে শুরু হয়েছিল, জাতীয় অর্থনীতি ও প্রশাসনে এর প্রভাব কী ছিল এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্নীতিকে রোধ করতে কী ধরনের কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে ছিল, অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতি কমানো, সুশাসন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং অন্তর্বর্তী সরকার থেকে নির্বাচিত সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল ক্ষমতা হস্তান্তর। উভয়পক্ষই আশা প্রকাশ করে যে বাংলাদেশের কঠোর পরিশ্রমী জনগণই উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি এবং জনগণের সম্মিলিত মেধা ও শ্রমের মাধ্যমে দেশ আরো সহনশীল ও স্থিতিশীল অর্থনীতির দিকে এগিয়ে যাবে।
বৈঠকে আইএমএফ-এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ক্রিস পাপাজর্জিউ, বাংলাদেশ মিশন চিফ, ম্যাক্সিম ক্রিশকো, ঢাকা রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ এবং তৌহিদ এলাহি, ডেপুটি সেক্রেটারি ও ইকোনমিক এনালিস্ট ।
এনসিপি এর পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাবেদ রাসিন, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, শিল্প ও বাণিজ্য সেল, মো. সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক ও প্রধান, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আলাউদ্দিন মোহাম্মদ, যুগ্ম সদস্য সচিব ও কো-লিড, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক সেল, আব্দুল্লাহ আল মামুন ফয়সাল, সংগঠক ও কো-লিড, শিল্প ও বাণিজ্য সেল এবং মো. আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল, যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও সদস্য, শিল্প ও বাণিজ্য সেল।
ঢাকা/রায়হান/এসবি