জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার আগে নির্বাচন করা যা‌বে না, জাতীয় নির্বাচ‌নের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও পিআর পদ্ধ‌তি‌তে জাতীয় নির্বাচনসহ ৭ দফা দা‌বি জা‌নি‌য়ে‌ছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) প্রধান নির্বাচন কমিশনের সাথে বৈঠ‌কে ইসলামী আন্দোলনের নেতারা এসব দা‌বি জানা‌ন।

দ‌লের পক্ষ থে‌কে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমদ। স‌ঙ্গে ছি‌লেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব ও দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম।

আরো পড়ুন:

ইসির প্রাথমিক বাছাইয়ে উত্তীর্ণ এনসিপিসহ ১৬ দল

ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন: সিইসি

সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর ৭ দফা দা‌বি হ‌লো:
১) বিগত ক্ষমতাসীন দলগুলো যেভাবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে দলীয় এবং ক্ষমতার অশুভ প্রভাব খাটিয়ে বিতর্কিত ও ব্যর্থ করেছে তা থেকে উত্তরণের জন্য সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রয়োজন করতে হবে।
২) সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দায়িত্বশীল এবং দল নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের জন্য প্রশিক্ষণ ও দিক নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন। এর ব্যত্যয় হলে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
৩) সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে দেশের গৌরব সেনাবাহিনীকে শুধু স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নয় বরং প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সেনা সদস্য মোতায়েনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৪) জুলাই জাতীয় সনদের আলোকে ও সংস্কারের ভিত্তিতে জাতীয় এবং সকল স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে।
৫) শতভাগ জনমতের মূল্যায়নের মাধ্যমে একটি কার্যকর সংসদ গঠনের লক্ষ্যে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি বা পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখা প্রয়োজন।
৬) ফ্যাসিস্ট, খুনি, মানবতাবিরোধী অপরাধী ও আধিপত্যবাদী শক্তির এজেন্ট আওয়ামী লীগ ও তার সব দোসর ও সহযোগী দলকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা এবং তাদের নিবন্ধন বাতিল করা।
৭) দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, দখলবাজ, টেন্ডারবাজ ও খুনিদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা।

বৈঠক শে‌ষে দলের মুখপাত্র ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন,“একটি রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের পরে অবশ্যই তার একটি সনদ হতে হবে এবং নির্বাচন হতে হবে জুলাই সনদের আলোকে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করার আগে কোনো অবস্থাতেই তফসিল ঘোষণা করবেন না-এ বিষয়ে সিইসিকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে।”

জাতীয় সরকার নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা গেল কিনা, রাজনৈতিক দলগুলো কতটা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চায় অভ্যস্ত হলো তা বোঝার জন্যই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দরকার।”

গাজী আতাউর রহমান লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকার বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে বলেন, “আমরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে সতর্ক করেছি যে, যদি আপনি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করতে পারেন তাহলেই নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেন। অন্যথায় সাম্প্রতিক অতিতের নির্বাচন কমিশনারদের পরিনতি আপনার ক্ষেত্রেও পুনরাবৃত্তি হবে।”

এক প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, “নির্বাচন অব্যশই হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার আশাবাদ অনুসারে নির্বাচন আয়োজনের জন্যই আমরা এই প্রস্তাবনাগুলো ও সতর্কবার্তা তুলে ধরেছি।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইস ইস স থ ন য় সরক র জ ল ই সনদ র জন য ইসল ম সনদ র

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব 

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ জন ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে। এসব ব্যক্তির হিসাবের যাবতীয় তথ্য জানাতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।

বুধবার (১৩ আগস্ট) বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ জন ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। হিসাবের যাবতীয় তথ্য পাওয়ার পর এসব ব্যক্তির হিসাবে অস্বাভাবিক কোনো লেনদেন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে জানা যাবে।

আরো পড়ুন:

১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এল ১০৫ কোটি ডলার

১০০ টাকার নতুন নোট বাজারে, আসল-নকল চেনার উপায়

যাদের হিসাবের তথ্য চাওয়া হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার।

ব্যাংক হিসাব তলবের তালিকায় থাকা সাবেক ডেপুটি গভর্নররা হলেন এস কে সুর চৌধুরী, মো. মাসুদ বিশ্বাস, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এসএম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছের। এদের মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। মো. মাসুদ বিশ্বাস বিএফআইইউর প্রধানের পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য হন। আবু হেনা মো. রাজী হাসান দীর্ঘদিন বিএফআইইউর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

ব্যাংকগুলোকে পাঠানো বিএফআইইউ চিঠিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার ফরম, লেনদেনের বিস্তারিত বিবরণ, কেওয়াইসি ফরমসহ সব তথ্য আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। যদি কোনো হিসাব বন্ধ হয়ে থাকে, সেটির তথ্যও জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ