ধরুন একজন মাজারপন্থি লোক নিজেকে ‘ঈশ্বর’ দাবি করল।  তাহলে আমরা তার সম্পর্কে কি ধারণা করি? আমরা সাধারণত বলি যে, লোকটি ‘পাগল’ হয়ে গেছে অথবা অস্বাভাবিক আচরণ করছে। কিন্তু এজন্য কি আমরা তাকে ফতোয়া বা ব্যাখ্যা দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারি? এটা কি ধর্মের কাজ? ন্যায়নীতির কাজ? মানুষের মর্যাদার প্রতি সম্মানের কাজ? না, এটা বর্বরতা। হিংস্রতা। অমানবিকতা। এটি মানুষের অন্তর্নিহিত পাশবিকতাকে প্রকাশ করছে। ধর্মীয় বা সামাজিক কোনো যুক্তি দিয়ে এটি বৈধ করা যায় না। 

আমরা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলি। ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলি। ন্যায়নীতির কথা বলি। মানবতার কথা বলি। বাস্তবে আমাদের অন্তরে লুকিয়ে আছে হিংস্রতা, বর্বরতা, অমানবিকতা, স্বৈরতান্ত্রিকতা, পাশবিকতা। এই অন্তঃস্থ হিংস্রতার প্রতিফলন ঘটছে প্রতিদিনকার সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা সেই বাস্তবতার উদাহরণ। স্থানীয়ভাবে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবিকারী নুরুল হক বা নুরাল পাগলার কবর ভেঙে মরদেহ উত্তোলন করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া— এই ঘটনা শুধু একটি প্রথাগত বা ধর্মীয় বিরোধের ফল নয়। এটি হলো সমাজের ভেতরের হিংস্রতা, স্বার্থপরতা ও অমানবিকতার প্রতিফলন। 

ঘটনার সূত্রপাত নুরুল হকের কবরকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি তার মৃত্যু হলে গোয়ালন্দ দরবার শরিফে একটি উঁচু কাঠামো তৈরি করে দাফন করা হয়। স্থানীয় কিছু সম্প্রদায় সেটিকে শরিয়তবিরোধী মনে করে। প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। প্রথম দফার ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের পর দ্বিতীয় দফায় হামলাকারীরা কবর খুঁড়ে মরদেহ উত্তোলন করে পদ্মার মোড়ে নিয়ে যায় এবং সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলাকারীরা দাবি করেছে, এভাবেই নুরুল হকের ‘ভণ্ডামি’ শেষ হয়েছে।

অন্যদিকে, নুরুল হকের ছেলে দাবি করেছেন, তার বাবাকে শরিয়তের আলোকে যথাযথভাবে দাফন করা হয়েছিল। তিনি মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু ঘটনার প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পাই— সমাজে হিংসার স্বাভাবিকীকরণ, ধর্মীয় উগ্রতা, ও ব্যক্তিস্বার্থের জন্য ন্যায়ের প্রতি অবহেলা।

গোয়ালন্দের ঘটনা আমাদের দেখাচ্ছে কীভাবে স্বার্থ, অহঙ্কার  এবং সামাজিক ঘৃণা মানুষের অন্তরে হিংস্রতার জন্ম দেয়। এই হিংস্রতা আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে নানা রূপে প্রকাশ পায়। মাজার থেকে লাশ উত্তোলন, কাউকে ভিন্নমতের বলে পিটিয়ে মারা, বাড়িঘর জ্বালানো, স্বার্থের জন্য হত্যা করা, গলায় জুতার মালা পড়ানো, মন্দির-মাজারে হামলা এর উদাহরণ। 

এ সব ঘটনার আলোকে আমি ফিরে তাকাই আমার শৈশবের স্মৃতিতে। স্বরূপকাঠির সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে, সাংরেঙ্গকাঠি ইউনিয়নের বিষ্ণুকাঠি গ্রামে আমার শৈশব কাটে। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে হেঁটে গেলে করফার হাট বসত— সপ্তাহে দু’দিন, সোম ও বৃহস্পতিবার। হাটের পশ্চিমে এক কিলোমিটার গেলে আমার বাবার পীরের বাড়ি। আমার বাবা সুফিবাদী লোক, মাজারপন্থী। তার পীরের নাম মাওলানা ফজলুল কারী, লোকে তাকে ‘ফজলা কারী’ বলে জানত। আমি তখন নাইন ক্লাসে পড়ি, কিন্তু মনে আছে, আমি তাকে ‘দাদু’ ডাকতাম। তিনি আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। তার স্ত্রীকে দাদী, সন্তানদের কাকা ও ফুপু বলে ডাকতাম। তারা সকলেই আমাকে স্নেহ করতেন।

প্রায় প্রতি বৃহস্পতিবার তাদের বাড়িতে গানের অনুষ্ঠান হতো। সেখানে গ্রামের হিন্দু-মুসলমান সবাই আসত। সারারাত গান ও জিকির হতো। পীরের অনুসারী ও মরদিরা পীরকে পা ছুয়ে কপালে ও বুকে হাত লাগিয়ে সম্মান জানাত। ছোট বেলায় আমি ভাবতাম, তার পা তো ধোয়া, পরিষ্কার, ধুলোর লেপ নেই, তবু কেন এমন আচরণ? পরে বুঝতে পারি, এটি শুধু শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতীক।

এই অনুষ্ঠানে সবাই যেন ভেদাভেদ ভুলে যায়। সবাই তাদের পীরের আদেশ পালন করে। পীর একদিন বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে যে সম্মান কর তা কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। আমি ভক্তিতে সম্মানিত বোধ করি না। আমি চাই আমার মুরিদরা যেন ভালো কাজ করে, এবং সেই ভালো কাজের জন্য সমাজ তাকে ভালো বলুক। তখনই আমি সম্মান বোধ করবো। মানুষ আমাকেও ভালো বলবে। আর যারা শুধু ভক্তি করবে, কিন্তু ভালো কাজ করবে না, তারা আমার মুরিদ নয়। তারা দয়া করে আমাকে ভক্তি না করলে খুশি হব। আমি ভক্তি বলতে ভালো কাজকে বুঝি। মানুষের মূল পরিচয় তার ভালো কাজ।’

আমি বাবার পীরের অনেক কথা শুনেছি। দুই/তিন বছর আমি বাবার সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে যেতাম। খাজা মাইনুদ্দিন চিশতীয়াসহ অনেককে বাংলাদেশের সকল পীরের মাজারকে তারা সম্মান করতেন। কোনো ধর্মীয় বা জাতপাতের বা অর্থবিত্তের ভেদাভেদ তাদের মনে বা আচরণে দেখিনি। কিন্তু যা দেখেছি, তা হলো আমার নানা ও দাদা ভাইয়ের আচরণে— নামাজ-রোজা করা, কিন্তু মাজারপন্থিদের ঘৃণা করা, জাতপাত মানা, ভিন্ন ধর্মের মানুষকে ও তাদের ধর্মকে ছোট করা, তাচ্ছিল্য করা। শুধু নিজস্ব সম্প্রদায়ের মানুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করা। হিংসা ও অহঙ্কার তাদের মধ্যে ছিল ভরপুর।

এখানেই সংঘর্ষ— একদিকে সুফিবাদী শিক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুষ্ঠান, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে মিলনের প্রজ্ঞা; অন্যদিকে হিংস্রতা, স্বার্থপরতা, বর্বরতা। গোয়ালন্দের ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়, যে মানব সমাজে গণতন্ত্রের কথা কেবল কথার মধ্যে থাকলে কোনো পরিবর্তন আসে না। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ন্যায়নীতি কেবল তখনই অর্থবহ হয় যখন মানুষ অন্তরে মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ ধারণ করে।

কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে টেকসই পরিবর্তন আনতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন মানুষের চিন্তা ও চেতনার রূপান্তর। কেবল আইনকানুন, অবকাঠামো বা প্রযুক্তি পরিবর্তন করলেই সমাজ বদলায় না, যদি মানুষের মানসিকতা পুরোনো বিশ্বাস আর সংকীর্ণতায় আবদ্ধ থাকে। মানুষের চিন্তা যখন সীমাবদ্ধ, তখন উন্নয়ন একপাক্ষিক ও অস্থায়ী হয়। সবচেয়ে বড় বাধা হলো গোঁড়ামি, কুসংস্কার, দলীয় অন্ধতা ও অসহিষ্ণুতা। তাই রাজনৈতিক সংস্কৃতি, শিক্ষা, ধর্ম, অর্থনীতি ও সামাজিক সম্পর্কের প্রতিটি স্তরে পরিবর্তনের জন্য আগে দরকার চিন্তার কাঠামোর সংস্কার।

সমাজ কিংবা রাষ্ট্রকে যদি সত্যিকার অর্থে সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক করে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন— সুন্দর চিন্তার মানুষ। কারণ সুন্দর চিন্তার মানুষ যা কিছু করে, তা-ই হয়ে ওঠে সৃজনশীল, অর্থবহ ও কল্যাণকর। তাদের চিন্তা থাকে মানবিক, কর্ম থাকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পক্ষে এবং দৃষ্টিভঙ্গি থাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক। এই মানুষরাই সমাজে গড়ে তোলে নৈতিকতা, নন্দনবোধ ও মূল্যবোধের ভিত। ফলে সমাজ-রাষ্ট্রের যাবতীয় সৃষ্টি ও কাঠামো হয়ে ওঠে সুন্দর, গঠনমূলক ও টেকসই। 

এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, রাষ্ট্রের সৌন্দর্য তার সড়ক, দালান বা আইন-কানুনে নয়; বরং সেই রাষ্ট্রে বসবাসকারী মানুষের চিন্তা, চেতনা ও দায়িত্ববোধেই নিহিত থাকে। তাই সুন্দর রাষ্ট্র গড়ার যাত্রা শুরু হয় সুন্দর চিন্তার মানুষ তৈরি করার মধ্য দিয়ে। আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন মানবিক, যুক্তিনির্ভর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিকতা।শিক্ষাব্যবস্থা, পরিবার, গণমাধ্যম ও রাজনীতিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে চিন্তার মুক্তি এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। পরিবর্তনের প্রকৃত সূচনা মননে, অন্তরে এবং চেতনায়।

দর্শনের দৃষ্টিকোণ থেকে গোয়ালন্দের ঘটনা একটি নৈতিক ও মানবিক সংকট নির্দেশ করে। ইমানুয়েল কান্তের নৈতিক তত্ত্ব অনুযায়ী, মানব আচরণ এমনভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত যা সর্বজনীন নীতি হিসেবে গ্রহণযোগ্য। কবর ভাঙা, মরদেহ উত্তোলন এবং আগুনে দাহ— এগুলো মানব মর্যাদা ও নৈতিকতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। আইন নিজের হাতে নেওয়া কখনো ন্যায় প্রতিষ্ঠার উপায় হতে পারে না।

সমাজবিজ্ঞানের আলোকে গোয়ালন্দের ঘটনা উগ্র সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। রবার্ট মর্কসের দ্বন্দ্ব তত্ত্ব অনুসারে, সমাজে সম্পদের ও ক্ষমতার অসম বণ্টন সংঘর্ষের জন্ম দেয়। এখানে দেখা গেছে, ধর্মীয় আবেগকে রাজনৈতিক ও সামাজিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। জনতা আইন ও সামাজিক কাঠামোকে উপেক্ষা করে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।

ফ্লডের গুজব তত্ত্ব অনুসারে, জনতা তথ্যের অভাবে বা উসকানিতে উত্তেজিত হয়। গোয়ালন্দের ঘটনাও প্রমাণ করে, গুজব ও উত্তেজনা সহজেই জনতাকে নৈতিক সীমা অতিক্রম করতে প্ররোচিত করতে পারে। প্রশাসনের ভূমিকা এখানে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গোয়ালন্দের ঘটনায় প্রশাসন পূর্বে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনিক ব্যর্থতা, স্থানীয় রাজনৈতিক চাপ এবং জনতার অতিরিক্ত উত্তেজনা— সব মিলিয়ে একটি উগ্র সহিংসতার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।

রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতার অভাবও ঘটনার একটি বড় কারণ। রাজনৈতিক নেতা এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উত্তেজনা কমাতে ব্যর্থ হলে সাধারণ মানুষ সহজেই উসকানিতে প্ররোচিত হয়। গোয়ালন্দের এই সহিংসতা বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় এক ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। ধর্মীয় আবেগকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সহিংসতা শুধু ব্যক্তি বা পরিবারকে আঘাত করে না, বরং রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা, সামাজিক সহাবস্থান এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।

ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে কেউ যেন সহিংসতা উসকে দিতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান নেওয়া জরুরি। স্থানীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা ও সামাজিক সংলাপ তৈরি করতে হবে। সহিংসতায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে, যাতে এমন ঘটনা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। রাষ্ট্র, সমাজ ও নাগরিকের দায়িত্ব হলো সহিংসতা প্রতিরোধ করা, আইন এবং নৈতিকতার প্রতি শ্রদ্ধা ফিরিয়ে আনা।

আমরা যদি শিক্ষার আলোকে সমাজকে গড়ে তুলি— যেখানে ভক্তি কেবল বাহ্যিক আনুগত্য নয়, বরং ভালো কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে তাহলে হিংসা, ঘৃণা, স্বার্থপরতা ও অহঙ্কার কমানো সম্ভব। বাবার পীরের শিক্ষা যেমন বলেছিল, ‘মানুষের মূল পরিচয় তার ভালো কাজ।’ এই ভালো কাজের মধ্য দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রকৃত গণতন্ত্র, ন্যায়নীতি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে।

লেখক : গবেষক ও রাজনৈতিক কলাম লেখক

ঢাকা/রাহাত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণতন ত র র জন ত ক স ব ধ নত ন র ল হক অন ষ ঠ ন ম নব ক স ন দর র আল ক আম দ র প রক শ র জন য ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • আমেরিকানদের হাতে সময় আছে মাত্র ৪০০ দিন
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • হুংকার দিয়ে জাতীয় নির্বাচন ঠেকান যাবে না: জাহিদ হোসেন
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
  • বাংলাদেশ পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে: আইরিন খান
  • কেমন সংবিধান চান, জানালেন এনসিপি নেতা আখতার হোসেন
  • বাংলাদেশে নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় ইইউ