পাশবিকতার হিংস্র আগুনে পুড়ছে মানবতা
Published: 7th, September 2025 GMT
ধরুন একজন মাজারপন্থি লোক নিজেকে ‘ঈশ্বর’ দাবি করল। তাহলে আমরা তার সম্পর্কে কি ধারণা করি? আমরা সাধারণত বলি যে, লোকটি ‘পাগল’ হয়ে গেছে অথবা অস্বাভাবিক আচরণ করছে। কিন্তু এজন্য কি আমরা তাকে ফতোয়া বা ব্যাখ্যা দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলতে পারি? এটা কি ধর্মের কাজ? ন্যায়নীতির কাজ? মানুষের মর্যাদার প্রতি সম্মানের কাজ? না, এটা বর্বরতা। হিংস্রতা। অমানবিকতা। এটি মানুষের অন্তর্নিহিত পাশবিকতাকে প্রকাশ করছে। ধর্মীয় বা সামাজিক কোনো যুক্তি দিয়ে এটি বৈধ করা যায় না।
আমরা কথায় কথায় গণতন্ত্রের কথা বলি। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলি। ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলি। ন্যায়নীতির কথা বলি। মানবতার কথা বলি। বাস্তবে আমাদের অন্তরে লুকিয়ে আছে হিংস্রতা, বর্বরতা, অমানবিকতা, স্বৈরতান্ত্রিকতা, পাশবিকতা। এই অন্তঃস্থ হিংস্রতার প্রতিফলন ঘটছে প্রতিদিনকার সামাজিক, ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ঘটনার মধ্যে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা সেই বাস্তবতার উদাহরণ। স্থানীয়ভাবে ‘ইমাম মাহাদি’ দাবিকারী নুরুল হক বা নুরাল পাগলার কবর ভেঙে মরদেহ উত্তোলন করে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া— এই ঘটনা শুধু একটি প্রথাগত বা ধর্মীয় বিরোধের ফল নয়। এটি হলো সমাজের ভেতরের হিংস্রতা, স্বার্থপরতা ও অমানবিকতার প্রতিফলন।
ঘটনার সূত্রপাত নুরুল হকের কবরকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি তার মৃত্যু হলে গোয়ালন্দ দরবার শরিফে একটি উঁচু কাঠামো তৈরি করে দাফন করা হয়। স্থানীয় কিছু সম্প্রদায় সেটিকে শরিয়তবিরোধী মনে করে। প্রশাসন বিষয়টি মীমাংসা করার চেষ্টা করলেও শুক্রবার জুমার নামাজের পর উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। প্রথম দফার ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের পর দ্বিতীয় দফায় হামলাকারীরা কবর খুঁড়ে মরদেহ উত্তোলন করে পদ্মার মোড়ে নিয়ে যায় এবং সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়। হামলাকারীরা দাবি করেছে, এভাবেই নুরুল হকের ‘ভণ্ডামি’ শেষ হয়েছে।
অন্যদিকে, নুরুল হকের ছেলে দাবি করেছেন, তার বাবাকে শরিয়তের আলোকে যথাযথভাবে দাফন করা হয়েছিল। তিনি মিথ্যা অপপ্রচারের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু ঘটনার প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পাই— সমাজে হিংসার স্বাভাবিকীকরণ, ধর্মীয় উগ্রতা, ও ব্যক্তিস্বার্থের জন্য ন্যায়ের প্রতি অবহেলা।
গোয়ালন্দের ঘটনা আমাদের দেখাচ্ছে কীভাবে স্বার্থ, অহঙ্কার এবং সামাজিক ঘৃণা মানুষের অন্তরে হিংস্রতার জন্ম দেয়। এই হিংস্রতা আমাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক জীবনে নানা রূপে প্রকাশ পায়। মাজার থেকে লাশ উত্তোলন, কাউকে ভিন্নমতের বলে পিটিয়ে মারা, বাড়িঘর জ্বালানো, স্বার্থের জন্য হত্যা করা, গলায় জুতার মালা পড়ানো, মন্দির-মাজারে হামলা এর উদাহরণ।
এ সব ঘটনার আলোকে আমি ফিরে তাকাই আমার শৈশবের স্মৃতিতে। স্বরূপকাঠির সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড়ে, সাংরেঙ্গকাঠি ইউনিয়নের বিষ্ণুকাঠি গ্রামে আমার শৈশব কাটে। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে হেঁটে গেলে করফার হাট বসত— সপ্তাহে দু’দিন, সোম ও বৃহস্পতিবার। হাটের পশ্চিমে এক কিলোমিটার গেলে আমার বাবার পীরের বাড়ি। আমার বাবা সুফিবাদী লোক, মাজারপন্থী। তার পীরের নাম মাওলানা ফজলুল কারী, লোকে তাকে ‘ফজলা কারী’ বলে জানত। আমি তখন নাইন ক্লাসে পড়ি, কিন্তু মনে আছে, আমি তাকে ‘দাদু’ ডাকতাম। তিনি আমাকে অনেক স্নেহ করতেন। তার স্ত্রীকে দাদী, সন্তানদের কাকা ও ফুপু বলে ডাকতাম। তারা সকলেই আমাকে স্নেহ করতেন।
প্রায় প্রতি বৃহস্পতিবার তাদের বাড়িতে গানের অনুষ্ঠান হতো। সেখানে গ্রামের হিন্দু-মুসলমান সবাই আসত। সারারাত গান ও জিকির হতো। পীরের অনুসারী ও মরদিরা পীরকে পা ছুয়ে কপালে ও বুকে হাত লাগিয়ে সম্মান জানাত। ছোট বেলায় আমি ভাবতাম, তার পা তো ধোয়া, পরিষ্কার, ধুলোর লেপ নেই, তবু কেন এমন আচরণ? পরে বুঝতে পারি, এটি শুধু শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রতীক।
এই অনুষ্ঠানে সবাই যেন ভেদাভেদ ভুলে যায়। সবাই তাদের পীরের আদেশ পালন করে। পীর একদিন বলেছিলেন, ‘তোমরা আমাকে যে সম্মান কর তা কাজ দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। আমি ভক্তিতে সম্মানিত বোধ করি না। আমি চাই আমার মুরিদরা যেন ভালো কাজ করে, এবং সেই ভালো কাজের জন্য সমাজ তাকে ভালো বলুক। তখনই আমি সম্মান বোধ করবো। মানুষ আমাকেও ভালো বলবে। আর যারা শুধু ভক্তি করবে, কিন্তু ভালো কাজ করবে না, তারা আমার মুরিদ নয়। তারা দয়া করে আমাকে ভক্তি না করলে খুশি হব। আমি ভক্তি বলতে ভালো কাজকে বুঝি। মানুষের মূল পরিচয় তার ভালো কাজ।’
আমি বাবার পীরের অনেক কথা শুনেছি। দুই/তিন বছর আমি বাবার সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে মাঝে মাঝে যেতাম। খাজা মাইনুদ্দিন চিশতীয়াসহ অনেককে বাংলাদেশের সকল পীরের মাজারকে তারা সম্মান করতেন। কোনো ধর্মীয় বা জাতপাতের বা অর্থবিত্তের ভেদাভেদ তাদের মনে বা আচরণে দেখিনি। কিন্তু যা দেখেছি, তা হলো আমার নানা ও দাদা ভাইয়ের আচরণে— নামাজ-রোজা করা, কিন্তু মাজারপন্থিদের ঘৃণা করা, জাতপাত মানা, ভিন্ন ধর্মের মানুষকে ও তাদের ধর্মকে ছোট করা, তাচ্ছিল্য করা। শুধু নিজস্ব সম্প্রদায়ের মানুষকে শ্রেষ্ঠ মনে করা। হিংসা ও অহঙ্কার তাদের মধ্যে ছিল ভরপুর।
এখানেই সংঘর্ষ— একদিকে সুফিবাদী শিক্ষা, অন্তর্ভুক্তিমূলক অনুষ্ঠান, মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে মিলনের প্রজ্ঞা; অন্যদিকে হিংস্রতা, স্বার্থপরতা, বর্বরতা। গোয়ালন্দের ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয়, যে মানব সমাজে গণতন্ত্রের কথা কেবল কথার মধ্যে থাকলে কোনো পরিবর্তন আসে না। গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ন্যায়নীতি কেবল তখনই অর্থবহ হয় যখন মানুষ অন্তরে মানবিক ও নৈতিক মূল্যবোধ ধারণ করে।
কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রে টেকসই পরিবর্তন আনতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন মানুষের চিন্তা ও চেতনার রূপান্তর। কেবল আইনকানুন, অবকাঠামো বা প্রযুক্তি পরিবর্তন করলেই সমাজ বদলায় না, যদি মানুষের মানসিকতা পুরোনো বিশ্বাস আর সংকীর্ণতায় আবদ্ধ থাকে। মানুষের চিন্তা যখন সীমাবদ্ধ, তখন উন্নয়ন একপাক্ষিক ও অস্থায়ী হয়। সবচেয়ে বড় বাধা হলো গোঁড়ামি, কুসংস্কার, দলীয় অন্ধতা ও অসহিষ্ণুতা। তাই রাজনৈতিক সংস্কৃতি, শিক্ষা, ধর্ম, অর্থনীতি ও সামাজিক সম্পর্কের প্রতিটি স্তরে পরিবর্তনের জন্য আগে দরকার চিন্তার কাঠামোর সংস্কার।
সমাজ কিংবা রাষ্ট্রকে যদি সত্যিকার অর্থে সুন্দর, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক করে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন— সুন্দর চিন্তার মানুষ। কারণ সুন্দর চিন্তার মানুষ যা কিছু করে, তা-ই হয়ে ওঠে সৃজনশীল, অর্থবহ ও কল্যাণকর। তাদের চিন্তা থাকে মানবিক, কর্ম থাকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পক্ষে এবং দৃষ্টিভঙ্গি থাকে অন্তর্ভুক্তিমূলক। এই মানুষরাই সমাজে গড়ে তোলে নৈতিকতা, নন্দনবোধ ও মূল্যবোধের ভিত। ফলে সমাজ-রাষ্ট্রের যাবতীয় সৃষ্টি ও কাঠামো হয়ে ওঠে সুন্দর, গঠনমূলক ও টেকসই।
এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, রাষ্ট্রের সৌন্দর্য তার সড়ক, দালান বা আইন-কানুনে নয়; বরং সেই রাষ্ট্রে বসবাসকারী মানুষের চিন্তা, চেতনা ও দায়িত্ববোধেই নিহিত থাকে। তাই সুন্দর রাষ্ট্র গড়ার যাত্রা শুরু হয় সুন্দর চিন্তার মানুষ তৈরি করার মধ্য দিয়ে। আমাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন মানবিক, যুক্তিনির্ভর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক মানসিকতা।শিক্ষাব্যবস্থা, পরিবার, গণমাধ্যম ও রাজনীতিকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যাতে চিন্তার মুক্তি এবং মানবিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটে। পরিবর্তনের প্রকৃত সূচনা মননে, অন্তরে এবং চেতনায়।
দর্শনের দৃষ্টিকোণ থেকে গোয়ালন্দের ঘটনা একটি নৈতিক ও মানবিক সংকট নির্দেশ করে। ইমানুয়েল কান্তের নৈতিক তত্ত্ব অনুযায়ী, মানব আচরণ এমনভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত যা সর্বজনীন নীতি হিসেবে গ্রহণযোগ্য। কবর ভাঙা, মরদেহ উত্তোলন এবং আগুনে দাহ— এগুলো মানব মর্যাদা ও নৈতিকতার স্পষ্ট লঙ্ঘন। আইন নিজের হাতে নেওয়া কখনো ন্যায় প্রতিষ্ঠার উপায় হতে পারে না।
সমাজবিজ্ঞানের আলোকে গোয়ালন্দের ঘটনা উগ্র সহিংসতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। রবার্ট মর্কসের দ্বন্দ্ব তত্ত্ব অনুসারে, সমাজে সম্পদের ও ক্ষমতার অসম বণ্টন সংঘর্ষের জন্ম দেয়। এখানে দেখা গেছে, ধর্মীয় আবেগকে রাজনৈতিক ও সামাজিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়েছে। জনতা আইন ও সামাজিক কাঠামোকে উপেক্ষা করে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে।
ফ্লডের গুজব তত্ত্ব অনুসারে, জনতা তথ্যের অভাবে বা উসকানিতে উত্তেজিত হয়। গোয়ালন্দের ঘটনাও প্রমাণ করে, গুজব ও উত্তেজনা সহজেই জনতাকে নৈতিক সীমা অতিক্রম করতে প্ররোচিত করতে পারে। প্রশাসনের ভূমিকা এখানে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গোয়ালন্দের ঘটনায় প্রশাসন পূর্বে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু যথাযথ নিয়ন্ত্রণ না থাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনিক ব্যর্থতা, স্থানীয় রাজনৈতিক চাপ এবং জনতার অতিরিক্ত উত্তেজনা— সব মিলিয়ে একটি উগ্র সহিংসতার দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতার অভাবও ঘটনার একটি বড় কারণ। রাজনৈতিক নেতা এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা উত্তেজনা কমাতে ব্যর্থ হলে সাধারণ মানুষ সহজেই উসকানিতে প্ররোচিত হয়। গোয়ালন্দের এই সহিংসতা বাংলাদেশের সামাজিক বাস্তবতায় এক ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। ধর্মীয় আবেগকে কেন্দ্র করে সংগঠিত সহিংসতা শুধু ব্যক্তি বা পরিবারকে আঘাত করে না, বরং রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা, সামাজিক সহাবস্থান এবং সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।
ধর্মীয় আবেগকে পুঁজি করে কেউ যেন সহিংসতা উসকে দিতে না পারে, সে বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর অবস্থান নেওয়া জরুরি। স্থানীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদি সচেতনতা ও সামাজিক সংলাপ তৈরি করতে হবে। সহিংসতায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে, যাতে এমন ঘটনা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকে। রাষ্ট্র, সমাজ ও নাগরিকের দায়িত্ব হলো সহিংসতা প্রতিরোধ করা, আইন এবং নৈতিকতার প্রতি শ্রদ্ধা ফিরিয়ে আনা।
আমরা যদি শিক্ষার আলোকে সমাজকে গড়ে তুলি— যেখানে ভক্তি কেবল বাহ্যিক আনুগত্য নয়, বরং ভালো কাজের মাধ্যমে প্রমাণিত হবে তাহলে হিংসা, ঘৃণা, স্বার্থপরতা ও অহঙ্কার কমানো সম্ভব। বাবার পীরের শিক্ষা যেমন বলেছিল, ‘মানুষের মূল পরিচয় তার ভালো কাজ।’ এই ভালো কাজের মধ্য দিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রকৃত গণতন্ত্র, ন্যায়নীতি ও মানবিকতা প্রতিষ্ঠিত হবে।
লেখক : গবেষক ও রাজনৈতিক কলাম লেখক
ঢাকা/রাহাত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গণতন ত র র জন ত ক স ব ধ নত ন র ল হক অন ষ ঠ ন ম নব ক স ন দর র আল ক আম দ র প রক শ র জন য ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি করুন: আকবর খান
ঢাকা-৮ আসনে দ্রুত নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানিয়েছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খান। তিনি বলেন, “ভোটের অধিকার জনগণের পবিত্র আমানত, এটি সচেতনভাবে প্রয়োগ করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা জননেতা সাইফুল হক-এর ঢাকা-৮ আসনে নির্বাচনী গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে তিনি একথা বলেন।
গণসংযোগের শুরুতে ঢাকা মহানগর কমিটির সভাপতি মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাকের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
সেখানে আকবর খান বলেন, “নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে অবিলম্বে ভোটের গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। গত কয়েকটি জাতীয় নির্বাচনে—২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে—ঢাকা-৮ আসনের বহু নাগরিক ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। যে তরুণের এখন বয়স ২৫ বা ২৬, তারা কখনো ভোট দিতে পারেনি, ভোট কী তা জানে না- এটি গণতন্ত্রের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬-১৭ বছর ধরে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং আমাদের নেতা সাইফুল হক জনগণের ভোটাধিকারের আন্দোলনে রাজপথে সংগ্রাম করে আসছেন। এর জন্য জেল-জুলুম, নির্যাতন সহ্য করেও তিনি থেমে থাকেননি। ভোটাধিকার গণমানুষের দীর্ঘ লড়াই ও ত্যাগের ফসল। এই অধিকার ভুল ব্যক্তিকে নির্বাচিত করার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।”
আকবর খান বলেন, “জননেতা সাইফুল হক গণমানুষের পরীক্ষিত নেতা। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের জনগণ যেন তাকে ভোট দিয়ে নিজেদের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার কথা ও দীর্ঘ বঞ্চনার ইতিহাস সংসদে তুলে ধরার সুযোগ করে দেন- এটাই আমাদের আহ্বান।”
গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি বাংলাদেশ ব্যাংক এলাকা থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর, ফকিরাপুল, কালভার্ট রোড হয়ে বিজয়নগরে এসে শেষ হয়। এতে শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা সিকদার হারুন মাহমুদ, মীর রেজাউল আলম, কবি জামাল সিকদার, ফাইজুর রহমান মুনির, বাবর চৌধুরী, মহানগর নেতা যুবরান আলী জুয়েল, সালাউদ্দিন, রিয়েল মাতবর, আরিফুল ইসলাম, মুজিবুল হক চুন্নু, গোলাম রাজিব, মাহমুদুল হাসান খান, ফয়েজ ইবনে জাফর, নান্টু দাস, শিবু মহন্ত ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
ঢাকা/এএএম/এস