ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের পরে যেসব অভিযোগ এসেছে, সেগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আবেদনপত্রগুলো অনেকটাই অস্পষ্ট। আবেদনকারীদের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই।

৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে বড় জয় পায় ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’। এই প্যানেলের প্রার্থীরা ভিপি (সহসভাপতি), জিএস (সাধারণ সম্পাদক), এজিএসসহ (সহসাধারণ সম্পাদক) ২৮টি পদের মধ্যে ২৩টিতেই জিতেছেন।

এই নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপি হয়েছে সন্দেহে নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবদুল কাদের।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আমাদের বিশুদ্ধতার জন্য আমরা যে ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, সে ক্ষেত্রে আইনগত মতামতও নিয়েছি। আমাদের নিজস্ব পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত বিজ্ঞ আইনজীবীদের পরামর্শ অনুযায়ী আমরা প্রত্যেকটি দরখাস্ত/আবেদনপত্র বিচার-বিশ্লেষণ করে প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে জবাব প্রদান করব।’

ছাত্রদল–সমর্থিত প্যানেল সংবাদ সম্মেলন করে যেসব অভিযোগ জানিয়েছে, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘কয়েকজন দরখাস্তকারী/আবেদনকারী আমাদের কাছ থেকে নির্বাচনের দিন ধারণকৃত এবং পরবর্তীতে সংরক্ষণকৃত সিসিটিভি (ক্লোজ সার্কিট) ফুটেজের পুরোটাই চেয়েছেন। আমরা বিষয়টি খুবই গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করেছি এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের মতামতও নিয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ কোনো পাবলিক ডকুমেন্ট নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ধারণকৃত এবং সংরক্ষণকৃত সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত আমানত, যা নির্বাচনসংক্রান্ত যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাহায্যকারী সাক্ষ্য হিসেবে বা ডকুমেন্ট হিসেবে ব্যবহার করতে পারি।’

আবেদনপত্রগুলো অনেকটাই অস্পষ্ট উল্লেখ করে বলা হয়, ‘আমরা আবেদনপত্রগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেছি। আবেদনপত্রগুলো অনেকটাই অস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট কী কারণে, কোন সময়ের, কোন বিষয়ে সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে হবে, তা দরখাস্তে উল্লেখ করা হয়নি। এমতাবস্থায় কতিপয় দরখাস্তে কতগুলো সাধারণ প্রশ্নমালা কিংবা কতগুলো অত্যন্ত ব্যাপকতর বিষয়ে প্রশ্নের অবতারণা করা হয়েছে, যেগুলোতে তেমন কোনো সারবত্তা নেই এবং আবেদনকারীগণের সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগও নেই।’

এরপরও কোনো প্রার্থী যদি সুনির্দিষ্ট কোনো সময়ের বা কোনো একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনা পর্যালোচনা করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান, তাঁরা যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নির্ধারিত কোনো স্থানে তা দেখতে বা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

ভোট প্রদানকারী ভোটারদের স্বাক্ষরিত তালিকা প্রদানের বিষয়ে প্রশাসন বলেছে, এ ক্ষেত্রেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ মনে করে, এটি একটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও গোপনীয় তালিকা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর নির্বাচনসংক্রান্ত বিধিতে এটির কপি (অনুলিপি) প্রদানের কোনো বিধান নেই। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা সংরক্ষণের স্বার্থে এটি দেওয়া কর্তৃপক্ষ যথাযথ মনে করে না। তার ওপর দরখাস্ত বা আবেদনপত্রে ওই তালিকা কেন দরকার, সেটিও সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়নি।

আরও পড়ুনগাউসুল আজম মার্কেটে ব্যালট পাওয়ার বিষয়টি কেন পরিষ্কার করা হচ্ছে না, প্রশ্ন আবিদ-উমামা-কাদেরের২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ব্যালট পেপার নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যালট পেপার ছাপানোর প্রতিষ্ঠান বা ভেন্ডরদের পরিচয় সচেতনভাবে গোপন রাখা হয়েছে। এই গোপনীয়তা রক্ষা একটি স্বীকৃত পদ্ধতি। এখানে নিশ্চিত করা যাচ্ছে যে সমস্ত নিয়ম মেনে একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া বা দরপত্র আহ্বানের মাধ্যমে একটি পরীক্ষিত ও দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ব্যালট পেপার ছাপানোর পরে নির্দিষ্ট পরিমাপে কার্টিং করে তা ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যানিংপূর্বক মেশিনের পাঠযোগ্যতা নিশ্চিত করে সিলগালাকৃত প্যাকেটে সরবরাহ করেন।

আরও পড়ুন৭ সেপ্টেম্বর গাউসুল আজমের ছাপাখানায় ডাকসুর বিপুলসংখ্যক ব্যালট অরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায়: ছাত্রদল২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যে ওএমআর মেশিনে স্ক্যানিং করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ সম্পন্ন করা হয়, তা নীলক্ষেতের কোনো দোকানে সম্ভব নয় উল্লেখ করে বলা হয়, সুতরাং যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ গোপনীয়তা রক্ষা করে ব্যালট পেপার ছাপানোর কাজ করা হয়েছে, তাতে এটি অরক্ষিত থাকার সুযোগ নেই। এ ছাড়া নির্বাচনের আগে-পরে বা গণনার সময়ও সংশ্লিষ্ট প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট, পর্যবেক্ষক, সাংবাদিকসহ কেউই এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করেননি। নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ব্যালট পেপারের মুদ্রণ নিয়ে অভিযোগের কোনো ভিত্তি আছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করে না।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সব আবেদন, দরখাস্ত বা অভিযোগ পরীক্ষা–নিরীক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং যথাসময়ে প্রত্যেককে জবাব প্রেরণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আরও পড়ুনভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স প ট ম বর দরখ স ত স রক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

মেহেরপুর জেলা পরিষদের শিক্ষাবৃত্তি, এসএসসিতে জিপিএ ৪.৮০ প্রয়োজন

মেহেরপুর জেলা পরিষদের রাজস্ব তহবিল হতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এ জেলার অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের এককালীন শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হবে। জেলা পরিষদের নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে।

শিক্ষাগত যোগ্যতা—
১. আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই মেহেরপুর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা এবং সরকার অনুমোদিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করা নিয়মিত শিক্ষার্থী হতে হবে।
২. আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীকে ২০২৪ ও ২০২৫ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় এবং ২০২৫ সালের অনুষ্ঠিত এসএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় ন্যূনতম জিপিএ ৪.৮০ থাকতে হবে।

শিক্ষাবৃত্তির আবেদন—
১. আবেদনপত্রের নমুনা ফরম ওয়েবসাইট অথবা জেলা পরিষদ, মেহেরপুরের কার্যালয় হতে সংগ্রহ করা যাবে।
২. নির্ধারিত ফরমে আবেদনপত্র ১২ অক্টোবর ২০২৫ তারিখের অফিস চলাকালীন সময়ের মধ্যে সরাসরি অথবা ডাকযোগে জেলা পরিষদ, মেহেরপুরের কার্যালয়ে পৌঁছাতে হবে।
৩. আবেদনপত্রের নির্ধারিত তারিখের পরে কোনো আবেদন গ্রহণযোগ্য নয়।
৪. অসম্পূর্ণ, ত্রুটিযুক্ত বা নির্ধারিত সময়ের পরে প্রাপ্ত আবেদনপত্র সরাসরি বাতিল বলে গণ্য হবে।

আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৬: তিন বিষয়ে প্রশ্নকাঠামো ও নম্বর বিভাজনে পরিবর্তন২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আবেদনের সঙ্গে যা লাগবে—
১. আবেদনপত্রের সঙ্গে মূল মার্কশিটের সত্যায়িত ফটোকপি, সম্প্রতি তোলা এক কপি পাসপোর্ট ও এক কপি স্ট্যাম্প সাইজের সত্যায়িত ছবি, নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানপ্রধানের সুপারিশ ও প্রত্যয়নপত্র, নাগরিকত্ব সনদের মূল কপি এবং অভিভাবকের আয়ের উৎস ও বার্ষিক আয়বিষয়ক প্রত্যয়নপত্র (প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসার কর্তৃক স্বাক্ষরিত) অবশ্যই সংযুক্ত করতে হবে।
২.  আবেদনপত্র নিজ হাতে পূরণ করতে হবে।
# আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ।
*বিস্তারিত তথ্য  জানতে ওয়েবসাইট

আরও পড়ুনলন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসে ফ্রি অনলাইন কোর্স, পেশাজীবী এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়ার ইউএসটি স্কলারশিপ প্রোগ্রাম, বৃত্তি ৩০০টি৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেহেরপুর জেলা পরিষদের শিক্ষাবৃত্তি, এসএসসিতে জিপিএ ৪.৮০ প্রয়োজন
  • ডাকসু নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের জবাব দিল প্রশাসনের
  • জকসুর নীতিমালায় পরিবর্তন চায় ছাত্রদল
  • প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এডি পদে চাকরি, নবম গ্রেডে নেবে ২৫ জন