চট্টগ্রামে ‘ডিজিট্যাক্ট’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি
Published: 25th, September 2025 GMT
বর্তমান ডিজিটাল যুগে কোনো পণ্য গ্রাহকের কাছে দ্রুত পৌঁছানো কোম্পানিগুলোর কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশলের। আর সেই কৌশলগুলো নিয়ে আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিযোগিতায় নিজেদের কৌশল উপস্থাপন করেন শিক্ষার্থীরা। সবাইকে ছাপিয়ে বিজয়ী হয় চট্টগ্রামের ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি।
শিক্ষার্থীদের আধুনিক ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কৌশল সম্পর্কে ধারণা দিতে ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে শুরু হয় আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল মার্কেটিং প্রতিযোগিতা ‘ডিজিট্যাক্ট ২০২৫’। আজ বৃহস্পতিবার সপ্তাহব্যাপী এ আয়োজনের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয় নগরের দ্য পেনিনসুলা হোটেলে। এতে চূড়ান্ত পর্বে উঠে আসা পাঁচটি দল তাদের মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ও কৌশল উপস্থাপন করে।
চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় চট্টগ্রামের ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৫টি দল অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা কেস এনালাইসিস, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন ডিজাইন এবং ফোকাস গ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা ও সৃজনশীলতা প্রদর্শনের সুযোগ পান। আয়োজনটির পৃষ্ঠপোষক ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড (ইবিএল), মিডিয়া পার্টনার এটিএন বাংলা এবং ডিজিটাল পার্টনার প্রথম আলো ডটকম।
চূড়ান্ত পর্বে সেরা মার্কেটিং ক্যাম্পেইন ও কৌশল উপস্থাপন করে বিজয়ী হয় ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির দল ‘ট্যাক্ট ট্রিও’। রানার্সআপ হয়েছে চিটাগং ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির দল ‘দ্য কনটেন্ট চেপ্লিংস’ ও ‘থিংক টেঙ্কার্স’। চূড়ান্ত পর্বে বিচারক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর, ইস্টার্ন ব্যাংকের নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং ডিজিটাল মার্কেটিং এজেন্সি ডিজিফিক্সের ফাউন্ডার ইমতিনান আখতার খান।
বিজয়ী ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটি দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ ড় ন ত পর ব ইউন ভ র স ট
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা