দুই সপ্তাহ চিনি না খেলে শরীরে যেসব পরিবর্তন আসে
Published: 26th, September 2025 GMT
ডেজার্ট কিংবা চায়ের সঙ্গে আমরা প্রতিদিন নিজেদের অজান্তে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিনি খাই। দীর্ঘমেয়াদে প্রতিদিন চিনি খেলে হজমের সমস্যা, ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘একটানা দুই সপ্তাহ চিনি না খেলে শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে।’
প্রথম তিন দিন
আরো পড়ুন:
আজ বিশ্ব ফুসফুস দিবস: ফুসফুস ভালো রাখতে যা করতে পারেন
হার্ট অ্যাটাকের এই লক্ষণগুলো এড়িয়ে যাবেন না
চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার পরে প্রথম তিন দিন মাথাব্যথা, পেটব্যথা, ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে। এতে চিন্তার কিছুই নেই, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। চিনির যে ক্ষতিকর উপাদান শরীরে জমা ছিল, তা নিষ্কাশন শুরু হলে এসব সমস্যা দেখা দিতে পারে।
তিন থেকে সাত দিন
চিনি খাওয়া ছেড়ে দেওয়ার পরে বুঝতে পারবেন যে আপনার মনোযোগ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এমনকি শক্তিও বাড়তে শুরু করবে।
আট থেকে দশ দিন
হজম শক্তি বাড়তে শুরু করবে। অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ভারসাম্য খুঁজে পাবে। আর আপনার পেটের ফোলাভাব, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা কমতে শুরু করবে।
এগারো থেকে চৌদ্দ দিন: মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও কমতে শুরু করবে। এ সময় ক্ষুধা কমে গেলেও বারবার খেতে ইচ্ছা করবে না বলে ওজনও কমে যাবে।
চিনি খাওয়া বন্ধ করলে আরও যেসব উপকার পাবেন
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমবে, হৃদ্রোগে ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি কমবে। শরীরে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকবে। কিডনির সমস্যা, চোখের সমস্যা দেখা দেয় এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে আসবে। ত্বকের স্বাস্থ্যও ভা থাকবে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সমস য র সমস
এছাড়াও পড়ুন:
জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।
একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?
চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।
আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।
বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।
লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা