বন্দরে দুর্গম পূজামণ্ডপে ঘুরে ঘুরে খোঁজখবর নিলেন ডিসি জাহিদুল
Published: 29th, September 2025 GMT
বন্দর উপজেলার অত্যন্ত প্রত্যন্ত অঞ্চলের মুছাপুর ইউনিয়নের চর শ্রীরামপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদীর ধারে অবস্থিত শ্রী শ্রী ব্রহ্মা মন্দির। বহু পুরাতন হলেও এই মন্দিরে পূর্বে কোনো জেলা প্রশাসক পরিদর্শনে আসেননি। শিল্পনগরীর এই চর এলাকা অনেকটা কম জনবসতিপূর্ণ।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সপ্তমীর সন্ধ্যায় হঠাৎ উপস্থিত হন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। মন্দির কমিটি ও উপস্থিত ভক্তবৃন্দ জেলার অভিভাবককে পেয়ে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত হন। সনাতন ধর্মীয় রীতিনুযায়ী জেলা প্রশাসককে স্বাগত জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মন্দির ঘুরে ভক্তদের সঙ্গে আলাপচারিতায় খোঁজখবর নেন। তিনি জানতে চান, নিরাপত্তা ইস্যুসহ কোনো ধরনের সমস্যা আছে কি না।
শ্রী শ্রী ব্রহ্মা মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী শ্যামল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “পাকিস্তান আমলে আমাদের এই মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু এই মন্দিরে কখনো কোনো জেলা প্রশাসক আসেননি।
এলাকাটি জেলার অন্যান্য অঞ্চল থেকে কিছুটা কম জনবসতিপূর্ণ এবং দুর্গম চরাঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় আমরা অনেকটা উপেক্ষিত ছিলাম। মহা সপ্তমীর এই দিনে ডিসি স্যার উপস্থিত হওয়ায় আমরা সনাতন ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের সবাই খুব উচ্ছ্বসিত ও আনন্দিত।”
তিনি আরও জানান, জেলা প্রশাসক তাদের মন্দির পরিদর্শন শেষে পার্শ্ববর্তী আরও তিনটি মন্দির ঘুরে দেখেন এবং আর্থিক সহযোগিতাও প্রদান করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উৎসাহ দিতে আমরা চেষ্টা করছি প্রতিটি উপজেলায় যতগুলো সম্ভব মন্দির পরিদর্শন করতে। আমরা তাদের পাশে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। এই দেশ আমার ও আমাদের সবার।
আমরা সকলে মিলে কাঙ্খিত এমন একটা সমাজব্যবস্থা গড়ে তুলব, যেখানে সিস্টেম নিজেই কাজ করবে কেউ সিস্টেমকে কাজ করাবে না। প্রতিটি ধর্ম-বর্ণ-গোত্রের মানুষ তাদের নিজেদের ঐতিহ্য নিয়ে বেড়ে উঠবে।”
দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় কাজের অতিরিক্ত চাপ পড়ছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক বলেন, “যে কোনো অনুষ্ঠান যাতে সুন্দরভাবে ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য আমরা পরিকল্পনা গ্রহণ করি। জেলা প্রশাসন সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করে।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আমাদের সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী পুলিশ বাহিনী, বিজিবি, আনসার বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কাজ করছে। সরকারের সব দপ্তর থেকে সব কাজ মনিটর করা হচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন, “ইতিমধ্যে আমি আড়াইহাজার উপজেলা থেকে শুরু করে রূপগঞ্জ এবং আজকে বন্দরের মন্দিরগুলো পরিদর্শন করেছি। আমাদের প্রত্যাশার চেয়েও অনেক সুন্দরভাবে শারদীয় দুর্গাপূজার সব অনুষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে।
দেশের সব ধর্মের মানুষ একসাথে সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপূজা আয়োজন করছে, এতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা নেই। একজন জেলা প্রশাসক হিসেবে আমি মনে করি, জেলার প্রতিটি মানুষের প্রতিটি অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার দায়িত্ব আমার ওপরও বর্তায়। সেই লক্ষ্যে আমি প্রতিটি কার্যক্রম নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা সরকারি চাকরি করি জনগণের অধিকার ও স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে। সরকারের স্বার্থ ও জনগণের অধিকার রক্ষা করাই আমাদের কাজ। আমরা টিম গঠন করে পরিকল্পনা মাফিক দায়িত্ব পালন করছি।
মানুষ অনেক উদ্দীপনা ও আকাঙ্খা নিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা পালন করছে। এটাই আমাদের বাংলাদেশ। আমরা যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করি, তা বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম এরপর বন্দর উপজেলার শ্রী শ্রী দুর্গামন্দির পঞ্চায়েত কমিটি মণ্ডপ ও শ্রী শ্রী রক্ষা কালী মন্দির পরিদর্শন করেন। পরে তিনি লাঙ্গলবন্দের রাজঘাট ও মুছাপুর এলাকার পূজামণ্ডপও ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শনকালে তিনি মণ্ডপগুলোর সার্বিক খোঁজখবর নেন এবং সুষ্ঠুভাবে ও শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপন করায় সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
এছাড়া দর্শনার্থীদের আপ্যায়নে কোনো ঘাটতি না থাকে এবং সবাই যেন খুশিমনে পূজা উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষ্যে তিনি রক্ষা কালী মন্দিরকে ১০,০০০ টাকা এবং রাজঘাট মণ্ডপকে ১০,০০০ টাকা করে তাৎক্ষণিক আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। জেলা প্রশাসক মণ্ডপগুলোর পরিবেশ ও উৎসাহ-উদ্দীপনার প্রশংসা করেন।
পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট কানিজ ফারজানা শান্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) নাঈমা ইসলাম, বন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ মন দ র প উপস থ ত র উপজ ল ক জ কর আম দ র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
অসুস্থ জামায়াত নেতা মাও. মঈনুদ্দিনের খোঁজখবর নিলেন বিএনপি নেতা টিপু
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাবেক আমীর অসুস্থ মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাক্টিভ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মাওলানা মঈনুদ্দিন আহমাদ দেখতে ছুটে যান তিনি।
এসময়ে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন এবং তার সুস্থতা জন্য দোয়া করেন।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর আমীর মাওলানা আঃ জব্বার, মহানগর ১৮নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ আল আরিফ, ১২নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুম, কৃষক দলনেতা মাহবুল আলম, ১৩নং ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মাসুম খান প্রমুখ।