নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়কে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব যার যার কিন্তু দেশ আমাদের সকলের।

আমরা সবাই মিলে যার যার ধর্ম পালন করব। কিন্তু আমাদের এই কথা মনে রাখতে হবে আমরা সবাই একটা দেশের লোক। হিন্দু মুসলিম আমরা ভাই ভাই সবাই একসাথে মিলেমিশে বসবাস করতে চাই। প্রতিদিনই আমাদের সাথে একে অপরের দেখা হয়।

সুতরাং আমাদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে কোন ভেদাভেদ নেই। বাংলাদেশকে সম্প্রীতির দেশ হিসেবে গড়ে তুলবে বিএনপি। বাংলাদেশ হবে সম্প্রীতি ও সাম্যের।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাষ্টমীতে সিদ্ধিরগঞ্জের বিভিন্ন পূজা মন্ডপ পরিদর্শন করে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে বক্তব্যে তিনি এসব কথাগুলো বলেন। 

তিনি আরও বলেন, সমাজের যখন অনিয়ম দুর্নীতি, খারাপ কাজকে দূর করার জন্য শারদীয় দুর্গাপূজা আমাদের এই বার্তা নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছে আপনাদের পাশে। ঈশ্বরের সম্মান দেখিয়ে আপনারা এই শারদীয় দুর্গোৎসব পালন করবেন আপনারা। 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা আপনাদের পাশে রয়েছে। আপনারা নির্ভয়ে আপনাদের পূজা পালন করবেন। আপনাদের কোন ধরনের সমস্যা হলে আমাদেরকে জানাবেন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি আমরাও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব। 

বিকেল তিনটায় ২নং ঢাকেশ্বরী দেব মন্দির পরিদর্শন শুরু করে শ্রীশ্রী হরিসভা মন্দির, শ্রী শ্রী শীতলা মায়ের মন্দির, নিউ লক্ষ্মীনারায়ণ কটন মিলস সার্বজনীন দূর্গা মন্দির, গোডনাইল হাজারীবাগ দুর্গা মন্দির দক্ষিণ, গোদনাইল হাজারীবাগ উত্তর জেলেপাড়া সার্বজনীন দূর্গা মন্দির শ্রীশ্রী শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন কমিটি মিজমিজি চৌধুরীপাড়া পরিদর্শনের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন। 

পরিদর্শনের সময়ে পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও জেলা ও থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন র য়ণগঞ জ আপন দ র ব এনপ র আম দ র মন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হলো একটু সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এগিয়ে নেওয়া। এ জন্য যে ধরনের সংস্কার দরকার, সেই সংস্কার নিশ্চিত করা। আর কয়েক মাস পর নির্বাচন। নির্বাচন ভালোমতো করার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করার জন্য এখন মনোযোগ দেওয়া দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দরকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক করা। পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনা। অথচ এসব দিকে সরকারের মনোযোগ বা সক্রিয়তা দেখা যাচ্ছে না।

নির্বাচনের এসব বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে যেটিতে তাদের এখতিয়ার নেই, সেই দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতেই সরকারের যত আগ্রহ। রীতিমতো জোরজবরদস্তি করে সরকার এসব চুক্তি করছে। দেশের মানুষ, বিশেষজ্ঞ—কারও কথা না শুনে, জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা না করে ভয় দেখিয়ে একের পর এক চুক্তি করছে সরকার।

একটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি করার কোনো এখতিয়ার এ রকম অস্থায়ী সরকারের থাকে না। এসবের জন্য নির্বাচিত সরকার দরকার হয়। শুধু নির্বাচিত সরকারও এভাবে করতে পারে না। নির্বাচিত সরকার এ ধরনের চুক্তি করলে সেগুলো সংসদে তুলতে হবে, সেখানে তর্ক-বিতর্ক হবে, দেশের মানুষ জানবে। আর কয় মাস পর নির্বাচন। এই সময় সরকারের এই ধরনের চুক্তিতে এত আগ্রহ কেন? বন্দর নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি যদি দেশের উন্নয়নের জন্যই হয়, তাহলে এত গোপনীয়তা, অস্বচ্ছতা ও তাড়াহুড়া কেন?

চুক্তি নিয়ে এই সরকারের অতি আগ্রহ বড় সন্দেহের কারণ। মনে হচ্ছে বিদেশি কোম্পানির কিছু লবিস্ট এই সরকার চালাচ্ছে। তাদের কাজ হলো কোনো না কোনোভাবে বিদেশি কোম্পানির স্বার্থ রক্ষায় গোপনে অস্বচ্ছভাবে চুক্তি করে ফেলা। সেটা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যাতে পরবর্তী কোনো সরকার এসে কিছু করতে না পারে। কিন্তু এই চুক্তির বোঝা বাংলাদেশের মানুষকে ভোগ করতে হবে বহু বছর।

গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জনগণের যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল, স্বচ্ছতা নিয়মনীতি মেনে কাজ হবে, তার প্রতি এটা বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছু নয়। একই সঙ্গে যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন সময় আলাপ-আলোচনা করছে, অথচ সরকারের জাতীয় স্বার্থবিরোধী তৎপরতা নিয়ে তারা যে নিশ্চুপ থাকল, সেটার দায়িত্বও তাদের নিতে হবে।

আমরা দেখেছি, এ রকম চুক্তির আগে সব সময় যুক্তি দেওয়া হয়, বিদেশি কোম্পানি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কোম্পানি। আবার মানুষের মধ্যে এই বোধ তৈরি করা হয় যে আমরা পারব না। আমাদের পক্ষে কিছুই সম্ভব নয়। বিদেশিরা এলে কাজ হবে। আবার আমরা থাকলে দুর্নীতি হবে। বিদেশিরা এলে দুর্নীতি হবে না। এই হীনম্মন্যতা তৈরি করে এবং তার ওপর ভর করে বিদেশি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরা হয়। বিদেশিদের পক্ষে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালাতে থাকে তাদের সুবিধাভোগী দেশি লোকজন। কিন্তু বিদেশিরা এলে যে দুর্নীতি হবে না, সেটার নিশ্চয়তা কীভাবে দেওয়া হয়? আন্তর্জাতিকভাবে কি দুর্নীতি হয় না? চুক্তির আগে মাশুল যে বাড়ানো হলো, এটাও তো দুর্নীতির একটা ধরন।

বিদেশি কোম্পানি যে দক্ষ, আন্তর্জাতিক যে স্বীকৃতি, সেই কোম্পানিগুলো কিন্তু এমনিতেই গড়ে ওঠেনি। জাতীয় সক্ষমতার প্রক্রিয়ার মধ্যে গড়ে ওঠেছে এসব কোম্পানি। বাংলাদেশকেও জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়াতে হবে। সে জন্য নিজেদের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে। একটা দেশ শক্তভাবে দাঁড়াতে পারে, যখন নিজের সক্ষমতা তৈরি হয়। এই সরকার দেশকে বিপন্ন করে তার উল্টো দিকে যাত্রা করছে।

লেখক পরিচয়: অর্থনীতিবিদ ও সম্পাদক, সর্বজনকথা

সম্পর্কিত নিবন্ধ