কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় অপহরণ বন্ধ ও পাহাড়কেন্দ্রিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয়রা।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কক্সবাজার–টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন স্থানীয় জনতা। পরে ছাত্র, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে সমাবেশে অংশ নেন।

আরো পড়ুন:

টেকনাফে ৬ শিশু অপহরণ, পালিয়ে এসেছে ২ জন

টেকনাফে ঘরের দরজা ভেঙে স্থানীয় বাসিন্দাকে অপহরণ করেছে রোহিঙ্গারা

সমাবেশ থেকে সাম্প্রতিক অপহরণ হওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত উদ্ধারের জোর দাবি জানানো হয়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, অপহরণ অধ্যুষিত এলাকার কাছাকাছি বাহারছড়ায় পুলিশ ফাঁড়ি থাকলেও তেমন কার্যকর টহল চোখে পড়ছে না। তারা বলেন, অপহরণের ঘটনা বেড়ে গেলে মাঝে মাঝে পরিচালিত ‘লোক দেখানো’ অভিযান ফলপ্রসূ সাফল্য দিতে পারছে না। 

এ ব্যাপারে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ দুর্জয় বিশ্বাসকে মুঠোফোনে কল দিলেও সাড়া দেননি। 

বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন খোকন বলেন, ‘‘আমাদের ইউনিয়নে সমতল ভূমির তুলনায় পাহাড়ি এলাকা বেশি। পাহাড়ি এলাকায় দোকানগুলোতে লোকজন বসলে সেখানকার সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা এসে তাদের ধরে নিয়ে যায়। পাহাড় বেশি ও বড় হওয়ায় সেখানে অভিযান সফল হয় না।’’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘‘দিনদিন আমাদের এই জনপদে অপহরণ বেড়ে চলেছে। এতে সাধারণ মানুষ উদ্বেগ ও আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছে। অপহরণ বন্ধ না হলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এই শান্ত জনপদ গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়বে। তাই প্রশাসনকে আর নীরব না থেকে অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিতে হবে। পাহাড়ি জনপদজুড়ে পর্যবেক্ষণ, নজরদারি ও টহল কার্যক্রম আরো জোরদারের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’’ 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রহিম উল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘‘অপহরণের এই ক্রমবর্ধমান ঘটনা আমাদের স্বাভাবিক জীবনকে বিঘ্নিত করছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় উদ্বিগ্ন, আর পর্যটনসহ এলাকার শান্তি ও স্বাভাবিক চলাচল প্রভাবিত হচ্ছে। প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে এবং অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।’’ 

গত রবিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা একদল সশস্ত্র অপহরণকারী বাহারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিলখালী পূর্বপাড়া থেকে খেলা করার সময় ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ করে পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে তাদের মধ্যে দুজন কৌশলে পালিয়ে এলেও এখন পর্যন্ত চারজন তাদের কাছে জিম্মি রয়েছে। এর আগেও এ এলাকায় কয়েকজনকে অপহরণ করা হয়েছিল বলে জানান স্থানীয়রা।

ঢাকা/তারেকুর/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে সন্ধ্যায় খেলার মাঠ থেকে ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় খেলার সময় ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ করেছে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। পরে তাদের মধ্যে দুজন কৌশলে পালিয়ে এলেও চারজন এখনো জিম্মি রয়েছে।

এ ঘটনা ঘটে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিলখালী পূর্বপাড়ায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ আহমদ।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফেজ আহমদ জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় শিশু–কিশোরদের খেলাধুলার সময় পাহাড় থেকে নেমে আসা দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে ছয়জনকে জিম্মি করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়। তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।

হাফেজ আহমদ বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে অবহিত করেছে। আমরা ও পুলিশ মিলে অপহৃত শিশুদের উদ্ধারে পাহাড়ে তল্লাশি চালাচ্ছি। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চার শিশুর খোঁজ মেলেনি। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যেই অপহরণ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’

বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘শিশু–কিশোরদের অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেনি। অপহৃত শিশুদের উদ্ধারে আমরা কাজ করছি।’

কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৭২ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। অধিকাংশই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাওয়ায়’ ২২ বছর আগে খুন, এখন তদন্ত চায় পরিবার
  • সিলেটে পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে অপহরণ, পরে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
  • মুক্তিপণ আদায়ে ফেসবুকে বন্ধুত্ব, ব্যর্থ হয়ে হত্যার ঘটনায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড
  • টেকনাফে ৬ শিশু অপহরণ, ফেরত এসেছে ২ জন
  • টেকনাফে সন্ধ্যায় খেলার মাঠ থেকে ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ