দল হিসেবে আ.লীগকে বাদ দিতে পারেন না: জিএম কাদের
Published: 23rd, October 2025 GMT
বর্তমান সরকার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নামে অনৈক্য কমিশন তৈরি করেছে মন্তব্য করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন,“আপনারা আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়েছেন। এটার আমি কোনো অর্থ দেখি না। আওয়ামী লীগকে আপনি দল হিসেবে বাদ দিতে পারেন না। আপনি যদি আওয়ামী লীগকে বাদ দিতে চান, তাহলে মামলা করে দোষী সাব্যস্ত করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণে উপজেলা দিবস উপলক্ষে সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: জিএম কাদের
জাপার কর্মী সমাবেশ পণ্ড, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে টিয়ার শেল-সাউন্ড গ্রেনেড
জিএম কাদের বলেন, “আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বিচার ছাড়া, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অর্ডারে (নির্বাহী আদেশে)। এর বিরুদ্ধে বললে আমাদের নানা রকম ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে।”
সরকার নিরপেক্ষতা হারিয়েছে অভিযোগ তুলে জিএম কাদের বলেন, “আপনারা নিরপেক্ষ নন, তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে বিদায় হোন। দেশের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য একটি স্থিতিশীল সরকার প্রয়োজন। প্রয়োজনে আমরা মাঠে নামব কিন্তু পাতানো নির্বাচন হতে দেব না।”
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নামে অনৈক্য সৃষ্টি করা হচ্ছে অভিযোগ করে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “তারা (কমিশন) দেশের অর্ধেক লোককে বাদ দিয়ে ঐক্য গড়ার চেষ্টা করছেন। আমি মনে করি, এটা একটা বড় ধরনের ষড়যন্ত্র দেশের বিরুদ্ধে। দেশকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র। আমি হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, দেশের মানুষ এগুলোকে ক্ষমা করবে না।”
“বিগত সময়ে পতিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে খালের কিনারায় ফেলে গেছেন। আর বর্তমান সরকার খালের কিনারা থেকে খালের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এখন দেশ নিচের দিকে পড়ছে। যত দিন দেরি হবে, তত বেশি দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে জিএম কাদের বলেন, “বাংলাদেশ এখন একটি গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে সময় পার করছে। প্রতিদিন মিল ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবার ফলে কর্মহীন বেকারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সর্বকালের সকল রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। সারা দেশে প্রতি মাসে খুনের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।”
তিনি বলেন, “দেশ আজ দুর্ভিক্ষের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কিছু কিছু এলাকায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। দেশকে একটি গৃহযুদ্ধের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।”
জাতীয় পার্টিকে ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টি ছাড়া নির্বাচন হলেও সেই নির্বাচনে গঠিত সরকার পরবর্তী সময়ে টিকবে না।”
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন যে সংস্কার উদ্যোগ নিয়েছে, তা টেকসই হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “সংস্কার কমিশনের আলোচনায় জাতীয় পার্টির পরামর্শ নেওয়া উচিত ছিল, কিন্তু তারা সেটা করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার কিছু দলের সরকার হয়ে গেছে। এই সরকার কিছু দলকে ভালোবাসে, কিছু দলকে ঘৃণা করে। তাই এদের মাধ্যমে নিরপেক্ষ ভোট আয়োজন সম্ভব নয়।”
যারাই ক্ষমতায় থাকে, তারা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায় বলেও মন্তব্য করেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির অফিসে তিন বার আগুন দেওয়া হয়েছে। যদি ৩০০ বারও আগুন দেওয়া হয়, তবু জাতীয় পার্টি ফিরে আসবে।”
“সংবিধানে কোন গণভোটের অপশন নেই। এই মুহূর্তে গণভোট করা হলে তা হবে অসাংবিধানিক। যদি জাতির প্রয়োজনে গণভোটের প্রয়োজন হয় তবে তা অবশ্যই সংসদে পাশ করেই করতে হবে।”
উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, শেরিফা কাদের, রেজাউল ইসলাম ভূঞা, মমতাজ উদ্দিন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নী, ড.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ এম ক দ র জ এম ক দ র ক দ র বল আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে মাটিতে পাকিস্তান-ভারতের পতাকা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার পর ভারতসহ কয়েকটি দেশের পতাকা একইভাবে সেঁটে দেওয়া হয়। এ নিয়ে দিনভর ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা-সমালোচনা দেখা যায়।
ভারত-পাকিস্তান ছাড়া আরো যেসব দেশের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়েছে। সেগুলো হলো- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও যুক্তরাজ্য। শিক্ষার্থীদের এসব পতাকা মাড়িয়ে প্রবেশ ও বাহির হতে দেখা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রবিবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী রাকিব রহমানের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থী প্রথমে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ও ডাকসু ভবনের প্রবেশমুখে পাদদেশে পাকিস্তানের পতাকা মাটিতে সেঁটে দেয়।
ওই পতাকায় নো কম্প্রোমাইজ উইথ রাজাকারসহ গালিসূচক আরেকটি শব্দগুচ্ছ খচিত ছিল। তারা পতাকা মাটিতে সেঁটে দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন এবং বিজয়ের মাসে ঢাবিতে কোনো পাকিস্তান প্রেম চলবে না বলে ঘোষণা দেন।
পরবর্তীতে সোমবার সকালে ডাকসু ভবনে প্রবেশপথে পাকিস্তানের পতাকার পাশে ভারত ও ইসরায়েল এবং শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে পাকিস্তানের পতাকার পাশাপাশি ভারতের পতাকা সেঁটে দেওয়া হয়।
তবে, কে বা কারা এসব করেছে তা জানা যায়নি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও বিজয় একাত্তর হলের প্রবেশমুখে পাকিস্তান ও ভারত উভয়ের পতাকায় মাটিতে সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। বিকেলের দিকে ডাকসু ভবনের সামনে সাঁটানো পতাকার পাশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পতাকাও সেঁটে দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়।
ডাকসু ভবন ও তিন হলের প্রবেশপথে পতাকা সেঁটে দেওয়া নিয়ে ঢাবি ক্যাম্পাস ও সোশ্যাল মিডিয়ায় দিনভর আলোচনা-সমালোচনা চলছে।
ঢাকা/সৌরভ/রাজীব