ইন্দোরে অস্ট্রেলিয়ার দুই নারী ক্রিকেটার শ্লীতহানির শিকার, গ্রেপ্ত
Published: 25th, October 2025 GMT
নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপের উত্তাপের মধ্যেই ঘটে গেছে এক দুঃখজনক ঘটনা। ভারতের ইন্দোরে শেষ লিগ ম্যাচের আগে সেখানে অবস্থানরত অস্ট্রেলিয়া নারী দলের দুই সদস্য রাস্তায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর হাতে শ্লীতহানির শিকার হয়েছেন।
ঘটনাটি ঘটে বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) সকালে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ের পরদিন। দুই ক্রিকেটার হোটেল র্যাডিসন থেকে একটি ক্যাফেতে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই এক মোটরসাইকেলচালক তাদের দিকে এগিয়ে এসে অশোভনভাবে স্পর্শ করে পালিয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
রোহিতের সেঞ্চুরি আর কোহলির ব্যাটে ভারতের দাপুটে জয়
রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “অস্ট্রেলিয়া নারী দলের দুই সদস্যকে ইন্দোরে হাঁটার সময় এক মোটরসাইকেল আরোহী অশোভনভাবে স্পর্শ করেছে। ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে দলের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা স্থানীয় পুলিশকে জানান এবং বিষয়টি এখন তাদের তদন্তাধীন।”
ইন্দোর ক্রাইম ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রাজেশ দানদোতিয়া জানিয়েছেন, দোষী ব্যক্তিকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, “অস্ট্রেলিয়া দলের নিরাপত্তা ব্যবস্থাপক দুই খেলোয়াড়ের প্রতি অনুচিত আচরণের অভিযোগ দায়ের করেন। আমরা কৌশলগত অভিযানে নেমে ছয় ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্ত আকিলকে গ্রেপ্তার করি। তার পুরনো অপরাধের রেকর্ডও রয়েছে।”
এ ঘটনায় ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিসিসিআই), মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এমপিসিএ) এবং স্থানীয় পুলিশ যৌথভাবে নিরাপত্তা প্রটোকল পর্যালোচনা করেছে। যাতে ভবিষ্যতে এমন অনভিপ্রেত পরিস্থিতি আর না ঘটে।
মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে জানায়, “অস্ট্রেলিয়া নারী দলের দুই খেলোয়াড়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই অপ্রীতিকর ও লজ্জাজনক ঘটনার জন্য আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। কোনো নারীকে কখনো এমন মানসিক আঘাত সহ্য করতে হবে না এই বিশ্বাসই আমাদের। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত খেলোয়াড়দের পাশে আছি। ইন্দোর বরাবরই অতিথিপরায়ণতা ও নিরাপত্তার জন্য বিখ্যাত। কিন্তু এক ব্যক্তির দায়িত্বহীন আচরণ পুরো শহরের ভাবমূর্তিতে আঘাত হেনেছে।”
সংস্থাটি অস্ট্রেলিয়া দলের প্রতি আনুষ্ঠানিক দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, “আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত যে, নিরাপত্তা ও সৌজন্যের জন্য পরিচিত আমাদের শহরে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, ভবিষ্যতে এমন কিছু আর ঘটতে দেওয়া হবে না।”
অন্যদিকে, মাঠের লড়াইয়েও গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপের পয়েন্ট টেবিলে তারা বর্তমানে শীর্ষে আছে। তবে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয় পেলে তবেই শীর্ষস্থান নিশ্চিত হবে। অবশ্য শুরুটা দারুণ করেছে অজি মেয়েরা। টস জিতে প্রোটিয়া মেয়েদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ২৪ ওভারে মাত্র ৯৭ রানে অলআউট করেছে। জিততে তাদের করতে হবে মাত্র ৯৮ রান।
যদি তারা আজ জেতে, তবে ৩০ অক্টোবর নবি মুম্বাইয়ে ভারতের মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে। আর যদি হারে, তবে পয়েন্টে পিছিয়ে গিয়ে প্রথম সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হতে হবে।
কিন্তু মাঠের ফলাফল যাই হোক, ইন্দোরের এই ঘটনাটি নিঃসন্দেহে নারী ক্রিকেটের নিরাপত্তা–সংলাপকে আবারও নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সোমবার থেকে কুয়াকাটার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ
পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় পর্যটন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অশোভন আচরণের কারণে ভ্যাট কর্মকর্তা জামিউল আলমকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে অপসারণ করা না হলে কুয়াকাটার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
শনিবার সকাল ১১টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোতালেব শরীফ আগামীকাল রবিবারের মধ্যে ওই কর্মকর্তাকে অপসারণ করা না হলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দেন।
মোতালেব শরীফ বলেন, ‘‘পটুয়াখালী কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সহকারী কমিশনার (ভ্যাট কর্মকর্তা) জামিউল আলম নতুন আসায় গত ৮ অক্টোবর কুয়াকাটার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তার মিটিং করার কথা ছিল। কিন্তু তিনি মিটিং না করেই সৈকত হোটেলে গিয়ে ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়ে হোটেলের ম্যানেজারের সঙ্গে অত্যন্ত অশোভন আচরণ করেন। তিনি আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন। সৈকত হোটেলের ম্যানেজার ভ্যাট কর্মকর্তাকে আমার সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তখন তিনি ব্যঙ্গ করে অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করেছেন। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। বিষয়টি আমরা সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। তাকে সোমবারের মধ্যে অন্য কোথাও বদলি বা অপসারণ করা না হলে কুয়াকাটার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।’’
এ বিষয়ে জানতে জামিউল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এ ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তাই এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে জেলা প্রশাসক স্যার আমাকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেছে। আমি সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি এবং সরি বলেছি।’’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান, কুয়াকাটা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মাওলানা মাইনুল ইসলাম মান্নান, ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অফ কুয়াকাটার (টোয়াক) সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষারসহ খাবার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি রেজাউল করিম প্রমুখ।
মানববন্ধনে পর্যটনসংশ্লিষ্ট ১৬টি পেশার সঙ্গে জড়িত শতাধিক ব্যবসায়ী উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/ইমরান//